somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফকির ইলিয়াস
আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারী একজন শর্মিলা বসুর ধৃষ্টতা

০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারী একজন শর্মিলা বসুর ধৃষ্টতা
ফকির ইলিয়াস
===========================================
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামবিরোধী চক্রটি এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারা করে যাচ্ছে নানা ফন্দিফিকির। দেদার টাকা ঢালছে। এর প্রমাণ আমরা আবারও পেলাম ৪০তম স্বাধীনতা বার্ষিকীর প্রাক্কালে। এবার তারা মাঠে নামিয়েছে একজন বিদেশি লেখিকাকে। তার নাম শর্মিলা বসু। তিনি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ভাইয়ের মেয়ে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত শর্মিলা জন্মগ্রহণ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে আন্দাজভিত্তিক একটি বই লিখেছেন তিনি। বইটির নাম 'ডেড রেকনিং : মেমোরিজ অব ১৯৭১ বাংলাদেশ ওয়ার।'
প্রথমেই বলে নেয়া দরকার, দলিল-দস্তাবেজ অনুযায়ী ১৯৭১ সালে শর্মিলা বসুর বয়স ছিল ১২ বছর। তাই তার এই বইটি 'মেমোরিজ' হয় কী করে সে প্রশ্নটি এসেছে শুরুতেই। শর্মিলা মাঠে নেমেছেন ভাড়াটে খেলোয়াড় হিসেবে তাও বোঝা যায় তার লেখভাষ্য থেকে। শর্মিলা বসু তার গ্রন্থে সেই পুরনো কথাটির পুনরাবৃত্তি করেছেন। যা বেশকিছু দিন ধরে বাংলাদেশের আলবদর, রাজাকার নেতারা বলে আসছে। শর্মিলা বলতে চেয়েছেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিসংগ্রামে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হননি।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা শর্মিলা বসু পরিকল্পিত মিথ্যা লিখে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, যা তার বইটির পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় স্থান পেয়েছে। গেল ১৫ মার্চ '১১ ওয়াশিংটন ডিসিতে উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলারস নামের একটি সংগঠন বইটির প্রকাশনার প্রাক্কালে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠানে শর্মিলা বসু উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তীব্র প্রতিবাদের মুখে এক সময় বেশ চুপসে যান শর্মিলা বসু।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শর্মিলা বসুকে বেশ মোটা অঙ্কের ডলার দিয়ে এ বইটি লিখিয়ে নেয়া হয়েছে তা বিভিন্নভাবেই অনুমান করা যায়। বইটির প্রি-পাবলিশ এই অনুষ্ঠানে শর্মিলার কাছ ঘেঁষে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জামায়াতপন্থি বেশ কিছু নেতাকর্মী। এদের অনেকেই ৩৭.৫০ ডলার মূল্যের বইটি আনন্দের সঙ্গে কিনে নিয়ে শর্মিলার অটোগ্রাফও গ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক প্রকাশিত ২৩৯ পৃষ্ঠার এ বইটিতে পুরোটাই মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলির সত্য উপাত্তকে মিথ্যায় ঢেকে দেয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে খুবই জঘন্যভাবে।
শর্মিলা বসু দাবি করেছেন, বইটি লেখার প্রয়োজনে তিনি নাকি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সফর করেছেন। বিভিন্ন জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। অথচ তার এ বইটি বলছে, ২৫ মার্চের নির্মম হত্যাযজ্ঞসহ পুরো ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী গণহত্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি মোট ১৪৯ জন নিহত হয়েছেন। শর্মিলার মতে, ২৬ মার্চ '৭১-এ ঢাকার শাঁখারিপাড়ায় আট হাজার নিরীহ মানুষ নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও সেদিন শাঁখারিপাড়ায় মাত্র ১৪-১৫ জন পুরুষ এবং একটি শিশু নিহত হয়েছিল!
শর্মিলা বসু খুব সূক্ষ্মভাবে পাকপন্থি রাজাকারদের 'পার্পাস সার্ভ' করার কাজটি যে করেছেন তার আরও কিছু উৎকৃষ্ট উদাহরণ পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন, ১৯৭১-এর ১ মার্চ থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত পাকবাহিনী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়নি। এ সময়ে এবং '৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরের পরে আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং মুক্তিবাহিনী ব্যাপক সংখ্যক অবাঙালি মুসলমানদের হত্যা, ধর্ষণ, অগি্নসংযোগ এবং তাদের মালামাল লুণ্ঠন করে! লক্ষণীয়, এসব কথা বাংলাদেশে মৌলবাদী চক্র বেশ আগে থেকেই বলে আসছে।
কেমন হীন মানসিকতা নিয়ে একটি সশস্ত্র জান্তা, দানব বাহিনীর পক্ষ নিয়েছেন শর্মিলা বসু। অথচ বিশ্ব ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় '৭১-এর ২৫ মার্চের কালরাত থেকে সক্রিয়ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়লেও ৭ মার্চের আগেই পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে পাক হানাদাররা গণহত্যা শুরু করেছিল। যার প্রমাণ হিসেবেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ওদের গুলিতে বাংলার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, 'আর যদি একটা গুলি চলে ...।'
বইটির অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক দিক হচ্ছে, গ্রন্থটিতে একাত্তরের গণহত্যাকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। অথচ সে সময়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিনি কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাড ওয়াশিংটনে যেসব বার্তা পাঠিয়েছিলেন তাতে তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিমা বাহিনী অত্যন্ত নির্মমভাবে গণহত্যা শুরু করেছে। যার ফলে পরবর্তী সময়ে আর্চার ব্লাডকে নিক্সন -কিসিঞ্জার প্রশাসনের রক্তচক্ষুর শিকার হতে হয়। তার কূটনৈতিক পদ নিয়েও বেশ হেনস্তার শিকার হতে হয় আর্চার ব্লাডকে।
সন্দেহ নেই রাজাকার-আলবদর মদতপুষ্ট বহির্বিশ্বের একটি মহল বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে এমন একজন ভাড়াটে কে নিয়োগ করেছে যিনি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তার পালিত কিংবা চর্চিত ধর্ম হচ্ছে পৌরাণিক। এসব মৌলবাদী-জঙ্গিবাদী শক্তির মদতপুষ্ট মহলটি এ কাজটি এমন এক সময়ে করাচ্ছে যখন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধীদের বিচারের প্রক্রিয়া চলছে।
শর্মিলা বসুকে সেই অনুষ্ঠানে একজন প্রশ্ন করেছেন, তিনি আইএসআইর (পাক গোয়েন্দা সংস্থা) মদতপুষ্ট হয়ে কিংবা অর্থ পেয়ে এমন বই লিখেছেন কি-না! শর্মিলা 'না' সূচক জবাব দিয়েছেন।
আমার মতে, কোন বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা এককভাবে এ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে না। এর নেপথ্যে রয়েছে ইউরোপ-আমেরিকায় বসবাসরত রাজাকার তমদ্দুনপন্থি বেশ কিছু পেশাজীবীর একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এসব ডক্টর, প্রকৌশলী, শিক্ষক, চিকিৎসক বাংলাদেশে গ্রেফতারকৃত রাজাকার-আলবদর নেতাদের মুক্ত করার জন্য লাখ লাখ ডলার ঢালতে মোটেও কার্পণ্য করছে না। তারা শুধু অর্থই নয়, প্রয়োজনে জনবল দিয়েও নানা রকম সাহায্য-সহযোগিতার লক্ষ্যে সভা-সমাবেশও অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশে একাত্তর সালে পাক হানাদার বাহিনী কেমন নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, তার প্রমাণ বহির্বিশ্বের সংবাদপত্রগুলোতে সে সময়ে বিস্তারিতই ছাপা হয়েছিল। যা এখনো অনেক গ্রন্থাগার, আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে।
একাত্তরের 'গণহত্যা'কে খুব স্বল্প সময়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্বের যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরা। তারপরও শর্মিলা বসু ৩০ লাখ শহীদের ঘটনাকে 'ওয়াইল্ড ইমাজিনেশন' বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।
শহীদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে পরিসংখ্যান দেখিয়েছেন। অঞ্চলভিত্তিক গণহত্যার নিরিখে তৎকালীন সাড়ে ৭ কোটি মানুষের আবাসস্থলে কীভাবে সংখ্যা ৩০ লাখ হতে পারে, তা বিভিন্ন ইতিহাসবেত্তা তাদের লেখনিতেও লিখেছেন। তারপরও একটি হায়েনাচক্রের প্রেতাত্মা এখন ভাড়াটে লেখক দ্বারা শহীদদের খারিজ করার পাঁয়তারা করছে। যা দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব দেশপ্রেমিক বাংলাদেশির বিবেচনায় রাখা উচিত।
মহান স্বাধীনতার ৪০ বছর পেরিয়ে এসেছে বাঙালি জাতি। কিন্তু সেই সারমেয় শ্রেণী তাদের দৌড় এখনো অব্যাহত রেখেছে। তারা যে কোনভাবে চাইছে একাত্তরের ইতিহাস, ইতিবৃত্ত পাল্টে দিতে। এজন্য তারা যে কোন মরণকামড় দিতে মোটেও কসুর করছে না।
তথাকথিত 'গবেষণা'র নামে তাই কিছু ভাড়াটে তারা মাঠে নামাচ্ছে। সত্যের বিরুদ্ধে এই যে অসুরের চ্যালেঞ্জ, তা মোকাবিলা করতে হবে সত্য ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে। আমি খুবই নিশ্চিত বাঙালি জাতি অতীতে যেমন শকূন তাড়িয়েছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এসব শকুনকে একইভাবে তাড়াবে।
[নিউইয়র্ক, ৩০ মার্চ, ২০১১]
---------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক সংবাদ / ঢাকা / ১ এপ্রিল ২০১১ শুক্রবার
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:৩০
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

**অপূরণীয় যোগাযোগ*

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ২৮ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:১৯

তাদের সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল ৬ বছর আগে, হঠাৎ করেই। প্রথমে ছিল শুধু বন্ধুত্ব, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা গভীর হয়ে উঠেছিল। সে ডিভোর্সি ছিল, এবং তার জীবনের অনেক কষ্ট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×