somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি

১০ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
জাতীয় নারী উন্নযন নীতিমালা


(চারপাশে যখন তোলপাড় চলছে "নারী উন্নযন নীতিমালা" নিয়ে আমারও জানা ছিল না কি আছে এই নীতিমালায়। আর কতটুকুইবা ইসলাম ধর্মের সাথে বৈপরিত্য তা খুজতে গিয়েই দেখতে হলো মুসলিম পারিবারিক আইন, সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইন গুলো। আমি আসলে জানিনা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে, আর কতটুকুই বা লাভবান হবেন আমাদের নারীরা। গতকাল সকালে অফিসে আসার পথে বাসে উঠার সময় এক ভদ্র লোকের আচরণ দেখে অবাক হলাম। ..."একজন ভদ্র মহিলাকে তিনি বলছেন-এখনতো আপনাদের অধিকার ফিরা পাইছেন, একটু ঠেলাঠেলি করে উঠেন, সমান অধিকার।"
এই যদি হয় বাহিরের অবস্থা, তাহলে ঘরের ভিতরে কি হবে!!
নারী উন্নযন নীতিমালা সম্পূর্ণ জানার জন্য সামহোয়্যারইন ব্লগের পাঠকদরে জন্য খসড়াটি তুলে ধরছি। ) -হাসান ইকবাল


পটভূমি
বাংলাদেশের নারী যুগ যুগ ধরে শোষিত অবহেলিত হয়ে আসছে। পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থায় ধর্মীয় গোঁড়ামী, সামাজিক কুসংস্কার, কুপমন্ডুকতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বেড়াজালে তাকে সর্বদা রাখা হয়েছে অবদমিত। তার মেধা শ্রমশক্তিকে শুধুমাত্র সাংসারিক কাজেই ব্যয় করা হয়েছে। সমাজ ও দেশ গঠন কাজে তাকে কখনও সম্পৃক্ত করা হয়নি। নারী আন্দোলনের অগ্রদূত মহীয়সী বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের আহবান জানিয়ে বলেছিলেন তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, তাহারা নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক।” তাঁর এ আহ্বানে নারীর অধিকার অর্জনের পন্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এ দেশের নারী জাগরণে সাড়া পড়েছিল সাধারনতঃ শিক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে। এছাড়া, ব্রটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নারী তার অধিকার আদায়ে সচেতন হয়ে ওঠে। পাকিস্তান আমলে ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।

১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযদ্ধের পর বাংলাদেশ দীর্ঘ প্রত্যাশিত স্বাধীনতা লাভ করে। এ স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি নারীও অসামান্য অবদান রাখে। যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াও বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান এবং স্বামী ও সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়ে আমাদের মায়েরা এক বিশাল দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের নিদর্শন রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর হাতে আমাদের লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই জঘন্য অপরাধ কখনই ভুলবার নয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে নারী আত্মনির্ভরশীল হতে সচেতন হয়ে ওঠে। শিক্ষা গ্রহণের, কর্মসংস্থানের প্রত্যাশায় নারী সমাজের মাঝে বিপুল সাড়া জাগে। গ্রামে নিরক্ষর নারী সমাজের মাঝেও কাজের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হবার আগ্রহ জাগে। জাতীয় উৎপাদনে নারীর অংশগ্রহণ আবশ্যক হয়ে ওঠে। নারী উন্নয়নে সরকারী ও বেসরকারীভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
১৯৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের শাহাদাৎ বরণের পর বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসন জেঁকে বসে। গত ২১ বছর যাবৎ দেশে গণতন্ত্র না থাকায় জনগণের দু:খ দারিদ্র্য যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি নারীর উন্নয়নের বিষয়টিও কার্যতঃ অবহেলিত ছিল। দেশের প্রচলিত আইন কানুনকে উপেক্ষা করে নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি অবহেলার মাত্রা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য এ সময়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী সংগঠনগুলির আন্দোলনের ভূমিকাও ছিল অগ্রণী। বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলিও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি নারী সংগঠনগুলিও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে নিজেদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁরা সচেতন হয়ে ওঠে। এতে করে দেশে নারী উন্নয়নে এক বিরাট সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান সরকার দেশের বৃহত্তর নারী সমাজের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটিয়ে
তাদেরকে পশ্চাৎপদ অবস্থা থেকে তুলে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে নারীর সার্বিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে.


নারীর মানবাধিকার ও সংবিধান
১৯৭২ সনে নবগঠিত রাষ্ট্র বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় রচিত এ সংবিধানে নারীর মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধানে ২৭ ধারায় উল্লেখ আছে যে, “সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান ও আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।” ২৮(১) ধারায় রয়েছে, কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না”। ২৮(২) ধারায় আছে, “রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করিবেন”। ২৮(৩)-এ আছে,“কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী-পুরুষভেদ বা বিশ্রামের কারণে জনসাধারনের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না”। ২৮(৪)-এ উল্লেখ আছে যে,“নারী বা শিশুদের অনূকুলে কিংবা নাগরিকদের কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না”। ২৯(১) এ রয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে’ সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে’। ২৯(২) এ আছে “ কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মের নিয়োগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না”। ৬৫ (৩) ধারা নারীর জন্য জাতীয় সংসদে আসন সংরক্ষিত হয়েছে এবং ধারার অধীনে স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান সমূহে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিশ্ব প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সত্তর দশকের প্রথম ভাগ থেকেই তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার নারী উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ১৯৭৫ সনে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্ব নারী সম্মেলনে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে দেশের বাইরে নারী উন্নয়নের যে আন্দোলন চলছিল তার মূল স্রোতধারায় বাংলাদেশ যুক্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে নারী সমাজ উন্নয়নের যে অবস্থানে রয়েছে তার ভিত্তি এই উদ্যোগের ফলে রচিত হয়। জাতিসংঘ নারীর রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালকে ‘নারী বর্ষ হিসাবে ঘোষনা করে। ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্ব নারী সম্মেলনে ১৯৭৬-১৯৮৫ সালকে নারী দশক হিসেবে ঘোষনা করা হয়। নারী দশকের মূল লক্ষ্য ছিল সমতা, উন্নয়ন ও শান্তি। ১৯৮০ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় নারী সম্মেলন। এতে ১৯৭৬-৮৫ পর্বের নারী দশকের প্রথম পাঁচ বছরের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয় এবং নারী দশকের লক্ষ্যের আওতায় আরও তিনটি লক্ষ্য-শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান চিহ্নিত হয়। ১৯৮৫ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবীতে তৃতীয় বিশ্ব নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং নারী উন্নয়নের জন্য সমতা, উন্নয়ন ও শান্তির ভিত্তিতে অগ্রমূখী কৌশল গৃহীত হয়। চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের প্রস্তুতি পর্বে ১৯৯৪ সালে জাকার্তায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় নারী উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে জাকার্তা ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়। এ ঘোষনায় বলা হয় ক্ষমতা বন্টন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের মাঝে তীব্র অসমতা বিদ্যমান। এই অসমতা ও সীমাবদ্ধতা নিরসনের উদ্দেশ্যে
সরকারসমূহকে উদ্যোগ নিতে তাগিদ দেয়া হয়। কমনওয়েলথ ১৯৯৫ সালে জেন্ডার ও উন্নয়ন কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। সার্ক দেশসমূহও নারী উন্নয়নের জন্য কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ১৯৯৫ সালের ৪-১৫ সেপ্টেম্বর বেইজিং-এর চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনে বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়। বেইজিং কর্মপরিকল্পনা নারী উন্নয়নে ১২টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে। ক্ষেত্রগুলো হলো-নারীর ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য; শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অসম সুযোগ; স্বাস্থ্য সেবার অসম সুযোগ; নারী নির্যাতন; সশস্ত্র সংঘর্ষের শিকার নারী; অর্থনৈতিক সম্পদে নারীর সীমিত অধিকার; সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ক্ষমতায় অংশগ্রহণে অসমতা; নারী উন্নয়নে অপর্যাপ্ত প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো; নারীর মানবাধিকার লংঘন; গণমাধ্যমে নারীর নেতিবাচক প্রতিফলন এবং অপ্রতুল অংশগ্রহণ; পরিবেশ সংরক্ষণে ও প্রাকৃতিক সম্পদে নারীর সীমিত অধিকার এবং মেয়ে শিশুর প্রতি বৈষম্য। সকল আন্তর্জাতিক ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ।
১৯৯২ সালে রিও-ডিজেনেরিওতে অনুষ্ঠিত ধরিত্রী সম্মেলনে গৃহীত পরিবেশ ও উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা, ১৯৯৩ সালে ভিয়েতনাম মানবাধিকার ঘোষণা, ১৯৯৪ সালে কায়রোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা এবং ১৯৯৫ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব সামাজিক শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত কর্মপরিকল্পনায় নারী ও শিশু উন্নয়ন ও তাদের অধিকারের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এ সকল সনদ ও কর্মপরিকল্পনায় বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর এবং এগুলোর বাস্তবায়নে অঙ্গীকার করেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে গৃহীত শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকৃত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ সনদ
রাষ্ট্র, অর্থনীতি, পরিবার ও সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ডিসেম্বর, ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) গৃহীত হয় এবং ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১ সালে কার্যকর হয়। নারীর জন্য আন্তর্জাতিক বিল অব রাইটস বলে চিহ্নিত এ দলিল নারী অধিকার সংরক্ষণের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ মানদন্ড বলে বিবেচিত। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ তিনটি ধারায় [২, ১৩(ক), ১৬ (ক), ও (চ)] সংরক্ষণসহ এ সনদ অনুস্বাক্ষর করে।

বাংলাদেশে নারীর অবস্থা
উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নারী
প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-৭৮) স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ, ছিন্নমূল নারীর পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কর্মসূচী গৃহীত হয়। নারী শিক্ষা, স্বস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন আর্থিক স্বাবলম্বীতা অর্জনের জন্য প্রথমবারের মত নারী উন্নয়ন বিষয়টি গুরুত্ব পায় ও নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশী সাহায্যের মাধ্যমে কর্মসূচী গ্রহণ ও অর্থ বরাদ্দ করা হয়। ১৯৭২ সনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক-বাহিনীর হাতে সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বীরাঙ্গনা উপাধিতে ভূষিত করেন। যে সব পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর অত্যাচারের কবল থেকে মুক্ত করা গিয়েছিল তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছিল। শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষতঃ শহীদের স্ত্রী ও কন্যাদের জন্য চাকুরী ও ভাতার ব্যবস্থা করেছিল বঙ্গবন্ধুর সরকার। বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সনে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করে। এই বোর্ডের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম ছিল: (ক) স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্যাতিত নারী ও শিশুর সঠিক তথ্য আহরণের জন্য জরিপকাজ পরিচালনা করা এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা; (খ) যুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা; (গ) বীরঙ্গনা নারী সহ যেসব পরিবারের উপার্জনক্ষম পুরুষ মুক্তিযুদ্ধে নিহত হন সেই সমস্ত পরিবারের কর্মক্ষম নারীদের চাকুরী এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা। এছাড়াও, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রচেষ্টায় দশজন বীরাঙ্গনা নারীর বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে অধিকাংশ মেয়ের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

নারী পুনর্বাসন বোর্ডের দায়িত্ব ও কার্যপরিধি ক্রমশ: বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৭৪ সনে এই বোর্ডকে বৃহত্তর কলেবরে পুনর্গঠিত করে সংসদের একটি এ্যাক্ট-এর মাধ্যমে নারী পুনর্বাসন ও কল্যাণ ফাউন্ডেশনে রূপান্তরিত করা হয়। ফাউন্ডেশনের বহুবিধ কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম ছিল: ১) দেশের সকল জেলা ও মহকুমায় নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে ভৌত অবকাঠামো গড়ে তোলা; (২) নারীর ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা; (৩) নারীকে উৎপাদনমূখী কর্মকান্ডে নিয়োজিত করে প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা; (৪) উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ কাজে নিয়োজিত নারীর জন্য দিবাযত্ন সুবিধা প্রদান করা; (৫) যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের চিকিৎসা প্রদান করা; এবং (৬) মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীর ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বৃত্তিপ্রথা চালু করা যা বর্তমানে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় দুঃস্থ মহিলা ও শিশু কল্যাণ তহবিল” নামে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নারীদের অর্থকরী কাজে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে সর্বপ্রথম আন্তঃখাত উদ্যোগ গৃহীত হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নারীদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী (গ্রামীণ মহিলা ক্লাব) চালু করে। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। পরবর্তীতে এই কর্মসূচী বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নারী সমবায় কর্মসূচীতে রূপান্তরিত হয়। সাভারে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ৩৩ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত “গ্রামীণ মহিলাদের জন্য কৃষিভিত্তিক কর্মসূচীর” কাজও শুরু হয় ১৯৭৩ সনে। দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৮-১৯৮০) ও নারী কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও (১৯৮৫-৯০) একই কর্মসূচী গৃহীত হয়। চতুর্থ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৯০-৯৫) নারী উন্নয়নকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায়
সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে আন্তঃখাত উদ্যোগ গৃহীত হয়। এ পরিকল্পনায় মূল উদ্দেশ্যগুলোর প্রধান কয়েকটি হলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প-বাণিজ্য, সেবা ও অন্যান্য খাতে নারীর বর্ধিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, দারিদ্র্য দূর করা, দক্ষতা বৃদ্ধি করা, স্ব-কর্মসংস্থান ও ঋণ সুবিধা সমপ্রসারণ করা, জেন্ডার সম্পর্কীয় সচেতনতা বৃদ্ধি করা, এবং নারীর জন্য সহায়ক সুবিধা সমপ্রসারণ যথা: হোস্টেল, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, আইন সহায়তা প্রদান উল্লেখযোগ্য।

ত্রিবার্ষিক আবর্তক পরিকল্পনা ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে স্ব-কর্মসংস্থান, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, অনানুষ্ঠানিক ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, নারী সহায়তা কর্মসূচী, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল স্থাপন, দু:স্থ নারীর জন্য খাদ্য-সহায়তা কর্মসূচী, খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা কর্মসূচী, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা, পল্লী অঞ্চলে মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষা, স্বাস্থসেবা, টিকাদান কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ সকল কর্মসূচী নারী উন্নয়ন ও নারী পুরুষের সমতা অর্জনের লক্ষ্যে সামগ্রিক প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল এবং নারী উন্নয়ন ও সমতার যথাযথ প্রেক্ষিতের উপর বিন্যস্ত হয়নি বলে অনেক ক্ষেত্রেই ফলপ্রসূ হয়নি। প্রচুর বিদেশী আর্থিক সাহায্য এলেও বিগত সরকারের অনভিজ্ঞতার কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

নারী ও আইন
বাংলাদেশে নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি নির্যাতন রোধকল্পে কতিপয় প্রচলিত আইনের সংশোধন ও নতুন আইন প্রণীত হয়েছে। এসব আইনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মুসলিম পারিবারিক আইন, যৌতুক নিরোধ আইন, বাল্যবিবাহ রোধ আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ (বিশেষ বিধান) আইন প্রভৃতি। নারী ও শিশু নির্যাতনপ্রতিরোধে আইনগত সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল, নির্যাতিত নারীদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া আইনজীবীর ফি ও অন্যান্য খরচ বহনের সহায়তা দানের উদ্দেশ্যে জেলা ও সেশন জজ-এর অধীনে নির্যাতিত নারীদের জন্য একটি তহবিল রয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে বেশ কিছু আইন প্রণীত হয়েছে, তবু গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক আইনে বৈষম্য বিদ্যমান থাকায় নারী পুরুষের সমতা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সুতরাং এসব আইনের মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। বিভিন্ন পদক্ষেপ সত্ত্বেও মেয়ে শিশুর অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন ঘটেনি। মেয়ে শিশুর বাল্যবিবাহ, পাচার, নির্যাতন ও অপব্যবহার চলছে অব্যাহতভাবে। বৃহত্তর সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়ে শিশুর সাংস্কৃতিক, মানসিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে উল্লেখযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।

নারী নির্যাতন
যদিও ইতোমধ্যে বেশ কিছু আইন প্রণীত হয়েছে তথাপি নারী নির্যাতন আশানুরূপ হ্রাস পায়নি। নারী নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নারী হত্যা, নারী ও মেয়ে শিশু অপহরণ ও পাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানী, নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি এসিড নিক্ষেপ ও অন্যান্য নারী নির্যাতনমূলক অপরাধ অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম্য সালিশির মাধ্যমে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে ১০১ দোররা, গর্ত করে পাথর মারা, পুড়িয়ে মারার ঘটনাও এদেশে ঘটেছে। নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো রাষ্ট্রীয় তথা পুলিশের নির্যাতন। নিকট অতীতে পুলিশের হাতে বেশ কিছু নারী নির্যাতিত হয়েছে, এমনকি পুলিশ দ্বারা নারী ধর্ষিত ও নিহত হয়েছে। নারী নির্যাতনের মামলাগুলো তদন্তের জন্য যথেষ্ট ফরেনসিক সুবিধা এখনও গড়ে ওঠেনি। এখনও প্রয়োজনীয়
নারী কনস্টেবল, নারী পুলিশ ইন্সপেক্টর ও নারী এ.এস.আই এবং উচ্চতর পদসোপানে নারী পুলিশ কর্মকর্তা নেই। ফলে নারী বিষয়ের তদন্ত এবং অন্যান্য কাজ পরিচালনায় বিশেষ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে মামলা দায়ের হয় না এবং বিভিন্ন কারণে বিচার বিলম্বিত হয়। সরকার নির্যাতিত নারী ও মেয়ে শিশুর সহায়তার জন্য একটি মহিলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছে। এ কেন্দ্রে নির্যাতিত নারীদের আশ্রয়, বিনা খরচে আইনগত পরামর্শ ও মামলা পরিচালনার জন্য সহায়তা দেয়া হয়। পাশাপাশি নির্যাতিত নারীদের বিভিন্ন পেশায় প্রশিক্ষণ দান করে আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশের ১০টি জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত স্থাপিত হয়েছে।

রাজনীতি ও প্রশাসন
নারীর প্রশাসনিক ক্ষমতায়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ে নালরি অন্তর্ভূক্ত তথা উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করার প্রথম উদ্যোগ ১৯৭২ সনে বঙ্গবন্ধু সরকার গ্রহণ করেন। সরকারী চাকুরীতে মেয়েদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দিয়ে সকল ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ অবারিত করে দশভাগ কোটা সংরক্ষণ করা হয়। ১৯৭৩ সনে দু’জন নারীকে মন্ত্রী সভায় অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং ১৯৭৪ সনে একজন নারীকে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়। নারীর ব্যাপক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকারী চাকুরীতে কোটা প্রবর্তন হলেও এখন পর্যন্ত সরকারের নীতি নির্ধারণী পদে নারীর অংশগ্রহণ প্রান্তিক পর্যায়ে রয়েছে। মন্ত্রী সভায় ৪ জন এবং সংসদে ৩৩০ জন সদস্যদের মধ্যে পরোক্ষভাবে নির্বাচিত ৩০ জন সদস্যসহ ৩৭ জন নারী। স্থানীয় সরকারে ১৩,৮৭৯ জন নারী বিভিন্ন প্রতিনিধিত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তবে এদের অধিকাংশই পরোক্ষভাবে নির্বাচিত। বাংলাদেশে সরকারী ও আধাসরকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০,৯৭৩৩৪ তন্মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা ৮৩,১৩৩ জন অর্থাৎ শতকরা ৭.৬ ভাগ। এর মধ্যে গেজেটেড পদে শতকরা ৬.৫ ভাগ এবং অন্যান্য পদে শতকরা ৭.৪০ ভাগ। উপ-সচিব পদ হতে সচিব পর্যন্ত পদগুলোতে নারীদের সংখ্যা শতকরা ১ ভাগেরও নীচে। বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সমতুল্য পদসহ সচিবদের পদ ৬৪টি। কোন নারী এই পদে অধিষ্ঠিত নেই। অতিরিক্ত সচিবদের পদে ৬০টি। এ পদসমূহে ২ জন মাত্র নারী রয়েছেন। ২৯৫টি যুগ্ম-সচিব পদের মধ্যে ২ জন নারী এবং ৬৬৫ জন উপ-সচিবের মধ্যে ৩ জন মাত্র নারী রয়েছেন। বিএসএস-এর অন্যান্য ক্যাডারেও উচ্চ পদে নারীর সংখ্যা নগণ্য। রাষ্ট্রদূত পদে মাত্র ১ জন নারী বর্তমানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি পদে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশন, পরিকল্পনা কমিশন ও নির্বাচন কমিশনে উচ্চ পদে কোন নারী নেই। এছাড়া বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার উচ্চ পদে অতি সীমিত সংখ্যক নারী নিয়োজিত রয়েছেন। ক্ষমতায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য গেজেটেড বা তদসম পদে প্রবেশ পর্যায়ে শতকরা ১০ ভাগ এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণী পদে প্রবেশ পর্যায়ে শতকরা ১৫ ভাগ কোটা নির্দিষ্ট রয়েছে। এই পদ্ধতিতে কোট পূরণ সম্ভব হলেও কখনোই নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা সৃষ্টি হবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শতকরা ৬০ ভাগ নারীদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মাত্র শতকরা ৬০ ভাগ নারীদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মাত্র শতকরা ২৫ ভাগ নারী। পলিশ বিভাগে নারীদের এ এস পিসহ অন্যান্য পদে নিয়োগের ব্যবস্থা না থাকায় বিগত কয়েক বছর ঐ পদে নিয়োগ বন্ধ ছিল। এছাড়া পুলিশ বিভাগে অন্যান্য পদেও নারীদের সংখ্যা অত্যন্ত কম। সেনাবাহিনীতেও নারীদের নিয়োগ একেবারেই সীমিত।
দারিদ্র্য
দেশের শতকরা ৪৬ ভাগ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারীজনগোষ্ঠীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী। চাকুরী ও স্ব-কর্মসংস্থান উভয়ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারী পিছিয়ে আছে। ১৯৯০-৯১ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ৫১.২ মিলিয়ন। এর মধ্যে পুরুষ ৩১.১ ও নারী ২০.১ মিলিয়ন। অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত নারীর অনেক কাজের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন হয় নাই। সংসারের পরিসরে নারীর শ্রম বিনিয়োগের কোন মাপকাঠি এখনও উদ্ভাবন করা যায়নি এবং কৃষি অর্থনীতিতে নারীর অবদানের সঠিক মূল্যায়ন নিরূপিত হয়নি বলেই নারী শ্রমশক্তি হিসেবে অনেক সময় চিহ্নিত হয়নি।

নারী মানব সম্পদ
বাংলাদেশের নারীদের গড় আয়ু ৫৮.১ বছর, অন্যদিকে পুরুষের গড় আয়ূ ৫৮.৪ বছর। নারী ও পুরুষের অনুপাত ১০০ : ১০৬-পৃথিবীর মাত্র ৩টি দেশে পুরুষের গড় আয়ু নারী থেকে বেশী। পুরুষের স্বাক্ষরতার হার শতকরা ৩৮.৯ ভাগ, সেখানে নারীর স্বাক্ষরতার হার ২৫.৫ ভাগ। শিক্ষার সর্বস্তরে পুরুষের তুলনায় নারী পিছিয়ে আছে। ১৯৯৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু ভর্তির হার হল ৮৩.৬; এর মধ্যে বালক ৮৮.৯ ভাগ ও বালিকা ৭৮ ভাগ এবং বালক বালিকা অনুপাত ৫২ঃ ৪৮; এর মধ্যে মেয়ে শিশুর ভর্তি ও ঝরে পড়ার হার যথাক্রমে ৮৮.৩ ও ১৫.৩ দেশে এবং বিদেশে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও পেশাগত শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কারিগরী প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারী সমান সুযোগের অভাবে পুরুষের তুলনায় সংখ্যা ও গুণগত দিকে থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। ছেলে ও মেয়ে শিশুর অপুষ্টির আনুপাতিক হার ৪৩.৮ ঃ ৪৭.৬- এ থেকে নারী-পুরুষের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

নারী উন্নয়নে সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উত্তরণ
নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন কল্যাণ ফাউন্ডেশন, ১৯৭৬ সালে জাতীয় মহিলা সংস্থা ও ১৯৭৮ সালে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করে। ১৯৮৪ সালে মহিলা বিষয়ক পরিদপ্তর গঠিত হয়। ১৯৯০ সালে পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়। ১৯৯৪ সালে শিশু বিষয় অন্তর্ভূক্ত করে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নামকরণ “মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়” রাখা হয়। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে, জাতীয় মহিলা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন একাডেমী, কর্মজীবি মহিলা হোস্টেল, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, নারীদের কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বেগম রোকেয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সকল জেলা ও থানায় বিভিন্ন প্রকল্পেপর আওতায় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাতীয় মহিলা সংস্থা ৬৪টি জেলা ও ১৩৬টি থানায় নারী উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। শিশুদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় নারী উন্নয়ন কর্মকান্ড সমন্বিত করার লক্ষ্যে ৩৩টি নারী উন্নয়ন ফোকাল পয়েন্ট মনোনীত করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নীতি নির্ধারণ ও উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন ও পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে ৪৪ সদস্য বিশিষ্ট “জাতীয় মহিলা ও উন্নযন পরিষদ” গঠন করা হয়েছে। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে আন্তঃমন্ত্রণালয় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়েছে। নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু
বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেল এবং জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে সহযোগিতা ও সংযোগ রয়েছে। বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে সরকার সক্রিয় সহযোগিতা প্রদান করছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলিল ও নীতিমালায় সরকারী-বেসরকারী ও সংযোগের জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
সরকারী ও বেসরকারী কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলিল ও নীতিমালায় নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে সক্রিয় সরকারী-বেসরকারী সংযোগ ও সহযোগিতার কথা থাকলেও এবং সরকারী-বেসরকারী উভয় পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে সংযোগ ও সহযোগিতার আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই লক্ষ্যটি এখনও পূর্ণমাত্রায় অর্জিত হয়নি। এক্ষেত্রে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সময়ের দাবী হলো সরকারী এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিবিড় সমন্বয়ও সহযোগিতা। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, নারী আন্দোলন ও নারী সংগঠনগুলি নারী উন্নয়ন ও সমতার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নারী সমাজকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তোলা হবে অন্যতম লক্ষ্য।
সম্পদ ও অর্থায়ন
বিগত পঞ্চবার্ষিক ও দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোতে বরাদ্দকৃত সম্পদ নারী উন্নয়নের প্রয়োজনের নিরিখে অপ্রতুল ছিল। এখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যাপক গবেষণা ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকরী ও সম্ভাবনাময় কর্মসূচী গৃহীত হলে প্রয়োজনীয় সম্পদ প্রাপ্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সরকার সমূহ ও আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থাসমূহকে দেশে দেশে নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান হারে অর্থ বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে অবহিত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব
সরকারের রুলস অব বিজনেস অনুসারে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্যতম দায়িত্ব নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে নীতি প্রণয়ন করা। এ দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সংবিধানে স্বীকৃত নারীর মৌলিক অধিকার, আন্তর্জাতিক সনদসমূহ যথা: সিডও, সিআরসি এবং বেইজিং ঘোষণা ও কর্ম-পরিকল্পনার আলোকে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করেছে।

জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির লক্ষ্য
১৯৯৬ সালের ১২ জুন জাতীয় নির্বাচনে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশে প্রথম বারের মত নারী উন্নয়ন নীতি প্রদান করছে, যার প্রধান লক্ষ্য হবে যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত ও অবহেলিত এদেশের বৃহত্তর নারী সমাজের ভাগ্যোন্নয়ণ করা।
জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা করা;
রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা;
নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা;
নারীকে শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ হিসাবে গড়ে তোলা
নারী সমাজকে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা;
নারী পুরুষের বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন করা;
সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিমন্ডলে নারী অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করা;
নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন দূর করা;
নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি বৈষম্য দূর করা;
রাজনীতি, প্রশাসন ও অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে, আর্থসামাজিক কর্মকান্ড, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া এবং পারিবারিক জীবনের সর্বত্র নারী পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা;
নারীর স্বার্থের অনুক্থল প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও আমদানী করা এবং নারীর স্বার্থ বিরোধী প্রযুক্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা;
নারীর সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা;
নারীর জন্য উপযুক্ত আশ্রয় এবং গৃহায়ন ব্যবস্থায় নারীর অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা;
প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও সশস্ত্র সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত নারীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা;
বিশেষ দূদর্শাগ্রস্ত নারীর চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা;
বিধবা, অভিভাবকহীন,স্বামী পরিত্যাক্তা, অবিবাহিত ও সন্তানহীন নারীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা;
গণমাধ্যমে নারী ও মেয়ে শিশুর ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরাসহ জেন্ডার প্রেক্ষিত প্রতিফলিত করা;
মেধাবী ও প্রতিভাময়ী নারীর সৃজনশীল ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা দেয়া;
নারী উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহায়ক সেবা প্রদান করা।
জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি
১. নারীর মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার বাস্তবায়ন
মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার সকল ক্ষেত্রে যেমন: রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ যে সম-অধিকারী, তার স্বীকৃতি স্বরূপ নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করা;
 নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা;
নারীর মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন সংশোধন ও প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা;
বিদ্যমান সকল বৈষম্যমূলক আইন বিলোপ করা এবং আইন প্রণয়ন ও
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:৩৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×