হায় আমার বিলাসিতা! হায় রে আমার রঙ্গরসের খেলা! এই তোমার কলঙ্কিত অভিলাস। গ্লোবাল কালচারের তীব্র থাবায় কি দারুন সমাধি আমার বাঙালি সত্ত্বার মাতৃরূপ! সপ্তদশ আর অষ্টাদশ শতাব্দীর বাঙালী সমাজ আজ কিভাবে ধুঁকছে, কিভাবে মার খাচ্ছে, কিভাবে জলাঞ্জলি দিচ্ছে তার আপন জন্মসুত্রের জীবন-গৌরবগাঁথা।
রাজা রামমোহন, বাঁচাতে চেয়েছিলে তোমাদের সতীকে বিষাক্ত সমাজকর্তাদের করালগ্রাস থেকে? কি পেলাম আজ? তোমাদের সেই সতী আজ কি নির্লজ্জ!! চিতার আগুন থেকে ফিরে এসে আজ তারা নিত্য নতুন আবিস্কারের সুযোগ নিয়ে নিজেকে গোপন ভিডিওতে কলঙ্কিত করতে দ্বিধা করছে না এতটুকু। আজ তারা কত অবলীলায় সতীত্ব বিকিয়ে দেয় কর্পোরেট হবার নগ্ন স্বপ্ন-বাসনায়। আহ! কি অন্ধকার চারিদিকে!
একজন অভিনেত্রী বা মডেল বা উপস্থাপিকা হলেই আজ তার মন চনমনে হয়ে ওঠে জন্মদায়ী সমাজটাকে জঘণ্য কুঠারাঘাত করে নিজের সতীত্বকে কলঙ্কিত করার অভিপ্রায়ে। একদিকে সখিনা, রহিমা, জরিনা জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে সতীত্ব রক্ষা করতে না পেরে আর এক দিকে প্রভা-চৈতি-পুনমরা সেই একই সতীত্বকে কেমন সস্তা পণ্য বানিয়ে শৈল্পিকতার, নান্দনিকতার অযুহাত দেখিয়ে কত সহজে নিজেকে প্রকাশ করছে। ওরে পাপী একবার দেখ তোর নিজেকে আয়নায়?
সমাজ পতিতা বৃত্তিকে এখনো অবৈধ বলে, তাইনা??
হা হা হা হা, হবে না কেন তখনকার সমাজকর্তা যে আজ বেশ্ব্যায়নের প্রতিনিধি হয়ে তার সতীত্বকে যাঁতাকলে খেলছে ভয়াবহরূপে। তাই দোষ তার একার নয়। দোষ কার, সতীর না পুঁজির, বিশ্বায়নের না চরিত্রের, লোভ না বিলাসিতার ?? না কি বড় অপরাধ করেছিল রাজা রামমোহন আর তার অনুসারীরা?
দুঃখ হয়, আজ বিশ্বায়ন আছে, রাজা রামমোহনের মত কেউ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২