somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনৈতিক পাপ

২৯ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুমি অধম হইলেও আমি উত্তম হইবো না কেনো? এই নীতিটি আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যদের ধারে-কাছেও ভিড়তে পারে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংসদ সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু হবার কথা। আমাদের সংসদটি আজ চন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে!

বিএনপি অধিবেশনে যাচ্ছেনা। তবে আশা করা যায় আমাদের কথা বলবার জন্য না হলেও, চেয়ার বাঁচানোর খাতিরে হলেও সহসাই তারা সংসদে যাবেন। আসন রক্ষার জন্য সংসদে যাওয়ার এই আমলটি আওয়ামীলীগ-বিএনপি উভয়েই করে!

আর গিয়েই-বা কী লাভ? জিয়া'র কবরে জিয়া'র লাশ আছে কি নেই, টুঙ্গিপাড়ার কী অবস্থা-সেগুলোই তো আজকাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসদীয় আলোচনার মুখ্য বিষয়! এমনকি মৃত নেতাদের ডিএনএ টেষ্টের কথাও আলোচিত হয় আমাদের সংসদে! আগামীতে জন্ম পরিচয়ের গ্যারান্টিপত্র হিসেবে আমাদের সবাইকে ডিএনএ সার্টিফিকেট পকেটে নিয়েই ঘুরতে হয় কিনা- কে জানে!!

উনিশ’শ নব্বই সালে গণতন্ত্র পূণ:প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে আজ অবদি আমাদের সংসদ কখনো জাতির আশা-আকাংখার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেনি। আমাদের সংসদ সদস্যরা তাদেরই তৈরি রুলস অব প্রসিডিউরকে কোনো কালেই পাত্তা দেননি। যার যেমন ইচ্ছে, তেমনই বক্তৃতা করেন সংসদে। ফ্রি স্টাইল বক্তৃতা।

প্রসঙ্গ যত অরুচিকরই হোক, বাক্য মত নোংরাই হোক, তাদের মুখে কিছুই আটকায় না। যখন যিনিই স্পীকারের আসনে বসা থাকেন, তিনি থাকেন অসহায়। বাজে মন্তব্য করার কারণে কাউকে তিনি অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করেও দিতে পারেন না। সেই ক্ষমতা তাকে আমরা দেইনি।

এমন অসভ্যতা ও নোংরামী যখন জাতীয় সংসদের প্রদর্শিত হয়, তখন বড়বেশি অসহায় মনে হয় স্পীকারকে। শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থায় বিব্রত ভঙ্গিতে তাকাতে থাকেন তিনি। তাঁর করার কিছু থাকে না।

এই অবস্থায় সংসদে যদি কোনো সংসদ সদস্য অসভ্য ও নোংরা কিছু উচ্চারণ করেন, আর আল্লাহপাকের খাস কুদরতে সংগে সংগেই তার মুখ সেলাই হয়ে যায়, তবেই বন্ধ হতে পারে এই অসুস্থ প্রবণতা। এছাড়া আমি আর কোনো উপায় দেখছি না।

আর আমাদের মাননীয় সাংসদগণ যখন স্বরূপে আবর্তিত হন, তারা যখন মৃত নেতাদের কবর থেকে টেনে-হেঁছড়ে বের করে আনার চেষ্টা করেন, তারা যখন জীবিত নেতাদের কুৎসিত ভাষায় গালি দেন, নেত্রীদের শাড়ির আঁচল ধরে টানাটানি করেন, তখন সেটা দেখে দেশের সাধারণ জনগণ লজ্জায় চোখ সরিয়ে নেয় টেলিভিশনের পর্দা থেকে। আর মনে মনে ভাবে, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে গালাগালি করার দরকার কী? কোনো বস্তির পাশে খোলা আসমানের নিচেই তো এই কর্মটি করা যায়।

আমাদের দুর্ভাগ্য, এমন মানসিকতার মানুষকে আমরা ভোট দিয়েছি! তারা আমাদের জন্য আইন তৈরি করবেন! দোষ তো আমাদেরও আছে।

এদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের অপ্রত্যাশিত নোংরামীর কিছু উপাখ্যান, কিছু তিক্ত কথা, কঠিন সত্য, আরো কিছু অমীমাংসিত প্রশ্ন।
জবাব খুঁজতে চেষ্টা করা হয়েছে বইটিতে।

বইটি পাঠকের কাছে ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা পেলেই ভাববো কষ্ট কাজে লেগেছে। সবাইকে শুভেচ্ছা
.................................

রাত গভীর, ভোরের তো দেরি নেই
মোসলেহ উদ্দিন বাবুল

আমার ছোট বোনের বড় ছেলে সামিন, বয়স ছ’মাস। সামিনের ছোট মামী নাজিরা। দু’জন নতুন অতিথি। কোনো একদিন তাকে জিজ্ঞেস করবো, কেমন আছো মেয়ে?
সে মাথা নিচু করে বলবে, ভাল।
আমি বলবো, এক কথায় জবাব দিলে হবে না। ভাল হলে কেমন ভাল, ভাল না হলে নেই কেনো, উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা দাও।

ঝরঝরে উপন্যাস!
না,
সিরিয়াস ধাঁচের এক গ্রন্থের উৎসর্গ এটি। গ্রন্থকার রশীদ জামীল। গ্রন্থের নাম ‘রাজনৈতিক পাপ।’ ঢাকার প্রতিভা প্রকাশ থেকে ২০১১ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত এই গ্রন্থের পৃষ্ঠা ১১২।

বিড়ালের সামনে মুখখোলা সুটকির প্যাকেট রেখে যতই তাকে ওয়াজ করা হোক, বিড়াল! পরের সুটাকিতে মুখ দিস না, গোনাহ হবে। দোজখের আগুনে জ্বলতে হবে। এই ওয়াজে বেড়ালের উপর কোনো আসর পড়বে না। লাঠি দিয়ে তাড়া করলে কিছু সময়ের জন্য দুরে সরে যাবে। একটু পরে আবার চলে আসবে কারণ, সুটকির গন্ধে সে আচ্ছন্ন। এ জন্য যা করতে হবে তা হলো, সুটকিকে হেফাজতে রাখা। আর বিড়ালের সামনে সব সময় একটি ডান্ডা খাড়া করে রাখা।

শিরোনাম ‘ইভটিজিং এর পোষ্টমর্টেম’। বর্তমান সময়ের গুরুতর এই সমস্যার বিশ্লেষনের মাধ্যমে কারণ ও প্রতিকারের বিষয়ে লেখকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছেন, খোলামন ও যৌক্তিক আলোচনায়।
জাতীয় সংসদের মাননীয় সাংসদদের আচার-আচরণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন ‘দিন যায় কথা থাকে’ অধ্যায়ে। ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর’ অধ্যায়ে লেখক তার একান্ত নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছেন। সকল পাঠক তার সাথে একমত হবেন না, কিন্তু লেখকের বিশ্লেষনকে গুরুত্ব না দিয়েও পারবেন না । যৌক্তিক এবং তথ্যভিত্তিক আলোচনার যা ফলাফল । অধ্যায়টি পড়া শেষ করে রবীন্দ্রনাথকে মনে পড়ে গেল, ‘ সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালবাসিলাম । তার পরের শব্দাবলী তো সবারই জানা।

‘মাননীয় প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিন সমীপে’ চমৎকার একটি রাজনৈতিক নিবন্ধ। একজন দেশপ্রেমিক মুক্তবুদ্ধির বাঙালী বাংলাদেশীর মনের কথাগুলো খুব চমৎকারভাবে উঠে এসেছে আলোচনায়।
‘সংবিধান সংশোধন, মাসির বাড়ী কই? বিচারের বাণী, বঙ্গবীর! ,বিজয়ের স্বাদ, আবেগের আঘাতে আক্রান্ত লাল সবুজ, তবুও ঈদ মোবারক, উইকিলিকস’র তথ্য বোমা! শিক্ষা যদি হয় ভাইরাস মুখর,-

বইটা প্রায় শেষ করে এনেছি। শেষ অধ্যায়টা পড়ার জন্য পৃষ্টা উল্টালাম, শিরোনাম, ‘যদি এমন হতো’ সাদামাটা গল্পের ধরণে শুরু। পড়ে যাচ্ছি, হঠাৎ চমকে গেলাম। আগ্রহে ঝুকে পড়লাম। অজান্তেই হাতের আঙ্গুলে ধরা বইটা শক্ত হয়ে গেল। শরীরে বার্তা পাঠাচ্ছে ব্রেন। অনেক আকাংখিত সুখের একটা স্বপ্ন, কেউ যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্যেই এই সতর্কতা। অবচেতন মনের এই প্রতিক্রিয়া আমাকে কিংকর্তব্য বিমূঢ় করে দিল। আমি আর কিছু ভাবতে পারি না। আর কিছু চাইতে পারি না। স্বপ্ন হোক, সত্য হোক, আমি এখানেই নিমগ্ন থাকতে চাই, এটাই আমার প্রতিতী, এটাই আমার বিশ্বাস।

‘রাজনৈতিক পাপ’ লেখক রশীদ জামীল । প্রথম প্রকাশ একুশের বই মেলা ২০১১। প্রচ্ছদ মীম সাব্বির । প্রকাশক প্রতিভা প্রকাশ, ঢাকা। মূল্য ১৪০টাকা মাত্র।

৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×