জন্মেছি বাংলাদেশের একটি শান্ত, নিরিবিলি, ছোট্ট গ্রামে। আর বেড়ে উঠেছি তেমনি আর একটি গ্রামে। উল্লেখ্য যে, জন্মেছিলাম নানার বাড়িতে আর বেড়ে উঠেছি দাদার বাড়িতে। শৈশব ও কৈশর কাটিয়েছি গ্রামের বাড়িতেই। ইন্টারমিডিয়েট পাস করে সেই ১৯৯৮ সালে গ্রাম ছেড়ে ইট কাঠের শহরের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাই। পড়াশুনা শেষ করে জীবন জীবিকার জন্য থেকে গিয়েছি সেই ইট কাঠের শহরেই। কিন্তু আর পারছি না........................।
এবার এ ইট কাঠের শহর ছেড়ে গ্রামে যেতে কুব ইচ্ছে হচ্ছে। ইচ্ছেটা যে আজ নতুন তা নয়, দীর্ঘদিন ধরেই ভাবছি, কিন্তু ব্যাটে বলে হচ্ছিল না। এর দু'টি কারন, প্রথমটি জীবন জীবিকা, আর দ্বিতীয়টি গ্রামের মানুষের পাশে দাড়ানোর যে ইচ্ছাটি ছোটবেলা থেকে ছিল সেটি করতে হলে যে দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রয়োজন তা তৈরি না হওয়া।
কিন্তু এবার গ্রামে ফিরবই ফিরব এবং আগামী জুলাই মাসেই। ইচ্ছা আছে শুধু নিজের জীবিকা নয় গ্রামের আরও কিছু মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা করা। তবে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরন; কোন ভাবেই আমি ক্ষুদ্রঋণ বা এমন কিছুর সাথে যুক্ত হতে চাইনা।
মোটামুটি যে বিষয়গুলি নিয়ে কাজ শুরু করতে চাচ্ছি গ্রামে ফিরে সেগুলি হলো
১. সমবায় কৃষি - এ উদ্যোগে আমি সহ বেশ কিছু কৃষক, যাদের পামাপাশি জমি রয়েঝে তারা সম্মিলিতভাবে চাষাবাদ করব। জমির পরিমান অনুযায়ী চাষাবাদের খরচ জমির মালিক বহন করবে এবং সে অনুযায়ি ফসলের অংশ পাবে।
২. সমাবয় নার্সারী - যেখানে লবন সহিঞ্চু জাতের বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা উৎপাদিত হবে, এবং নামমাত্র মূল্যে এলাকাবাসীর মধ্যে বিক্রয় করা হবে পাশাপাশি সামাজিক বনায়নের ব্যবস্থা করা হবে। (উল্লেখ্য যে আমাদের এলাকা অতিরিক্ত লবনাক্ত এলাকা)।
৩. দুগ্ধ খামার - প্রথমে ৫০ টি গাভি নিয়ে শুরু হবে আমাদের দুগ্ধ খামার।
৪. গরু মোটাতাজাকরন প্রকল্প - ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ১০০ ষাড় নিয়ে শুরু হবে গরু মোটাতাজাকরন প্রকল্প।
৫. মুরগী খামার - ৫০০০ ব্রয়লার এবং ৫০০ লেয়ার মুরগী দিয়ে প্রথমে মুরগীর খামার যাত্রা শুরু করবে এবং পরবর্তীতে এটা আরও বাড়ানোর ইচ্ছা আছে।
৬. কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষন কেন্দ্র - বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এলাকার শিক্ষিত বেকার ও ছাত্র-ছাত্রীর জন্য শুরুতে ১০ টি কম্পিউটার নিয়ে একটি প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপিত হবে, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ সহ শিক্ষামূলখ বেশ কিচু অফলাইন কন্টেন্ট থাকবে। এখানে সমিতির সদস্য ও পোষ্যরা বিনামূল্যে ল্যাবটি ব্যবহার করতে পারবে। কমিউনিটির অন্যদের জন্য নামমাত্র সার্ভিসচার্জে ল্যাব সুবিধা প্রদাণ করা হবে। এছাড়া ৪ টি কম্পিউটার এর ব্যবস্থা থাকবে সাইবার ক্যাফে হিসাবে। কেন্দ্রটি টিকিয়ে রাখতে ডিজিটাল স্টুডিও সহ আর ও কিছু বানিজ্যিক সেবা যোগ করা হবে।
এই কর্মসূচিতে কোন বেতনভূক্ত কর্মকর্তা কর্মচারি থাকবে না। তবে একটি কমিটি থাকবে এটির দেখভাল করার জন্য। কমিটি যখন যাকে যে কাজে সংশ্লিষ্ট করবে সেটা সে করবে। নিয়মমত সকল ফসলের অংশ পাবে। মুধু মাত্র কম্পিউটার প্রশিক্ষন থেকে প্রাপ্ত সার্ভিস চার্জ এর অর্থ কেউ পাবে না এটা প্রশিক্ষন কেন্দ্রের উন্নয়ন ও রক্ষনাবেক্ষনে ব্যয় হবে।
উপরোক্ত কার্যক্রমের বাইরে ব্লগার বন্ধুদের মাথায় যদি কোন কনসেপ্ট থাকে তা শেয়ার করে উপকার করলে কৃতজ্ঞ থাকব।