somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরতালের জয় হোক (কোন এক উল্টো রাজা, উল্টো কোন প্রজার দেশে):

০৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই দেশে থাকবেন, অথচ হরতালকে বিরক্ত লাগলে তো চলবে না। কারণ আমাদের বুঝতে হবে কুদ্দুস বয়াতির ভাষায়- এই হরতাল হরতাল নয়, আরো হরতাল আছে; এই হরতালেরে নিয়া যাইব লাগাতার হরতালের কাছে।এমনও হতে পারে, যখন রচনায় নদীমাতৃক দেশ না লিখে, বাচ্চাদের লিখতে হবে হরতালমাতৃক দেশ ( আগে যেমন লিখতে হত, পাট আমাদের সোনালী আঁশ এবং প্রধান অর্থকরী ফসল ), বিদেশীরা এত দিন আমাদের চিনত বন্যা-খরার ‍দেশ হিসেবে, আর কিছু দিন পরে চিনবে হরতালের দেশ হিসেবে। তাই হরতালে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়াই আমাদের জন্য মঙ্গলজনক।তাই আমাদের জানতে হবে,
- হরতালে পোড়া গাড়ির আগুনে কিভাবে আলু পোড়া দিয়ে খেতে হয়।
- পিকেটারদের ছোড়া ইট পাটকেল দিয়ে কিভাবে বাড়ির মেঝের ঢালাই কাজটা সেরে ফেলা যায়।
- অফিসে যাবার সময় পিকেটার বা পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ভোঁ দৌড় দিয়ে কিভাবে শরীরের বাড়তি মদ কমিয়ে স্লিম থাকা যায়।
- আর পুলিশের হাতে ধরা খাইলে মাইরটা ফাও, অবশ্য তখন একটু রিকোয়েস্ট করতে পারেন যে, ভাই গিড়ায়-গাড়ায় না মাইরা একটু সিস্টেম মতো লাগান, যেন কাঁটা দাগ বা জমাট রক্ত ট্যাটু হিসেবে চালাইয়া দেওয়া যায়।

আর বিজনেস ভ্যালু্ও কিন্তু হরতালের কোন অংশে কম না; মাথায় সারাক্ষণ বিজনেস প্লেন ধাক্কাধাক্বি করে, যেমন ধরেন:
- পিকেটারদের সুবিধার্থে ইটের টুকরার সাপ্লায়ার হতে পারেন।
- ইটের টুকরার সাথে লোহার রডের টুকরা রাখলে আরো ভাল হয়, যা দিয়ে জামাতি কায়দায় পুলিশের মাথায় ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা যাবে।
-কেরোসিন, পেট্রোল বা দিয়াশলাযের ভ্রাম্যমান সাপ্লায়ার হতে পারেন।
- ভ্রাম্রমান হাসপাতালের ব্যবসাও কিন্তু জমজমাট হবে। শুধু একটু তরকারি বা চানাচুরওয়ালার মত আওয়াজ দিতে হবে...যেমন, এ্যাই লাগব বেন্ডেজ, ফার্স্ট এইড, এ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি ইত্যাদি।
- আমেরিকার সাথে ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে ব্যবসা বানিজ্যের অভূতপূর্ব উন্নতি হবে, কারণ এখনতো শুধু হরতালের ক্ষতি পোষাতে ছুটির দিনগুলোতে অফিস খোলার আহ্বান করছে, আর পাঁচ দিনের ক্ষতি তো আর দুই দিনে পোষানো যাবে না, তাই নাইট স্কুলের মতো নাইট কলেজ, নাইট বিশ্ববিদ্যালয়(ভাই এইটা কারো বইলেন না, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বা ছাত্ররা জানলে আমার শুধু কপালে নয়,পিঠেও খারাবি আছে) নাইট অফিস, আদালত ইত্যাদি হবে; আর আমাদের দেশে যখন রাত আমেরিকায় তখন রাত, সো বুঝতেই তো পারছেন বিদ্যুৎ বেগে, দুঃখিত, ঈশ্বর কণার (হিগস-বোসন) বেগে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।আমাদের আর পায় কে।
দেশ ও জাতির উন্নতি কল্পে হরতালের উন্নয়নে আরো ভুরি ভুরি ব্যবস্থা করা যাবে। তখন দেখা যাবে প্রতিবার বিরোধী দলই দেশ চালাবে, কারণ বিরোধী দলের বিক্ষোভের বদলে সরকারী দলও ইদানিং বিক্ষোভ সমাবেশ করছে, কিন্তু সরকারী দলতো আর হরতাল দিতে পারছে না; হরতাল দেবার একচ্ছত্র অধিপতি হচ্ছে বিরোধী দলগুলো।তাই সবাই চাইবে বিরোধী দল হতে, প্রধান বিরোধী দলই হবে সকল ক্ষমতার উৎস, বাকি লেন্জা বিরোধী দলকেও হেলা ফেলা করলে চলবে না,কারণ তাদেরও আছে হরতাল দেবার গণতান্ত্রিক অধিকার। তখন আর কেউ ভোটে পাশ করার জন্য বিরোধী দলের পায়ে পাড়া দিয়ে লাগতে যাবে না, দাঙ্গা হাঙ্গামা বন্ধের বদলে আগুনে তুষ দিয়ে বাড়িয়ে আবার সরকার গঠনের জন্য নতুন কোন ইস্যু খুজবে না, আর বিরোধী দল্ও সংসদ বর্জনের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করবে।
তাই আসুন আমরা হরতালের উন্নয়নকল্পে একত্রিত হয়ে কাজ করি।কারণ বোঝলেনই তো হরতালের কতো সুফল।
সর্বোপরি বলতে হয়, আমার এই লেখনি শক্তির বর্হিপ্রকাশও এই হরতালের কারণেই।হরতালের কারণে কর্মস্থলে না যাওয়াতেই আমার গোঁবরমন্ডিত এই অনুর্বর মস্তিষ্কের কর্মফল এই জ্ঞানগর্ভ লেখনি।আরো অনেক লেখাই আছে, কিন্তু হরতাল আমাকে প্রাকাশ করার সুযোগ করে দিয়েছে।
তাই রবী ঠাকুর এ যুগে জন্মিলে, আমার সাথে একাত্নতা ঘোষণা করে গেয়ে উঠত, “ হে হরতাল, তুমি মোরে করেছ মহান”।

ছিঃ, আর নীচে নামতে পারলাম না; একদিনে আর কত নীচ হওয়া যায়!!!

(((এখন থেকে আর প্রতিবাদ নয়, থিঙ্ক পজিটিভ ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।অবশ্য ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের সমস্যা-অভিযোগগুলোকে পজেটিভ বলায় আমার কিছু ছাত্রদের মাঝে যথেষ্ট দুর্নাম আছে। কিন্তু পজেটিভ থিঙ্কিংয়ে আমি আবুলকে গুরু মেনেছি। কারণ সব আবুলে না হলেও কিছু আবুলে মাল আছে; যারা পদ্মা সেতু না হবার পেছনেও বৃহৎ কোন জাতীয় স্বার্থ খুজে পায়। আর যারা হরতালের পিছনে, মানুষ হত্যার পেছনে, গাড়ি পোঁড়ানোর পেছনে দেশের স্বার্থ এবং এগুলোর সমর্থনে যুক্তি খুজে পায়, সেসকল আবুলরাও আমার গুরু। কারণ আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে এগুলোর সমর্থনে কোন ভাল যুক্তি খুজে পাই না; তাই তাদেরকে আমার গুরু মানতেই হবে।)))

(সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ- হরতালের সময় শেষ, তাই আমাকে একটু বের হতে হবে তো)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×