somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামী অভিবাদন ও পশ্চিমা অভিবাদন...

১৭ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সালাম
মানুষ একে অপরের কল্যাণ কামনা করে সে মুসলিম হোক আর অমুসলিম। সালাম কল্যাণেরই নমুনা।

ইসলামে সালামের গুরুত্ব কতটুকু?

[আর যখন তারা আপনার নিকট আসবে যারা আমার দিকনিদর্শন সমূহকে বিশ্বাস স্থাপন করে, তখন আপনি বলে দিনঃ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক- (সুরাঃ আল-আনআমঃ৫৪)]

আর তোমাদের জন্য যদি কেউ দোয়া করে, তাহলে তোমরাও তার জন্য দোয়া কর, তার চেয়ে উত্তম দোয়া কর অথবা তারই মত ফিরিয়ে বল। নিশ্চই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী। (সুরাঃ আন্ নিসাঃ ৮৬)

উপরোক্ত আয়াতসমূহ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় অভিবাদন বা সালাম-এর ক্ষেত্রে একজন মুসলমান যদি অপর মুসলমানকে আসসালামু আলাইকুম বলে, তাহলে অপরজন এর উত্তরে বলবে, ওয়ালাইকুম আস্সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ কিংবা কেউ যদি বলে আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ তাহলে অপরজন সালামের উত্তরে বলবে ওয়ালাইকুম আস্সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহে ওয়াবারকাতুহু। অর্থাৎ আল্লাহর দয়া, শান্তি, রহমত আপনার উপর নাযিল হোক। কিংবা কেউ যদি আস্সালামু আলাইকুম এর উত্তরে শুধু ওয়ালাইকুম আস্সালাম বলে তবে উত্তরটা একটু বেশি আবেগ দিয়ে বলা উচিত, হৃদয়ের গভীর থেকে বলা উচিত। অতএব সালাম এর উত্তর দিতে হবে অধিকতর উত্তম পন্থায় কিংবা অন্ততপক্ষে সমানভাবে।

তবে মুসলমানদের অনেকে আছেন যারা কোন প্রতিষ্ঠানের মালিক কিংবা উচ্চপদস্থ পদে আছেন, তাদেরকে যখন তাদের অধীনস্থরা সালাম দেয় তখন তারা ওয়ালাইকুম সালাম বলে, কিংবা শুধু মাথা নাড়ায়, সালামের কোন উত্তরই এরা দেয় না। এই মুসলিমরা মূলত আল্লাহ তায়ালার আদেশ অমান্য করছে।

পশ্চিমা অভিবাদন

বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন ধরণের অভিবাদন পদ্ধতি প্রচলিত আছে। এসব অভিবাদনের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত হলো ইংরেজী “এড়ড়ফ গড়ৎহরহম” আফ্রিকান ভাষায় এটাকে বলা হয়, খাইয়েমোরা আসাকাবানা, চীনা ভাষায় বলে চাও সুং।

এখন ধরা যাক আজকে বৃষ্টি দিন, একদম মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই অবস্থায় একজন লোক আরেকজনকে বললো “ এড়ড়ফ গড়ৎহরহম” বৃষ্টি হচ্ছে, রাস্তায় পানি জমে গিয়েছে আর লোকটি উত্ততে বলছে শুভ সকাল। এখানে সকালটা শুভ বলা মানে কী?

আবার ধরা যাক কোন ইংলিশ স্কুলে টিচার সকালে স্কুলে আসার আগে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে বাসা থেকে বেরিয়েছেন। হয়তো স্কুলে আসতে আসতে গালাগালি দিচ্ছেন আর চিন্তা করছেন স্ত্রীর সাথে আর জীবনেও কথা বলবো না। কিন্তু তিনি স্কুলে এসে ক্লাসে ঢুকার সাথে সাথেই ছাত্র/ছাত্রীরা সবাই মিলে বলে উঠবে “ এড়ড়ফ গড়ৎহরহম ঝরৎ”- এই শিক্ষকের সকালটা কি আসলেই শুভ ছিল?

অভিবাদনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অভিবাদন হল ইসলামি রীতিতে অভিবাদন আস্সালামু আলাইকুম। হতে পারে সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছে কিংবা স্ত্রীর সাথে বা বন্ধুর সাথে ঝগড়া হয়েছে। এরপরও আস্সালামু আলাইকুম অর্থ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক- এটাই একমাত্র সঠিক অভিবাদন পদ্ধতি।

আরেকটি অভিবাদন পদ্ধতি প্রচলিত আছে ঐবষষড়। ঙীভড়ৎফ উরপঃরড়হধৎু -তে এই শব্দটার অর্থ দেয়া হয়েছে অনানুষ্ঠানিক অভিবাদন হিসেবে (ওহভড়ৎসধষ এৎববঃরহমং)। আরেকটা অর্থ বলা হয়েছে টেলিফোনে যেটা দিয়ে কথা শুরা করা হয়। এই শব্দটা প্রথম প্রচলন করে বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল, যিনি টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায়, একবার গ্রাহাম বেল ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন, আর এমন সময় টেলিফোন বেজে উঠল। তখন কথাবার্তা শুরু করার জন্য তিনি বলেছিলেন ঐবষষড়, যাতে অন্যপাশের লোক তার কথা শুনে কথা বলতে পারে, আর তিনিও তাড়াতাড়ি বের হতে পারেন। এই ঐবষষড় বলার প্রচলনটা শুরু হয়েছে তখন থেকে, আর এখন এটি প্রচলিত যদিও এর সঠিক অর্থ নেই।

অবাক না হয়ে পারা যায় না যখন দেখা যায় পশ্চিমা বিশ্বের লোকেরা যীশুখ্রিষ্টের অভিবাদন ব্যবহার না করে এই ঐবষষড় শব্দটা ব্যবহার করেন। বাইবেলের নিউটেষ্টামেন্ট এ গসপেল অব লুক-এর ২৪নং অধ্যায়ের ৩৬নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-

সেই তথাকথিত ক্রসিফিকশান- এর শিষ্যদের সাথে দেখা করতে যীশুখ্রিষ্ট উপরের ঘরে গেলেন। তিনি তখন তাদেরকে অভিবাদন জানালেন সালামালাইকুম। যদি হিব্রু থেকে আরবি অনুবাদ করা হয় এর অর্থ দাঁড়ায় আস্সালামু আলাইকুম অর্থাৎ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় লোকজনকে আগে সালাম জানাতেন। নবীজির অনেক সাহাবী অনেক বার চেষ্টা করেছেন নবীজিকে আগে সালাম দিতে কিন্তু কখনোই পারেননি।

তাহলে আমরা এত সুন্দর অভিবাদন থাকতে পশ্চিমা অভিবাদন কনে ব্যবহার করবো?
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×