Do something funny for money !!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
প্রতি বছর ইংল্যান্ডে ১৮ ই মার্চ একটি বিশেষ দিন। এদিন সবাই কিছু ফানি একটা জিনিস করে এবং সবার কাছ থেকে টাকা পয়সা সংগ্রহ করে।দিনটি সবার কাছে RED NOSE DAY হিসেবে পরিচিত। এই দিনে সবাই নাকে একটা লাল বল লাগায় যাতে সবাইকে ফানি দেখায়। এই দিনে সংগ্রহ করা টাকা মূলত আফ্রিকার দুর্গত দেশের জন্য ব্যায় করা হয়।তাদের এই বিশাল ফান্ড রাইজিং এক্টিভিটিতে জরিত থাকে সমস্ত সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত। যতটা ফান্ড তারা সংগ্রহ করে ঠিক ততটাই গর্ভমেন্ট ম্যাচ করে, যার ফলে তাদের সংগ্রহ অনেকটাই গুরুত্বপূর্ন। তারা যেসব কাজে টাকাগুলো ব্যায় করে সেগুলো হলো: ম্যালেরিয়া, এইডস, শিশুদের নিউট্রিশন, দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ দিক হলো এখানে সিরিয়াস বেশ কিছু ক্লিপ দেখানো হয়েছে আফ্রিকা থেকে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো একজন এইডস আক্রান্ত মহিলার শেষ ৯০ দিনের একটি ভিডিও, যা দেখলে চোখের পানি ধরে রাখা খুবই কষ্টকর। এসব ক্লিপের মূল লক্ষ্যই হলে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং মানুষকে দানে উৎসাহিত করা। তারা বেশ সফল এ বছর, পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৭৪মিলিয়ন এর বেশী সংগ্রহ করেছে। একটা জিনিস না বললেই অনুষ্ঠানটি যে দেখেছে সে দান করতে বাধ্য হয়েছে যার কৃ্তিত্ব বিবিসি ক্রুদের অসাধারন কিছু ইমোশোনাল ভিডিও, যা আপনার মনুষ্যত্বকে জাগাতে বাধ্য। আমি বাজি ধরে বলতে পারি পৃথিবীর যত কঠিন মনের অধিকারী আপনি হননা কেন, চোখের জল ধরে রাখতে পারবেন না।
মূল অনুষ্ঠানটি বিবিসি তে সম্প্রচার করা হয়েছে যা দৃষ্টি কেরেছে মিলিয়ন দর্শকের।সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এই দেশের জনপ্রিয় নাটক, কুইজ প্রতিযোগীতা ,অনুষ্ঠানসমূহ কে বিশেষ ভাবে ফানি করে লিখা হয়েছে একটি ৫-১০ মিনিটের ক্লিপে, যা মূলত মজা করার জন্য। এতে সব চিরাচরিত অভিনেতা অভিনেত্রীরাই অভিনয় করেছে যা সত্যি উপভোগ্য। এই সমস্ত ফানি ক্লিপের মধ্যেই প্রচারিত হয়েছে সেই সব ভিডিও যা নাড়া দিয়ে গেছে কোটি মানুষের। একটা জিনিস না বললেই নয় সবাই যে যার স্থানে আছে সেখান থেকে সবাই কিছু না কিছু হেল্প করেছে, কেউ অর্থ দিয়ে, কেউ সময় দিয়ে, কেউবা আবার ভলানটিয়ার ওয়ার্ক করে। সেই চিরাচরিত বাক্যটিকেই যেন তারা প্রতিষ্ঠিত করল "দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ"।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিশেষ ভাবে সহায়তা করেছে: যেমন: টিকে ম্যাক্স এর টি শার্ট, ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজের সমস্ত যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ, সেইন্সবারীর ১ মিলিয়ন সংগ্রহ, কিছু কিছু লোক ব্যাক্তিগত ভাবে ৪ মিলিয়ন সংগ্রহ, সব লিখে শেষ করা যাবেনা। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার তারা যাদের সাহায্য করছে তাদেরকে দানকারীরা হয়ত কোনদিন দেখেই নি, কোনদিন দেখবেও না, কিন্তু মানুষের পাশে দাড়াতে পেরেছে তাতেই যেন মনুষ্যত্ব। কেন জানিনা নিজের চোখের জলও ধরে রাখতে পারছি না যখন লিখছি।
যা আমরা পারিনি: আমাদের দেশে এত দুর্যোগ, সিডর, মঙ্গার পরেও পারিনি জাতিগত ভাবে একহতে। অনেকে পারিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কারন কেউ বলেনি কিংবা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়নি একটি টাকা কিভাবে আরেকজনের জীবনের আমূল পরিবর্তন এনে দিতে পারে।দেশের বাইরে আজ এই অনুষ্ঠান দেখে সিডর আক্রান্ত মানুষের কথা কেন যেন খুব বেশী আজ মনে পড়ছে।
যা সত্যিই আমাদের জন্য শিক্ষার: ফান্ড রাইজিং এ প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহন করার পরও রাজনীতি নিয়ে একটি কথাও না বলা। দেশের সবচেয়ে বাজে মাতাল সেলিব্রিটিরও নিস্বার্থ অংশগ্রহন, দেশের অনেক স্কুলের ফান্ড রাইজিং এ অংশগ্রহন।সবচেয়ে বড় কথা সবার একসাথে মিলিত হওয়া জাতিগতভাবে এ যেন "মানুষ মানুষের জন্য"।
অনুষ্ঠানটি পুরোটা হয়ত দেশ থেকে দেখা যাবে না তবে এর বিশেষ অংশসমূহ ইউটিউব থেকে দেখা সম্ভব, যার লিংক নিচে দেওয়া হল। ভাগ্য ভালো হলে পুরোটা হয়ত পাবেন RED NOSE DAY 2011 সার্চ করে। অনুষ্ঠানটি থেকে আমাদের অনেক শেখার আছে যা দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমার জীবনের দেখা সেরা একটা অনুষ্ঠান। আমরা বাংলাদেশীরা, এই দেশের প্রত্যেকটা মানুষের থেকে অনেক বেশী ইমোশনাল, অনেক বেশী আন্তরীক, কিন্তু কেহই সেটা বের করতে পারে না কারন দিনে দিনে আমরা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি। আর যেন এমন একটা দিনও দেশে না আসে যেখানে একজন বাংলাদেশীকে কয়েকটা টাকার অভাবে মারা যেতে হয়। আমরা যেন পারি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আমাদের ভাই বোনদের পাশে।
http://www.rednoseday.com/
http://www.youtube.com/user/BBC
View this link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!
রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।
আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!
এই... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ২
Almost at half distance, on flight CX830.
পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন