দৃশ্য: ১:
"এই সকাল ১০টা বাজে... ঘুম থেকে উঠবি না?? কলেজ কয়টায় তোর??"..... এইসব ঘুমকাতুরে বাবুরা কিন্তু কাল সকাল ৬টা বাজার আগেই ফিটফাট পাঞ্জাবী, ফতুয়া পড়ে। যাদের ঘুম সাধারণত ভাঙ্গায় দায়, তাদের কাল যেন একটাই পণ, "সূয্যি মামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে।"
কাল এরকম বাবুদের পদভারে ভারী হয়ে থাকবে রমনা, টি,এস,সি-এর চত্বর। আর, বান্ধবীর কড়া নির্দেশ থাকলে তো কথায় নাই। তাদের পাওয়া যাবে না টাইমমতো কি আপনাকে পাওয়া যাবে???
দৃশ্য:২:
-"এক প্লেট পান্তা কত করে?"
--১০০ টাকা প্লেট স্যার।
-এত দাম কেন?
--একদিনই তো খাবেন, তাই এত দাম।
-আচ্ছা দাও ৫ প্লেট সবার জন্য।
এরকম পান্তা নামক পানি দেওয়া ভাত খাওয়ার জন্য লেগে যায় ধুম কালকের এই মহোৎসবে। যারা বছরের অন্য দিনগুলোতে পান্তা ধরেও দেখেন না, তাদের জন্য কাল হলো পান্তা দিবস।
দেখুন তো কত কষ্ট করে তারা গরীবদের কষ্ট বুঝার চেষ্টা করছেন।
আবার, পান্তার সাথে আছে ইলিশ মাছ। এত কাঁটাযুক্ত মাছ অন্যদিন যারা ধরেই দেখেন না, তারা কিন্তু কাল শত কষ্ট সত্বেও কাঁটা বেঁছে মাছটি চেখে দেখেন কেমন হলো।
অবশ্য, মহার্ঘ্য এই মাছ অনেকেই কিনতেই পারেন না।
দৃশ্য:৩:
"পি লু তেরি গিলি গিলি হোঠোকো শাবনাম, পি লু হে পি নে কা মৌসম...."
এইসব গান ছাড়া যাদের একটি দিনও অচল, তারাই কাল নাচতে নাচতে হাজির হবে রমনাতে, "এসো হে বৈশাখ এসো এসো"-এর সাথে তাল মিলাতে। একটি দিনের জন্য হিন্দি গানকে জলাঞ্জলী দিয়ে তারা "একদিন বাঙ্গালী ছিলাম রে....." ভাব জেগে উঠে।
দৃশ্য:৪:
আবার রাত ১২টা বাজার পর সব মোবাইল নেটওয়ার্ক জ্যাম হয়ে যায় "শুভ নববর্ষ" ক্ষুদেবার্তার কারণে। কিন্তু, বাংলা নববর্ষ শুরু হয় ভোরের সূর্য উঠার সাথে সাথে সেটা কয়জনই বা জানে। এমনকি, আমি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার "চৈত্র সংক্রান্তি" অনুষ্টানেও রাত ১২ বাজার পর পহেলা বৈশাখ পালন করতে দেখেছি।
এমন নানা নতুন নতুন দৃশ্যের মধ্য দিয়ে আমরা বরন করে নিব নতুন বছরকে। আমরা সারা বছর বাংলা মাসের আর খোজ না রাখলেও এই একটা দিন পুরো দস্তুর বাঙ্গালী সেঁজে যায় আমরা। তাও, আমরা এই একটা দিন বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি, ছোটদেরও জানাতে পারি, সেটাই বা কম কিসের।
আসুন, এসব বৈসাদৃ্শ্যর পরও কাল জমিয়ে পালন করি বাঙ্গালীত্ববাদকে। বাংলাকে তুলে ধরি সারা বিশ্বের সামনে গর্ব ভরে।
সবাইকে নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা।
১৪১৮ সবার জীবনে শুভ হোক।
শুভ নববর্ষ সবাইকে।