একদা এক বালিকা এর মোবাইল এ একটি মেসেজ এর আগমন ঘটিল।
“টু টু” (ইহা মেসেজ টোন)
উঠতি বয়সী বালিকা এর হাতে মোবাইল পাইয়া যে পরিমান বিগরানো দরকার সে পরিমান না বিগরাইলেও বিগরাইছে যে তা সত্যি।
বলাই বাহুল্য মেসেজটি এসেছে অপরিচিত নাম্বার থেকে। ঐদিন আবার বালিকা এর জন্মদিন। বালিকা এর বয়স কত হইল তা আমার বলা অথবা আপনাদের জিজ্ঞাসা কোনোটাই ঠিক হবে না।শুনেছি এইগুলা জিজ্ঞাসা অভদ্রতা।
শুনেছি জন্মদিনে রাজা-বাদশাহ রা হীরা মানিক মনি মুক্তা দিয়া সবাইকে ভাসাইয়া দিতেন।আর এটি তো একটি মাত্র মেসেজ এর রিপ্লাই।বালিকাও মোবাইল নিয়া মেসেজ রিপ্লাই করিয়া বসিল।
অতঃপর বালিকা এর মোবাইল বাজিয়া উঠিল।
“ক্রিং ক্রিং” (কি রিংটোন তা বলতে পারছি না।অডিও সুবিধা নেই।তাই ক্রিং ক্রিং ই ভরসা)
বালিকা জানতে পারিল একটি বালক এক বিচিত্র উপায় এ তার নাম্বার পাইয়াছে!!! এবং সেই এক জিকির “আমি আপনার বন্ধু হতে চাই (এবং আপনাকে আমার বান্ধুবি বানাইতে চাই...এইটা উহ্য থাকিল । )”
বালক বালিকাকে তাহার নানান ভুগিচুগি গপ মাইরা পটাইবার আপ্রান চেষ্টা করিতে লাগল।বালিকা আবার মানুষের কাজকর্ম দেখিতে ভালোবাসে সে আর কিছু বলে না।শুনিতে থাকিল।
বালক বালিকা এর বিদ্ঘুটে আওয়াজকে বলে যে “আহা কি সুন্দর!!”।হাসিকে তুলনা করে নদীর সাথে।“তোমার হাসিটা নদীর মত”।
বালকের আবার বাইক আছে।বালিকাকে লোভ দেখানোর চেষ্টা।
তাও বালিকা এর কোনো সাড়াশব্দ নাই।পটার কোনো ভাব দেখা যাচ্ছে না।( ধুরু...এইটা কোনো কথা। )
অবশেষে বালক আরেক কাল্পনিক চরিত্র গল্পের প্রয়োজনে নিয়ে আসিলো।বালক হঠাৎ বলে যে,তাহাকে তাহার কোন এক পাতায় পাতায় বোন প্রোপোজ করিয়া বসিয়া আছে। :#> (বুঝ...ছেমরি বুঝ।উচিৎ শিক্ষা হইছে এখন।তুই কি মনে করসোছ...পোলা বইসা থাকবো? )
কিন্তু হায় হায় !!! বালিকা এর ভাবান্তর নাই। ( এ কি মানুষ !!! )
বালিকা তাহাকে প্রেম সংক্রান্ত নানান টিপস দিতে থাকিল।এবং লাভ গুরু এর আসনে বসিয়া পড়িল।
অবশেষে বালক বুঝিল লাভ নাই।বাংলা লাভটাও নাই ইংলিশ টা তো নাই ই।
অতঃপর যেমনে অই কাল্পনিক মাইয়ারে আনছে তেমনেই ঐটারে বিদায় দিতে হইব।দিবো তাও ঠেংগায় বিদায়। তাই বালক তাহার কাল্পনিক চরিত্র রে আরেক ছেলে কাল্পনিক চরিত্র এর সাথে রেস্টুরেন্টে দেখিয়া ফেলিল।ঐ ছেলে বলে ঐ মেয়েরে মুখে তুইলা খাওয়ায় দিতেছিল। (কইছিলাম না?ঠেংগায় বিদায় করবো।)বালক হাটিয়া যাচ্ছিল।অই মেয়ে তাহাকে ডাকিয়া বলে দেখো এইটাও আমার বয়ফ্রেণ্ড।(বেয়াদুপ্পি এর কি কূনু সীমাই নাই )
অবশেষে বালক আবার বালিকা এর কাছে ভগ্ন হৃদয়ে ফিরিয়া আসিল।(শত হইলেও বালিকা হৃদয়।এইবার চান্স নিশ্চিত।খিক খিক। )
কিন্তু এ কি??!!!! বালিকার এইবারও কোনো ভাবান্তর নাই।(এখনই একে পাষাণী বলে বইসেন না।কাহিনি আভি বাকি হেয় মেরি বস )
বালক হঠাৎ বলিলো তাহার জীবন প্রদিপ নিভু নিভু।মৃত্যু কলিং বেল টিপতেছে।বালকের হইছে “ব্রেইন ক্যান্সার” ( ডেং ডেং ডেং......মনিটর তিনবার কাইপা উঠবো।হিন্দি সিরিয়াল দেখলে বুঝবেন আশা রাখি। )
জীবনের আশা শতকরা ১-২ ভাগ। বালক প্রায়ই বলে যে আমি মরিয়া গেলে কি হবে।আমি তোমার জন্য একটা জিনিস কিনছি।আমাকে দেখতে চাও নি।আমার লাশটা অন্তত দেখতে এস।
বালিকা বলে ,“হুম”।(হায়রে পাষানী...এখন তারে পাষাণী বলাই যায়)
“দেখা কি করবেই না ??!!!!!!!!!!!!!!!!!!”
যেখানে ব্রেইন ক্যান্সারের ১ মাস আগে কেও কথা বলে না।দারুন যন্ত্রনায় ভুগে।কিন্তু বালক সকল বৈজ্ঞানিক সূত্র ভুল প্রমানিত করিয়া দিব্যি ঘন্টার পর ঘন্টা আলাপ চালাইয়া যাইতে লাগল। এরেই কয় ভালুবাসা :#> । বালক মনে হয় খুব বাংলা সিনেমা দেখে তাই অসুখ হিসাবে ব্রেইন অর ব্লাড ক্যান্সার বাছিয়া নিছে।এইগুলা তো অভিজাত রোগ-বালাই।যাই হোক মূল ঘটনায় ফিরে যাই।
বালক দেখলো বালিকা এর কোনো ভাবান্তর নাই।(আরে তুমি মিয়া চলো ডালে ডালে।বালিকা চলে পাতায় পাতায়। খেকজ......)
বালক ভাবলো না না,জীবনের আয়ু আরেকটু বাড়াইতে হবে।জীবনের আশা ২% হইতে লাফ দিয়া ৫০% হইয়া গেলো।সবাই দেও তালিয়া বালক বলে আমরা একদিন দেখা করিব।
যেখানে এক মাস পর বালক এর পটল তুলার কথা। বালক তো মরলই না।দিব্যি তরতাজা হইয়া যাইতে লাগিল।তারপর হঠাৎ দীর্ঘ বিরতি।
এক বছর পর বালিকা এর মোবাইলে আবার কল আসিল।
বালক বলে চিনতে পারছ কি?বালিকা কহিল , “তুমি মরো নাই? কোন ডাক্তার দেখাইছিলা?পরিচয় করায় দিও।”
অবশেষে বালক এর হৃদয় চূর্ণ বিচূর্ণ হইয়া গেলো।হোক না বালক কিছু মিথ্যা বলিয়াছে।তাতে কি?আমরা সবাই জানি “অল ইস ফেয়ার ইন লাভ এন্ড ওয়ার”।কিন্তু আমরা সবাই তা জানলেও ঐ পাষাণী বালিকা তা জানিত না।
অবশেষে বালক ফুন রাখিয়া দিল। আমার কাহিনীও শেষ হইয়া গেলো।কাহিনী কিন্তু ৯৯% সত্য।
সাথে ১% ভেজাল।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৮:০৮