সেই ছোট বেলা থেকে এই শব্দটির সাথে পরিচিত। আসলে গাঁও গেরামে থাকলে যা হয় আরকি। কত রকমের আজগুবী শব্দের সাথে পরিচিত হতে হয়। কিংবা ব্যবহার করতে হয়। শহরে এসে পড়লে যখন অনেক দিন হয়ে পড়ে শব্দ গুলো শুনে কিছুটা চমকে উঠি। আরেঃ এতো আমার চেনা শব্দ, কত পরিচিত ছিলো। তবে উচ্চারনে একটু লজ্জা পাই। যেন ১২ বছর বিদেশ ঘুরে এসে নিজের পুরোনো বউএর সাথে ১ম দেখা এই আরকি। যা হোক ইদানিং শুনতে পাই যে পুরোনো শব্দ একটু খটকা লাগানো, যেমন লেলিয়ে দেয়া। যেমন ছোট বেলায় বাড়ির বাহিরে রাস্তায় কুকুর দেখা যেত। হঠাৎ কোন আগুন্তুক বা পাগল দেখতে পেতাম। অথবা বনিবনা হতোনা এমন কোন গুরুগম্ভীর লোক। বা কেউ কখনো হয়তোবা আমার/আমাদের সাথে অন্যায় করেছে। কি করতাম, পাড়ার আরো দুচারটা ছেলেপেলে সাথে সাথেই হয়তো থাকতো। একসাথে গোল্লাছুট, দাঁড়িয়া বান্ধা, কানামাছি এসব খেলতাম। সুতরাং সংগী সাথীর অভাব ছিলো না। তো সেই উটকো লোকটাকে যেই না নিকট দুরত্বে দেখতে পেতাম আস্তে করে সকলে চলে যেতাম কোন আড়ালে, হাতে দুই চারটা ঢিল নিয়ে প্রস্তুত থাকতাম। যখন সে আমাদের অতিক্রম করে সামনে যেত, আশে পাশের কুকুর গুলো কে আড়াল থেকেই ডাকতাম, তু তু তু.......... এরপর কুকুরের মতি বুঝে লোকটা পেছনে ঢিল ছুড়ে মারতাম আর চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলতাম ছুয়ো, ছুয়ো, আয় আয়, ছুয়ো। কুকুর অমনি ঐ উটকো লোকটারে ধাওয়া দিতো। আমরা দুর থেকে মজা পেতাম লোকটার করুন পরিনতিতে। হয়তো দেখা যেত পুকুরে কোন কিছু পতনের শব্দ। তাকিয়ে দেখতাম লোকটা পুকুরে লাফ দিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। তো এটাকে বলতাম কুকুর লেলিয়ে দেয়া।
ইদানিং এই শব্দটার সাথে নতুন করে পরিচিত হয়ে নিজের সেদিন গুলোর কথা মনে পড়ে যায়।
নারী নীতি নিয়ে আমাদের মহান আলেম মুফতি ফজলুল হক আমীনি মাঠে নেমেছেন এর মধ্যে দুই এক জন নিহত হলেন। এটা নিয়ে হরতালও হলো। মহান মুফতি আমীনি নারীনীতির বিরোধীতা করেন ঠিক আবার নাজায়েজ নারী নেতৃত্বে ছায়ায় রাজনীতিও করেন।
হরতালে স্বাভাবিক ভাবে ধরপাকড়, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, ফ্লাইং কিক সবই হলো। সদ্য খবর আমিনী পুত্র নিখোজ। আমীনি বলেন হাসিনা নাকি ধরে নিয়ে গেছে। আবার বিপক্ষরা বলে আমিনি নিজের ছেলে গুম করে ঘোলা পানিতে খাবলা খাবলি করছে।
যাহোক রাজপথ সরগরম। সরকারের এসব সহ্য হয়না। যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক কারনে। চলে মিটিং মিছিল বিবৃতি। তো সেদিন টিভিতে হঠাৎ শুনি আওয়ামিলীগের একনেতা বলে ফেললেন। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আমিনিকে লেলিয়ে দিয়েছে।
তখনই ছোটবেলার এই সব দুষ্টুমীর কথা মনে পড়ে গেলো।
আবার ছোটবেলায় ফেরত যেতে মন চায়।