somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঙালির মানস ও দ্বৈতনীতি

০৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। আমরা 'জয় বাংলা' স্লোগান দিতে পারি। কিন্তু 'জয় বঙ্গবন্ধু' না দিয়া 'জয় জনতা' আমদানি করি।

২। আমরা মাহমুদুর আর সাঈদীর কলিজু সংলাপ ধুমায়া শেয়ার করি, মজা লই। কিন্তু বিচারপতি নাজিমের স্কাইপ আলাপন প্রচার-বিশ্লেষণ নিষিদ্ধ করি।

৩। আমরা সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আসতে বলি, কিন্তু দেশবিরোধী আওয়ামী চুক্তি নিয়া আলাপ করতে অস্বস্তিবোধ করি।

৪। আমরা ফাঁসীর দাবিতে দুনিয়া কাপাই, আবার প্রসিকিউশনের দূর্বলতা আর ৪ বছরের সরকারী অবহেলা দেইখা ক্ষিপ্ত হই না।

৫। আমরা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার শপথ নিয়ে শুরু করলে প্রধানমন্ত্রী শাহবাগ আসতে চান। আবার জামাত নিষিদ্ধ করার কথা বললে মন্ত্রীদের ধমক লাগান।

৬। আমরা গ্রামের মানুষের চান্দে সাঈদীদর্শনকে ট্রল করি, আবার নিজেরাই বেলুনে পত্র পাঠাই আসমানে।

৭। আমরা বাক-স্বাধীনতার, মুক্তচিন্তার কথা বলি ফেইসবুক ইউটিউব ব্যান করলে, আবার আমরাই বিরোধীমতের টিভি চ্যানেল পত্রিকাকে ব্যান করার দাবিতে সরব হই।

৮। আমরা মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ)কে অবমাননার দায়ে সাঈদীরে গ্রেফতার করি, কিন্তু থাবাদের হাতে প্রতিনিয়ত অবমাননার ঘটনায় কোন মামলাই করি না।

৯। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা টক শো তে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির কথা বলেন, জামাতের মন্দিরে হামলার নিন্দা করেন। কিন্তু নিজেরা হতাহতদের বাড়িতে যান না।

১০। আমরা প্রবল ধর্মানুভূতিকে ধর্মান্ধতা বলি, কিন্তু প্রবল রবীন্দ্র সঙ্গিতানূভুতির জন্য লজ্জ্বিত হই না।

১১। আমরা মোল্লাদের পরমতে সহনশীলতারর কথা বলি, আবার নিজের বন্ধুতালিকায় বাশেরকেল্লা লাইকারদের নির্দিধায় ডিলিট করি।

১২। আমরা ২৫ ফেব্রিয়ারী আসলে সেনা অভিসারদের জন্য কাঁদি, স্ট্যাটাস দেই। কিন্তু বিডিয়ারের ৪৭ জন হার্ট এটাকে মারা যাওয়া জওয়ান আর ছয় হাজার দন্ডপ্রাপ্ত পরিবারের কথা ভুলেও মুখে আনি না।

১৩। আমরা স্বচ্ছ, আন্তর্জাতিক মানের বিচার চাই রাজাকারের জন্য, কিন্তু গরীব বিডিয়ার জওয়ানদের স্বচ্ছ-আন্তর্জাতিক মানের বিচারের জন্য 'সেইভ মুসলিম ব্রাদারস' স্লোগানে ইউটিউব, মসজিদ গরম করি না।

১৪। আমরা বিলাতি টবি ক্যাডম্যানকে সসম্মানে ফেরত পাঠালে দেশজ আইন-কানুনের সাথে বিদেশী কানুন মাপ দেই। কিন্তু ২০জন বিডীয়ারের জন্য ১জন সরকারী উকিল লড়লে আন্তর্জাতিক মান পকেটে ভাজ করে রাখি।

১৫। আমাদের দেশনেত্রীর সরকারী বাড়ি হারালে হরতাল দেই, কিন্তু হিন্দু পরিবারের বাড়ি পুড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিলে হরতাল দূরের কথা, মানববন্ধন করতেও লোক পাওয়া যায় না।

১৬। টক শো সেমিনারে শেখ মুজিবর রহমানের সাধারন ক্ষমার ভূল ব্যাখ্যা দেই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলি না।

১৭। আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গনহত্যার ছবি দেখে মুভি ক্রিটিক সাজি, আবার নিজের দেশের গনহত্যার সংখ্যা নিয়া মিডিয়াতে বাহাস করি।

১৮। সারের দাবিতে বিক্ষোভ করা ১৮ গ্রামবাসীর বুকে গুলি চালানোকে গনহত্যা বলি না, কিন্তু সহিংস জামাতি মিছিলে গুলি চালাইতে গনহত্যা বলি।

১৯। তত্ত্বাবধায়ক আমলে আমরা সেনাবাহিনীর নাম নিলে সামনে পিছনে 'দেশপ্রেমিক' বলতে ভুলি না। আবার ব্যাপক ভূমিধস বিজয়ে জেতা গনতান্ত্রিক সরকারের আমলে সীমিতমাত্রায় সেনা মোতায়েন করলে গণতন্ত্র 'চমৎকার' হবার ধোয়া তুলি।

২০। দেশের সমস্যা নিয়া হোয়াই হাইজ পর্যন্ত পিটিশন পাঠাই(নিঃসন্দেহে জামাতের সাথে প্রতিযোগিতাটা ভালো উদ্যোগ), কিন্তু নিজের দেশে গণভবনে চিঠি পাঠাইনা, প্রধানমন্ত্রীকেও সরব হতে বলি না।

লেখাটি বাঙ্গাল ফেইসবুক পেইজে প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬
১৬টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×