somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পায়ে পায়ে বাড়ি খাওয়া থিউরি ও একজন নূরুল আলম ভাই

১৪ ই মার্চ, ২০১১ ভোর ৪:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রায়ই ভাবিত হই। দুজনে মিলে আলোচনা করি।

এতদিন সেই অবসর ছিল না। ঢাকা শহরে বেচে থাকার কামড়া-কামড়ি লড়াইয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম যে দেশ নিয়ে ভাববার সময় বা প্রয়োজন কোথায়? নিজে বাচলে বাপের নাম।

কিন্তু এখন বিদেশে চাকরি করি। সংসার খরচ বাদে ভালই টাকা জমছে। একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের আশা করতে পারি। তাই এখন, এই অবসরে, দেশ থেকে অনেক দুরে বসে আমরা দেশের শ্রীহীন অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। বাংলাদেশের মানুষ আজ দুই দল গুন্ডার হাতে জিম্মি। বেশীরভাগ মানুষ চোর আর বাটপাড়। মানুষ নিদারুন দু:খ, কষ্টের মধ্যে আছে।

আমরা যেখানে চাকরি করি সেখানে আরও অনেক দেশের মানুষ কাজ করে। বাংলাদেশী ছাড়াও আছে ভারতীয়, পাকিস্তানী, মিশরীয়, সিরিয়, সুদানি, জর্ডানি, আমেরিকান, ইংরেজ, অস্ট্রেলীয়, নিউজিল্যান্ডি, কানাডিয় ইত্যাদি। সব দেশের মানুষের সাথেই মোটামুটি মেশা হয়েছে এই ৩ বছরের চাকুরি জীবনে।

তো আমি একটি গল্প বললাম আমার বন্ধু নূরুল আলম ভাই কে।

ধরুন আমার আর আপনার যোগ্যতা সমান, কিন্তু আপনি আমার চেয়ে বেশী বেতন পান।

একজন ভারতীয় হলে এই পরিস্থিতিতে বসকে বলবে, "আমার বেতনটা কি একটু বাড়ানো যায়? আমার মনে হয় আমি আরও বেশী বেতন পাওয়ার যোগ্যতা রাখি"। বস তখন চিন্তা করবে, "আরে, তাই তো! আমি তো একই যোগ্যতার আর এক জন কে বেশী বেতন দেই। তবে একেও দেওয়া উচিত।"

একজন পাকিস্তানী হলে এই পরিস্থিতিতে বসকে বলবে, "আমার বেতনটা কি একটু বাড়ানো যায়? আমার কাছে পাকা খবর আছে যে আপনি কাউকে কাউকে বেশী বেতন দিচ্ছেন। কাজেই আমাকেও বেশী বেতন দিন।"

আর একজন বাংলাদেশী হলে এই পরিস্থিতিতে বলবে, "আপনি নূরুল আলমকে কেন বেশী বেতন দিলেন? এখন আমাকেও দিতে হবে, নাহলে হবে না।"

এই হল পার্থক্য। বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা তারা একতা বদ্ধ নয়। এই প্রসংগে নূরুল আলম ভাই তার বিখ্যাত "পায়ে পায়ে বাড়ি খাওয়া" থিউরি উপস্থাপন করলেন। উনার ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ এগুতে পারছে না কারন আমরা পায়ে পায়ে বাড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছি।

কিভাবে? মূলতে নিম্নলিখিত কারনে আমরা একতাবদ্ধ হতে পারছি না:

১) আমরা অন্যের ভাল দেখতে পারি না। নিজেও "উত্তম" হতে পারি না, বা চাই না, অন্যকেও "উত্তম" দেখতে পারি না। আমাদের বিচিএ গাএদাহ হয় অন্যের সাফল্যে।

২) আমাদের "ইগো" আকাশস্পর্শী। "আমি কি হনু রে" - এই ভাবনায় ও ভাবে আমরা এতই আচ্ছন্ন থাকি যে অন্যকে তুচ্ছ করবার একটা নেশা আমাদের পেয়ে বসে। নিজেই নিজেকে নোবেল প্রাইজ দিয়ে বসে থাকি। (সম্ভবত সে কারনেই যদি অন্য কোনো নোবেই প্রাইজ পাওয়া ব্যাক্তির কোনো দোষ খুজে পাওয়া যায়, আমরা তৎক্ষনাৎ মহা ধুমধামের সাথে তাকে টেনে নিচে নামাতে উদ্যত হই।) মানুষকে ছোট করার মধ্যেই যে আমাদের আনন্দ!

৩) আমরা রোজার সময় মহা ধুমধামের সাথে রোজা পালন করি, ঈদের নামাজ পড়ি, জুম্মার নামাজের দিন মসজিদের বাইরেও লোক ধরে না, কিন্তু ধর্মের আসল বই (কোরআন ও হাদিস) পড়ি না, বা পড়লেও মানি না। আমরা নিজেকে এতই স্মার্ট ভাবি যে মনে করি সৃষ্টিকর্তাকেও ফাকি দেওয়া যাবে।

ফলাফল? "পায়ে পায়ে বাড়ি খেয়ে" পড়ে থাকা। আমরা নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশ করে চলেছি। প্রতি ক্ষনে। প্রতিটি কাজে।

তবে উপায়?

রাত সাড়ে বারটা বেজে গিয়েছিল। বললাম, "নূরুল আলম ভাই, আজ তবে উঠি। সমস্যা তো বের করা গেল। পরেরদিন আমরা সমাধান নিয়ে আলোচনা করবো।"

সোজা বাসায় ফিরে এলাম। মনে মনে ভাবছি, সমস্যার যদি সঠিক নির্নয় করতে পেরে থাকি, সমাধান নিশ্চয়ই পাব।

ধন্যবাদ পড়ার জন্য।












সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১১ ভোর ৪:৩১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×