somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাহীন ভূইঁয়া
আমার স্বপ্ন ছিল ঘাতক রাজাকারদের বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার জীবদ্দশায় দেখার। আমার আর কোনো চাওয়া নেই তবে জামাতের সব ব্যবসা প্রতিস্ঠান অচিরেই বাংলাদেশে বন্ধকরা উচিত। না হলে ওরা আবার অঙ্কুর উদগম করবে এই মাটিতেই।

সুনামির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও বাংলাদেশে কোন প্রস্তুতি নেই, নেই কোন মাথা ব্যথা , না সরকারের না কোন এনজিও'র

০৯ ই এপ্রিল, ২০১১ সকাল ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশ সুনামীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এই বিষয়ে বাংলাদেশের ন্যূনতম প্রস্তুতি নেই। খুলনা এবং চট্টগ্রাম উপকূলের ৯০ শতাংশ অধিবাসীই জানে না সুনামি কি। কি এর ধ্বংসাত্মক শক্তি, কি এর প্রস্তুতি। এমনি অবস্থায় ৭২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলের প্রায় ৩ কোটি আদম সনত্মানের জীবন এবং সহায়-সম্পত্তি চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও এই ড়্গেত্রে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো অথবা বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনগুলোর নেই কোন প্রস’তিমূলক কর্মকান্ড।
জানা গেছে, ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার জন্য উ”চ ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ। বিগত বছর হতেই এই দুইটি দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশে ব্যাপক প্রস’তিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও সুনামি বিষয়ে এখনো পর্যনত্ম মাঠ পর্যায়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
দুর্যোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী দুর্যোগের ঘনঘটা বেড়েছে। পাল্টিয়েছে দুর্যোগের প্রকৃতি-ধরন এবং ব্যাপ্তি। এমনি অবস্থায় প্রায় সমুদ্র সমতলের সমউ”চতার ৭২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলের বাংলাদেশের জন্য ‘সুনামি’ এখন চিনত্মার বিষয়। বিশেষ করে ২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরের ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং সাম্প্রতিক সময়ে ৯ দশমিক ১ মাত্রার জাপানের ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট প্রলয়ঙ্করী সুনামির পরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্প পরবর্তী সুনামির জন্যও একটি উ”চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। কারণ ভারত মহাসাগরের উপকূলে বাংলাদেশের অবস্থান। ভারত মহাসাগরে প্রলয়ঙ্করী অনেক সুনামি হওয়ার ইতিহাসও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন, বাংলাদেশে উপকূলের আপদ হিসেবে ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি এখন সুনামিকে বিবেচনা করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের দীর্ঘ উপকূলভাগ সম্পূর্ণটাই সমুদ্রের প্রায় সমতলে অবসি’ত। এজন্য সামান্য জোয়ারের উ”চতায়ই ডুবে যায় উপকূলের রাসত্মাঘাট-অবকাঠামো। সেড়্গেত্রে সুনামির পরিণতির কথাতো চিনত্মাই করা যায় না।
সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম উপকূলের সামান্য কিছুটা অংশে কিছু পাহাড় রয়েছে যেটা সুনামির ঢেউ-এর তীব্রতা প্রাকৃতিকভাবেই প্রতিরোধের কাজ করতে পারবে। একই সাথে তা’ মানুষের আশ্রয়স’ল হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারবে। কিন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের ঐ অংশ বাদে খুলনাসহ বাংলাদেশের উপকূলের বাকী সম্পূর্ণ অংশটাই সুনামির জন্য অরড়্গিত। কারণ উপকূলজুড়ে তেমন কোন শক্ত অবকাঠামোই নেই যা’ বিশাল বিশাল উচ্চতার সুনামির ঢেউ থেকে মানুষকে রড়্গা করতে পারবে।
উপরের বিপদাপন্নতার বিষয়গুলির উপর গুরুত্বারোপ করে সূত্রটি বলছে, সুনামির বিষয়ে নিতে হবে ব্যাপক প্রস্তুতি। উপকূলের মানুষদের মধ্যে সুনামির সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। প্রস্তুতির কলাকৌশলও জানাতে হবে।
সম্প্রতি উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারে সুনামির উপর পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের লন্ডন প্রবাসী এক অধ্যাপকের গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ উপকূলবাসীই সুনামির নাম শুনেনি। যাদের ঘরে টেলিভিশন আছে তারা কেউ কেউ সুনামির ছবি দেখে এই বিষয়ে কিছুটা ধারণা পেয়েছে বলে গবেষণায় জানা গেছে। ঐ গবেষণায় বলা হয়েছে, উপকূলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাদের বেশীর ভাগেরই জীবন-জীবিকা মৎস্য আহরণ এবং কৃষি কর্মকান্ডের সাথে ওঁৎপ্রোতভাবে জড়িত তাদের ভবিষ্যত বিপদ হতে বাঁচাতে সুনামির বিষয়ে সতর্কতামূলক পদড়্গেপ এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে। সরকারের দুর্যোগ ব্যবস’াপনায় সুনামিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় এনে ব্যাপকভাবে পরিবার এবং সমাজভিত্তিক প্রস’তিমূলক কার্যক্রম চালাতে হবে। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনায় মান হিসেবে বিশ্বে ১ নম্বর হয়েও যেখানে জাপান সাম্প্রতিক সুনামিতে যেভাবে নাসত্মানাবুদ হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের মত ভঙ্গুর উপকূল ব্যবস্থাপনার দেশে যদি জাপানের চেয়ে অল্প মাত্রার সুনামিও হয় তাহলে যে ড়্গয়-লয় হবে তা’ ভাবনার অতীত। তবে সরকারের সংশোধিত দুর্যোগ সংক্রানত্ম স্থায়ী আদেশাবলীতে এবার সুনামীকে অনত্মর্ভুক্ত করায় সরকার এবং বেসরকারী পর্যায় হতে এই বিষয়ে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ‘সুনামি’ একটি জাপানী শব্দ, যার অর্থ সাগরে সৃষ্ট ভয়ংকর ঢেউ। সাধারণত ভূমিকম্পের কারণে সাগরে এই ঢেউ সৃষ্টি হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু যদি সমুদ্রের তলদেশে অথবা সামুদ্রিক দ্বীপে অথবা উপকূলের নিকটবর্তী কোন অঞ্চলে হয় তবে সুনামির সম্ভাবনা বেশী থাকে।
সূত্রে জানা যায়, রিক্টার স্কেলের ৭-এর অধিক মাত্রায় ভূমিকম্প হলে সুনামির সম্ভাবনা বেশী থাকে। দূর সমুদ্রে সুনামি ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক কম এবং দৈর্ঘ্য অনেক বেশী হয় (অনেক সময় শত শত মাইল) যা ‘কুঁজ’ আকারে অতিক্রানত্ম হওয়ার কারণে সমুদ্রে তেমন নজরে আসে না। তবে উপকূলের কাছাকাছি ঢেউয়ের উ”চতা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং দৈর্ঘ্য ক্রমশ কমতে থাকে।
সুনামির ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দিতে গিয়ে সূত্র জানায়, সুনামির ঢেউ-এর গতি বিমানের গতির থেকেও বেশী। গভীর সমুদ্রে ঢেউ-এর গতি প্রায় ঘন্টায় ৪৫০ থেকে ৬৫০ মাইল হয়ে থাকে। উপকূলের কাছাকাছি ঢেউ-এর গতি প্রায় ঘন্টায় ৩০ থেকে থেকে ২০০ মাইল হয়। সাধারণত সুনামির ঢেউ একাধিক হয়ে থাকে। প্রথম ঢেউটি খুব একটা বড় না হলেও পরেরগুলো ধ্বংসাত্মক আকারের হয়ে থাকে।
সুনামির পূর্ব লক্ষ্মণ হিসেবে সূত্র জানায়, বাতাস যদি সাগর থেকে উপকূলের দিকে আসে আর সাগরের পানি যদি উল্টো দিকে সরে যেতে থাকে তবে বুঝতে হবে এটি তা’ সুনামির পূর্ব লক্ষণ। তবে সবড়্গেত্রে এমনটি নাও হতে পারে।
সুনামির প্রস’তি কর্মসূচী সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে সূত্রটি জানায়, প্রথমেই সুনামির সতর্ক সংকেত প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিকটবর্তী আশ্রয়স’ল বা নিরাপদ স্থানের অবস্থান জানতে হবে, নিরাপদ অপসারণের রাসত্মা জানতে হবে। অপসারণের পরিকল্পনা ও প্রসুত্মতি গ্রহণ করতে হবে। সুনামি এবং অপসারণ পরিকল্পনা সম্পর্কে সামাজিক ও পারিবারিক পর্যায়ে আলোচনা করতে হবে। সুনামির ঝুঁকি মানচিত্র তৈরী, অপসারণ মহড়া, ম্যানগ্রোভ বনায়ন এবং সর্বোতভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা উপকূলে থাকে।

৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×