somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিচ্ছিন্ন আবেগ

০৭ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রীষ্মের কোন এক পড়ন্ত বিকেল।
বাসভর্তি কিছু তরুণ-তরুণীর বাধভাঙ্গা হইহুল্ল্রোড়।
আমিও বাসের যাত্রী।তাদেরই অংশ।বসেছি একেবারে পেছনের দিকের আগের সিটে।পাশের সিটটি ফাঁকা নেই।তাতে এক তরুণী বসেছে।কিছুক্ষণ বাস চলার পর হইহুল্ল্রোড় যেন আরো বেড়ে গেলো।নিঃসঙ্গ আমি আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।নিরবতা ভাঙলাম।পাশে বসা মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে তার নাম জানতে চাইলাম।উত্তরে লাজুক ভঙ্গিতে নাম জানালো।আমি বিজ্ঞের মত মাথা নেড়ে বললাম, বাহ বেশ সুন্দর নাম তো!
বাস যতই সামনের দিকে এগোতে লাগলো বাতাস যেন ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো।আরো বেশ কিছুদুর যাবার পর টিপটিপ বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেলো।ক্রমেই তা বেশ জোরালো আকার ধারন করলো।বৃষ্টি আমার ভালো লাগে।তন্ময় হয়ে বৃষ্টি দেখছি জানালার ফাঁক দিয়ে।এবার মেয়েটিই নিরবতা ভাঙল।আমার নাম জানতে চাইলো।বললাম।প্রত্তুত্যরে সেও জানালো আমার নামটা নাকি সুন্দর।
বাস একটা ব্রিজ পার হচ্ছে।নিচে পানিতে একটা নৌকা।পানিতে বৃষ্টির ফোটা আর নৌকার ভেসে চলা দেখে মেয়েটা বলে উঠলো কি সুন্দর!আমিও সায় জানালাম।আসলেই অপার্থিব সুন্দর লাগছিলো।মেয়েটা হঠাৎ বলে উঠলো একদিন সে তার মনের মানুষের সাথে এরকম সময়ে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজবে।আমি কিছুটা অবাক হই।কি অবলীলায় কথাটা অপরিচিত একজন মানুষকে বলে ফেলল।আবার ভালো লাগার একটা অনুভূতিও খেলে গেল আমার মাঝে।যেখানে আমার মাঝে কোন স্বপ্ন কাজ করে না,সেখানে একটা মেয়ে কি সুন্দর অবলীলায় তার স্বপ্নের কথা বলল।
খোলামনের মানুষ মনে হওয়ায় মেয়েটাকে ওর নিজের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম।জানালো কয় ভাইবোন।কোথায় পড়াশুনা করে।কি কি তার ভালো লাগে।মাঝে মাঝে আমাকেও জিজ্ঞেস করে আমার সম্পর্কে জেনে নিলো।ইতিউতি কথা জানতে জানতে চলমান ট্রাফিকের শব্দে কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বাইরে তাকালাম।বাস আমিন বাজার ব্রীজ পার হচ্ছে।মেয়েটা জিজ্ঞেস করলো এটা কোন জায়গা?উত্তর পেতেই সপ্রসন্ন হয়ে বলল আসাদগেটে নেমে যাবে।বাসা কোথায় জানতে চাইতেই বললো মোহাম্মদপুর।আমি সেন্ট জোসেফের ছাত্র ছিলাম।যেটা মোহাম্মদপুরেই।এটা জানাতেই মেয়েটা বললো,বাহ আপনি দেখছি ভালো ছাত্র।মনে মনে একটু ভাব চলে আসলো।বললাম আমাকে মোহাম্মদপুরের স্থানীয়ই বলতে পারেন যদিও আমি এখানে এখন আর থাকি না।মেয়েটা বলল,আচ্ছা!তারপর কবে পাশ করে বেরোলেন?কই পড়ছেন ইত্যাদি ইত্যাদি আর মোহাম্মদপুর এর একাল সেকাল।
জ্যাম না থাকায় প্রায় মিনিট দশেকের মাথায়ই বাস গন্তব্যে পৌছুলো।মেয়েটা গুছিয়ে নিতে শুরু করলো।বাস থামতেই ভুবন ভোলানো হাসি উপহার দিয়ে বললো, ঠিক আছে চলি।আপনার সাথে কথা বলে অনেক ভালো লাগলো।আমিও মৃদু হেসে বললাম আমারও সময়টা বেশ কেটেছে।কেন জানি বিদেয় দিতে ইচ্ছে করছিলো না।ভালোইতো উচ্ছল।নেমে গেল মেয়েটা।জানালা দিয়ে মাথা বের করে দিয়ে বললাম,ভালো থাকবেন।আবার একটা স্নিগ্ধ হাসি উপহার পেলাম।
বেশ কতগুলো যাত্রী নামিয়ে বাস আবার চলা শুরু করলো।পাশের সিটটি এখন ফাকা।খেয়াল করলাম বৃষ্টি শেষ হয়ে গিয়েছে।শেষ বিকেলের পড়ন্ত রোদে এট্টুসখানি ভালো লাগা আর কিছু বিচ্ছিন্ন আবেগ নিয়ে শহরের কোলাহল আর চলন্ত ট্রাফিকের ভীড়ে হারিয়ে গেলাম।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×