somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২০১৫ বিশ্বকাপে যারা থাকবে না

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১১ ভোর ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারত-অস্ট্রেলিয়া কোয়ার্টার ফাইনালের আগের দিন। অবধারিতভাবে এল শচীন টেন্ডুলকার-রিকি পন্টিং দ্বৈরথের প্রসঙ্গ। দুই কিংবদন্তির কোনো একজনের থেমে যাবে বিশ্বকাপ পথচলা। তাই কি? কৌতুকের ছলে বলা অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের কথাটি শুনুন, ‘পরের বিশ্বকাপ আসতে আসতে শচীনের বয়স হবে ৪২। আমার ৪০। খেললে তখন দুজনের রানিং বিটুইন দ্য উইকেট হবে দেখার মতো। হয়তো হুইল চেয়ারে করে রান নিতে হবে।’
রিকি পন্টিং এখনই দেখতে পাচ্ছেন পথের শেষ। বিশ্বকাপের ব্যর্থ অভিযান শেষে খু্ইয়েছেন অধিনায়কত্ব। ২০১৫ বিশ্বকাপে পন্টিংয়ের খেলার সম্ভাবনা তাই ওই সময়ের মধ্যে মঙ্গলে মনুষ্যবসতি স্থাপনের মতোই অসম্ভব। কিন্তু টেন্ডুলকার? বয়স ৪২ বছর হয়ে যাবে। javascript:void(1);তবু কেউ শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারে না যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় ব্যাটিং-ঈশ্বরকে দেখা যাবেই না। এখনো এত তাঁর রানক্ষুধা। এখনো খেলাটির প্রতি এতটাই দায়বদ্ধতা, একাগ্রতা। টেন্ডুলকারের অবসর নিয়ে নেওয়ার একটা ঝুঁকি হয়তো আছে। সে ঘোষণা তো ১৯৮৭ বিশ্বকাপের পর দিয়েছিলেন ইমরান খানও। পরের আসরে ফিরে তিনি আবার রূপকথার অংশ। টেন্ডুলকারের ক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার উপায় কী!
তবে আরো অনেক নক্ষত্র নিভে যাচ্ছে নিশ্চিতভাবে। বিশ্বমঞ্চে এই বিশ্বকাপই ছিল যাদের শেষ।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে পরের বিশ্বকাপ আসতে আসতে যাঁরা উঠে যাবেন স্মৃতির অ্যালবামে। ফর্মের কারণে যাঁরা ছিটকে যাবেন, যাবেনই। ইনজুরির কাছেও হার মানবেন অনেকে। বয়স নামের অমোঘ নিয়তির খাড়ায় কাটা পড়বেন বাকিরা। বয়স জয় করার মন্ত্র তাঁদের জানা নেই। সবাই তো আর টেন্ডুলকার নন!
যাঁদের বয়স ৩০ পেরিয়েছে, তারাই এটি খেলেছেন শেষ বিশ্বকাপ হিসেবে। ৩৪ বছর বয়সে তো আর বিশ্বমঞ্চে খেলার পক্ষে বাজি ধরা যায় না। বিশেষত সেই টুর্নামেন্টটি যখন ৪ বছর পর। টেন্ডুলকারের সতীর্থ বীরেন্দর শেবাগ, জহির খানের বয়স ৩২ পেরিয়েছে। পরের বিশ্বকাপ আসতে আসতে তাঁদের বয়স হবে ৩৬ বছর। আশীষ নেহরার হবে ৩৫, হরভজন সিংয়ের ৩৪। যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনিরা ৩৩ বছর বয়সে খেলবেন কী খেলবেন না_সেও অনিশ্চিত। নিশ্চয়তা কেবল, আগামী বিশ্বকাপে ভারতের নতুন একঝাঁক ক্রিকেটার নিয়ে খেলার।
অস্ট্রেলিয়ার শন টেইটের বয়স মাত্র ২৮ বছর। কিন্তু ইনজুরির সঙ্গে যুদ্ধে হার মেনে নিয়ে ওয়ানডেকে বিদায় বলে দিয়েছেন এ ফাস্ট বোলার। ৩৪ পেরোনো ব্রেট লির বিদায়ও খুব দূরে নয়। মাইক হাসি (৩৫), ডেভিড হাসি (৩৩), ব্রাড হাডিনদেরও (৩৩) পরের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। একই অবস্থা ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস (৩৪), পল কলিংউড (৩৪), গ্রায়েম সোয়ানের (৩২)। রোমাঞ্চকর এক বিশ্বকাপ অভিযাত্রার অংশ ছিলেন_আজীবন গল্প করার মতো রসদটুকু অবশ্য এই আসর থেকে কুড়িয়েছেন এ তিনজন।
বিশ্বকাপ ফাইনালিস্ট শ্রীলঙ্কা কাল বিদায় জানিয়েছে সূর্যসন্তান মুত্তিয়া মুরালিধরনকে। টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন আগেই। আর আগেই ঘোষণা করেছিলেন এ বিশ্বকাপ শেষেই থেমে যাবে ওয়ানডেতে পথচলাও। ৩৮ পেরোনো মুরালি পরের বিশ্বকাপ আসতে আসতে স্মৃতির স্মরণীতে আরো হয়তো পেয়ে যাবেন তিলকরত্নে দিলশান (৩৪),
কুমার সাঙ্গাকারা (৩৩), মাহেলা জয়াবর্ধনে (৩৩), রঙ্গনা হেরাথ (৩৩), দিলহারা ফার্নান্ডো (৩১), চামারা সিলভাদের (৩১)। যদি না এদের কেউ উপেক্ষা করতে পারেন বয়সের ভ্রূকুটি। পাকিস্তানের শোয়েব আখতারে এঙ্প্রেস ট্রেন যেমন থেমে গেল বিশ্বকাপেই। মাঠ থেকে যদিও বিদায় নিতে পারেননি তিনি। ঘোষণা দেওয়ার পর কোনো ম্যাচের একাদশে যে সুযোগ পাননি শোয়েব! মিডল অর্ডারের দুই স্তম্ভ মিসবাহ-উল হক (৩৬) ও ইউনিস খান (৩৩) প্রায় নিশ্চিতভাবেই খেলে ফেলেছেন শেষ বিশ্বকাপ। তারুণ্যের প্রতি পাকিস্তানের যে চিরকালীন পক্ষপাত, তাতে শহীদ আফ্রিদি (৩২) ও আবদুর রাজ্জাকের (৩১) আরেকটি বিশ্বকাপ খেলাও বেশ কঠিনই।
অনেক প্রত্যাশা জাগিয়ে বিশ্বকাপে এসে আরেকবার আশাভঙ্গের গান শুনিয়েছে প্রোটিয়ারা। তাদের জ্যাক ক্যালিস (৩৫), ইমরান তাহির (৩১), রবিন পিটারসনরা (৩১) আর হয়তো সুযোগ পাবেন না ‘চোকার’ অপবাদ ঘোচানোর। সেমিফাইনালের দল হিসেবে যে ‘অপবাদ’ সেঁটে আছে কিউইদের ওপর, সেটি নিয়েই বিশ্বকাপ অভিযান হয়তো চিরতরে শেষ করলেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি (৩২), জেমস ফ্রাঙ্কলিন (৩০), নাথান ম্যাককালাম (৩০), ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (২৯), স্কট স্টাইরিস (৩৫), জ্যাকব ওরাম (৩২), ড্যারেল টাফি (৩২), কাইল মিলস (৩২)। ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্যের ওয়েস্ট ইন্ডিজের ত্রিমূর্তি শিবনারায়ণ চন্দরপাল (৩৬), ক্রিস গেইল (৩১) ও রামনরেশ সারওয়ানের (৩০) জন্যও এটি হয়তো ছিল বিশ্বমঞ্চে জ্বলে ওঠার শেষ সুযোগ। এর কী অপচয়টাই না করলেন তাঁরা!
ছোট দলের বেশ কিছু বড় তারকার জন্যও উপমহাদেশের বিশ্বকাপ ছিল শেষ। কেনিয়া ক্রিকেটের সমার্থক হয়ে ওঠা স্টিভ টিকোলো যেমন। ৩৯ বছর বয়সে তো ক্রিকেটকে চিরতরে বিদায়ই বলে দিয়েছেন তিনি। অনেক দিনের সতীর্থ টমাস ওডয়োর (৩২) ছায়াও হয়তো পড়বে না পরের বিশ্বকাপে। জিম্বাবুয়ের রেমন্ড প্রাইস তো প্রায় নিশ্চিতভাবেই খেলবেন না ৩৮ বছর বয়সে। আর কানাডার জন ডেভিসনের বয়স তো এখনই ৪০! বিশ্বকাপে চমক দেখানো আয়ারল্যান্ডের ট্রেন্ট জনস্টন (৩৬), আন্দ্রে বোথা (৩৫) ও এড জয়েস (৩২) পরের বিশ্বকাপে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করতে পারেন টিম ম্যানেজমেন্টে। নেদারল্যান্ডসের বাস জুইডারেন্ট (৩৩) ও রায়ান টেন ডোশেটের (৩০) জন্যও অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে খেলাটা হবে দুরূহ।
বয়সের গিলোটিনে কাটা পড়ে বিশ্বকাপের ১৩টি দলেরই কারো না কারো ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা। রইল বাকি বাংলাদেশ। এই বিশ্বকাপে যে দলের স্কোয়াডের সবচেয়ে বেশি বয়সের ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাকের বয়স মাত্র ২৮ পেরোল। অর্থাৎ অন্তত বয়সের অজুহাতে কারো বাদ পড়ার আশঙ্কা নেই। ১৫ জনেরই সম্ভাবনা আছে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে খেলার। কিন্তু তাই কী হয়! অতটা ধারাবাহিক যদি হতো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা, তাহলে কেন কান পাতলে এমন হাহাকার শোনা যাবে ক্রিকেটাঙ্গনের সর্বত্র! বাজি ধরুন, স্কোয়াডের অর্ধেকও টিকে থাকবে না। তা সে কারণ যাই হোক না কেন!
(ঢাকা নিউজ 24 ডট কম)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৪২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×