আইজ কাস্টমার নাই, বেকার হারা দিন, মাইয়াগো খালি চা-বিস্কুট খাওয়াই রাখছি। কষ্ট খালি আমাগো, আপা।’ এভাবেই দুঃখের কথা বললেন চা-দোকানি রোকেয়া বেগম।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা প্রেসক্লাবের দেয়াল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ছোট্ট চায়ের দোকানে বসে কথা হয় রোকেয়ার সঙ্গে। রোকেয়া এখানে চার বছর ধরে স্বামী রতন মিয়ার সঙ্গে চা বিক্রি করেন। ছোট্ট দুই মেয়ে আর স্বামী নিয়ে রোকেয়ার সংসার।
রতন মিয়া জানান, প্রতিদিন প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার চা বিক্রি করেন। সঙ্গে বিস্কুট, সিগারেট, কলা, পাউরুটি বিক্রি করেন। এখন ৩০০ টাকাও বিক্রি হয় না। রতন বলেন, ‘হরতালে এক্কেবারে বেকার হইয়া গেছি, আমাগো মতো গরিব মানসের কতা কি কারও মনে থাহে?’
রতনের পাশেই চশমার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন আজিজুর আলী। সারা দিন কাকের মতো চেয়ে আছেন পথের ধারে। গতানুগতিক ধারা সরিয়ে কেউ যদি আসে তাঁর দোকানে। রাজধানীর পানে সবাই যে আশায় ছোটেন, ঠিক সেই চাওয়া নিয়ে এই শহরে এসেছেন আজিজুর। তিনি জানান, দিনাজপুর থেকে ঢাকায় এসেছেন একটু ভালো করে বাঁচার আশায়। পরিবার থাকে পুরান ঢাকায়। শুকনো মুখে আজিজ বলেন, ‘আজ ঘরে চাইল না লইয়া গেলে বেবাকটি না খাইয়া থাকন লাগব। দেশের ভালোমন্দ বোঝনের কাম কাগো কেডা জানে, তয় হুদায় হরতাল দিয়া কার লাভ হয়, কইতে পারেন?’
এমন প্রশ্ন পাশের দোকান মনির, কামাল ও সাইদেরও। মনির ক্ষিপ্ত সুরে বলেন, ‘আমাগো পেটে ভাত কি হরতাল দেয়? এহন তো আতঙ্কে থাকি, কখন বোমা, ককটেলে জীবন যায়। এই হরতালে দেশের মঙ্গল কোথায়?’
সুত্রঃ Click This Link