বন্ধুত্বের বিবর্তন .........বয়সের সাথে সাথে
লেখার সারমর্ম টি অনেকের কাছে উল্টো লাগতে পারে ...
মুল কথায় আসি >>
আমাদের জীবনের যে কয়টি উপজীব্য আমি তো সহজ ভাবে বলব যে, যে কয়টি সুখানুভূতির আশায় আমরা বেঁচে থাকি শেষ দিক থেকে ভাবলে জীবনের শেষ অংশে এসে আমরা জীবনের যে কটি স্মৃতি ফিরে পাই বা পেতে চাই তাদের মধ্যে “বন্ধুত্ব” মহা দাপটিও একটি সম্পর্কের নাম।
বন্ধুত্ব কি ? কত প্রকার ও কি কি ? এগুলা আমার এই লেখার বিষয় না। তাই এগুলা এড়িয়ে গেলাম।
ভাবতে খারাপ লাগলেও এই বন্ধুত্বই অনাকাঙ্খিত ভাবে ক্ষণে ক্ষণে তার রুপ পাল্টায়...
এই পরিবর্তন গুলা জীবনের ধাপে ধাপে কিভাবে পরিবর্তিত হয় তা গল্পের মাধ্যমে লেখার/মনে করিয়ে দেবার চেষ্টা করলাম...
প্রাইমারী ধাপ এ বন্ধুত্ব >>
এটি জীবনের সব ধাপের শ্রেষ্ঠ ধাপ , তাই বন্ধুত্বের সম্পর্কের ধাপেও এটি নিষ্পাপ, নিঃস্বার্থ। এই ধাপ এ আমরা ভালবাসা, উদারতা বিলিয়ে দেয় কারণ তখন আমরা সভ্যতার ছোঁয়ার অনেক বাহিরে থাকি তাই অনেক সহজ সরল মনোভাব প্রকাশ করি।
শান্ত ও পিয়াল দুই বন্ধু।
স্কুল থেকে পিয়াল বাড়িতে যাবার সময় দেখল যে শান্ত মাঠে ক্রিকেট খেলছে। পিয়াল সাথে সাথে বাড়ি থেকে তার নতুন বল নিয়ে এসে শান্ত কে দিয়ে বলল যে, পুরাতন বল ফেলে দে, আমি আব্বুর কাছ থেকে কালকে নতুন বল কিনে নিয়েছি তোর সাথে খেলব বলে।
স্কুল এ এক ব্রেঞ্চ এ বসা, এক সাথে টিফিন খাওয়া, একসাথে আসা যাওয়া আরও কত মধুর কাজ।
হাই স্কুল ধাপ >>
এটিও বন্ধুত্বের জন্য মণে রাখার মত একটি ধাপ। (যদিও বা এই ধাপ এ কিছুটা স্বার্থ ধুকে পরে)
শান্ত যদি স্কুল/ পাড়ার ক্রিকেট টিম এ চান্স না পায় তাহলে পিয়াল চান্স পাবার পরেও খেলতে চায় না ।( ফাইনাল ম্যাচ পর্যন্ত)
বিড়ি খাওয়া ও চটি পরার মত সিক্রেট ও বিপদজনক জিনিসও একে অন্যকে শেয়ার না করে থাকতে পারে না।
কলেজ ধাপ>>
এখানেই প্রথমবারের মত বন্ধুত্বের চেয়ে যে স্বার্থপরতা বড় সেটি প্রকাশ পায়।
দুইজনের ই যদি একি মেয়ের প্রতি দুর্বলতা থাকে। শান্ত সে মেয়ের কাছে গিয়ে বলে যে পিয়াল তো ভাল ছেলে না। ও সারাদিন লেখাপড়া করে না। শুনছি নেশা করে।
দুইজনই যখন মিউজিক শেখার চিন্তা করে। গীটার মেয়েদের প্রিয় জানতে পেরে পিয়াল গীটার কেনে ও শান্তকে বলে যে তুই ড্রাম শেখ ওইটা দিয়ে হাই লাইট করা যায়।
লিখন স্যার এর সাজেশন কমন পরে/পরবে জেনেও শান্ত নিজে ফলো করে কিন্তু পিয়াল কে বলে যে বন্ধু সবায় বলাবলি করতেছে যে এবার লিখন স্যার এর সাজেশন কমন পরবে না গতবার উনার তা পরছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় ধাপ>>
প্রথমে ২ জন দুই রাজনৈতিক দলের চ্যালা হয়ে যায়। ( বিভাজন শুরু)
মেয়েলি ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া থেকে শুরু করে কখনও মারা মারি পর্যন্ত গরায়।
শুক্রবারের দিন টা একসাথেয় কাটায়।
শনিবার থেকে যেমন ছিল তেমন।
কর্ম জীবনের ধাপ >>
শুরু হয় ব্যস্ততা।
লক্ষে পৌঁছানোর দৌড়।
কখনও যদি একি অফিসে চাকুরী হয় তাহলে স্যার এর কাছে একে অন্যের চেয়ে বেশী প্রিয় প্রমাণ করার চেষ্টায় লেগে থাকে।
কলিগদের মাঝে অন্যের পুরনো দোষ ত্রুটি শেয়ার করে।
এর পরে সংসার এর মাঝে ডুবে যায়... বউ বাচ্চা নিয়ে
যদি কখনও দেখাও হয় সত্যি হোক মিথ্যে হোক ব্যস্ততার অজুহাত দেখায়।
এর পর থেকে সংসার সংসার আর সংসার......... অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সময় কই...
অবসর ধাপ>>
অবসরের আগে ও পরে ভাবুক হয়ে উঠে।
সংসার, বউ, বাচ্চা সব অনর্থক মনে হয়।
ভাল লাগেনা কিছুই।
শুধু বন্ধুর সাথে কাটানো পুরনো মধুর (তখন ভাল খারাপ সব ই মধুর মনে হয়) স্মৃতি মনে পরে আর মণ টা ব্যথায় ভরে ওঠে বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য।
এর পর......
এর পর যদি ভাগ্য ভাল হয় তবে একে অন্যের খোঁজ পায়।
পেলেও দেখে একজন হয়ত মারা গেছে।
যদিও বেঁচে থাকে তাহলে কোন একজন হয়ত সংসার এর যুদ্ধে হেরে গিয়ে ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে আছে।
আমার এত কথা লেখার উদ্দেশ্য ... আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমার বন্ধু গুলা সবায় দিন দিন স্বার্থপর হয়ে একে অন্যের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে.........
যাও যত পার...... কিন্তু মনে রেখ...... “ চোখের আড়াল হলেই কিন্তু মনের আড়াল হয় না” ...... মনের মধ্যে ছিলাম, আছি বেঁচে থাকলে থাকব।
বানান নিয়ে কিছু না বললে খুশী হব...... কারণ আমি এই লাইন এর লোক না।
তবে লেখার মান নিয়ে বলতে পারেন... ভবিষ্যতে যদি কখনও লিখি তাহলে সেই সমালোচনা কাজে দিবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৪০