পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন না করে সরকার পরোক্ষভাবে শান্তিচুক্তি বিরোধীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।
Published : 30 Jul 2013, 04:55 PM
তার শঙ্কা, এতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আবার অশান্ত হয়ে উঠতে পারে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা বলেন, “সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার অভাবে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এখনো আমাদের দেশে আদিবাসীদের প্রতি বৈরী মনোভাব রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চল এখনো অশান্ত। সন্ত্রাস, শোষণ, নিপীড়ন অব্যাহতভাবে চলছে।”
পার্বত্য চট্টগ্রামকে ইসলামীকরণের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সন্তু লারমা বলেন, “একদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ইসলামীকরণের ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তৎপর হয়ে উঠছে ইউপিডিএফসহ আরো অন্যান্য চুক্তিবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছার অভাব তাদের উৎসাহিত করছে।”
“এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে না, চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফ এবং চুক্তি পক্ষকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটবে না- তা আমরা কীভাবে বলতে পারি?”
পাহাড়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অপহরণ পাল্টা অপহরণের মতো ঘটনা ঘটছে।
সর্বশেষ সোমবার রাঙামাটির লংগদু উপজেলা থেকে অপহৃত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) অপহৃত ৫২ জন নেতাকর্মীর ৩৪ জনকে মুক্তি দেয় অপহরণকারীরা । ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে তাদের অপহরণ করা হয়েছিল।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করে সন্তু লারমা বলেন, “চুক্তি সাক্ষরের পর আওয়ামী লীগ সরকার ৩ বছর ৮ মাস সময় পেয়েছিল। সেই সময়ে সরকারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি।
“বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম বাস্তবায়ন চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সাড়ে ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।”
চলতি বছরের ১৬ জুন জাতীয় সংসদে সংশোধনের জন্য বিল আকারে উত্থাপিত ভূমি কমিশন আইন ২০১৩ (সংশোধিত) পার্বাত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তাবায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রণীত হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবিধান সংশোধন করে আদিবাসী জাতিসমূহের স্বীকৃতি, ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি, আদিবাসী অধিকার সংক্রান্ত সকল চুক্তি ও অঙ্গীকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, আদিবাসীদের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৩ থেকে ৯ অগাস্ট ঢাকায় টানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, শক্তিপদ ত্রিপুরা প্রমুখ।