somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পল্লী গ্রামের বাজারগুলোতে হাতুরে ডাক্তারদের আনাগুনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছেঃ ভূয়া, অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণে জনজীবন ঝুঁকিতে

০৯ ই মার্চ, ২০১১ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানব কল্যাণে চিকিৎসা সেবা অতুলনীয়। মানবিক অসুস্থ্যতার আরোগ্যতা দিতে ডাক্তারগণ চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। ফলে ভাল ডাক্তারদের চিকিৎসার ওসিলায় আল্লাহ তা'য়ালা ঐ রোগীকে রোগ থেকে মুক্তি দেন। কারণ, আল্লাহ হলেন, "শাফীউল আমরাজ"। প্রকৃত ডাক্তারগণ তাই মনে করেন। ডাক্তারগণ আবার ৩ ধরনের। এক ধরনের ডাক্তার, যেমনি তাদের যোগ্যতা তেমনি তাদের অভিজ্ঞা। আর তারা অধিকাংশই শহরে থাকেন। আরেক ধরনের ডাক্তার, যাদের কম যোগ্যতার সাথে সাথে অভিজ্ঞতাও কম। তারা বেশীর ভাগ গ্রামের পল্লী চিকিৎসক নামে পরিচিত। এতদুভয়ের মাঝে আরেক ধরনের ডাক্তার হল, যারা ভূয়া বা অযোগ্য এবং অনভিজ্ঞ
ডাক্তার। কিন্তু তারা শহরে থাকে না। থাকে সহজ-সরল গ্রামীন মানুষদের নিকট। আর ঐ শেষোক্ত ডাক্তার নিয়েই আমার আলোচনা। আমি তাদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। এই সমস্ত ভূয়া বা অযোগ্য এবং অনভিজ্ঞ ডাক্তাররা আশ্রয় নেয় গ্রামঞ্চলের কিছু ফার্মেসীতে। অসাধু,লোভী ও প্রতারক ফার্মেসীর মালিকরা ভূয়া বা অযোগ্য এবং অনভিজ্ঞ ডাক্তারদের এনে উন্নতমানের চিকিৎসার কথা বলে মাইকিং করে যে, এমবিবিএস, যোগ্য ও ভিজ্ঞ ডাক্তার রোগী দেখবেন অমুক ফার্মেসীতে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ইত্যাদি বলে এলাকাবাসীর অবগতির জন্য প্রচার-প্রসার করতে থাকে। এলাকার সহজ-সরল মানুষ তাদের কথা বিশ্বাস করে এবং ঐ সমস্ত ডাক্তারদের নিকট শরনাপন্ন হয় সুচিকিৎসার আশায়। কেউ জানে না এরা মূলত ডাক্তার নয়। আসলে এরা হাতুরে ডাক্তার। এদের বড় ডাক্তার মনে করে, অপচিকিৎসার শিকার হন পল্লী গ্রামের জনসাধারণ । সম্প্রতি ভাটি এলাকার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে ঐ সমস্ত ডাক্তারদের আনাগুনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই সুযোগটা দিচ্ছে নামে মাত্র ডাক্তার ফার্মেসীর মালিকরা। কারণ, দেখছে তারা তাদের ব্যবসায় সফল হতে পারছে না।
রোগী আসছে না। ঔষধ বেশী করে বিক্রি হচ্ছে না। মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য ভূয়া, অযোগ্য এবং অনভিজ্ঞ ডাক্তারদের ভাড়া করে নিয়ে আসেন। তাদের কমিশনও দেয়া হয়। এই সমস্ত ডাক্তারদের চিকিৎসায় ভাটি এলাকার জনজীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের ভুল চিকিৎসার ফলে দূর্ঘটনাও ঘটে যায় কোন সময়। অবশেষে ডাক্তার চম্পট দেয়। এরকম দূর্ঘটনার একটার উদাহরণ তুলে ধরছি। হবিগঞ্জের ভাটিতে আজিমরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও বাজারের ফার্মেসীর অনেক মালিকরা তাদের ব্যবসা জমজমাট করার জন্য ঐ ধরনের ডাক্তারদের আনেন। ঐ বাজারের সওদাগর মার্কেটস্থ রিয়াদ ফার্মেসীর মালিক আলমগীর মিয়া এম. রহমান নামক ডাক্তারকে আনেন। ব্যবসায় ফলপ্রসু আনতে যা যা দরকার প্রচার-প্রসারসহ নানান কিছু করেন। চলতে থাকে এভাবে বহুদিন। একপর্যায়ে ঐ ডাক্তারের ভূল চিকিংসায় পার্শ্ববর্তী উপজেলার আগত একজন রোগীর জীবন বিপন্ন করে তুলেন। ঐ ছেলের নাম শেখ ফরিদ (১২)। পরে তার বাবা আঃ সালাম অবস্থা বেগতিক দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেক্সে ভর্তি করান। জানা যায়, ঐ ডাক্তার শেখ ফরিদকে চিকিৎসা করার পর শারিরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। পরে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আসতে বলেন। এদিকে, বাবা তার ছেলেকে নিয়ে আসার পর দেখেন ফার্মেসীতে তালা ঝুলছে। তৎক্ষনাৎ জানা যায় যে, ফার্মেসীর মালিক ডাক্তারকে নিয়ে কোথাও উধাও হয়ে যায়। উল্লেখ্য, ঐ ফার্মেসীর মালিক আলমগীর এর পূর্বে এমবিবিএস নামের একজন মহিলা অযোগ্য ডাক্তার নামের নার্সকে নিয়ে আসেন। গ্রামের মানুষ জানান যে, ডা. এম রহমান যে কোন রোগী আসলে তাকে এক সাথে ৩টি ইনজেকশন পুষ করে। ইনজেকশন ৩টি হল, ১. সেফট্রিয়াক্সন ২. প্যানটুনিক্স ৩. ভলটারিন। সেদিন শেখ ফরিদকে ও এ ৩টি ইনজেকশন দেন। এর সাথে সাথে তিনি আরো দেন, ট্যাবলেট নিউপ্লক্সিন (৫০০ এমজি) ১৪টি, সিরাপ রিনিডিন ১ফাইল, নাপা ট্যাবলেট ১০টি ও সিরাপ এলার্ট্রন ১ ফাইল। স্থানীয় ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, এলার্ট্রন যেখানে দিনে একবার দেয়ার কথা, সেখানে তিনি দিয়েছেন ৩ বার। ছেলেটির বয়স মাত্র ১২ বৎসর। এত বেশী ঔষধ এবং ওভারডোজের কারণে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যায় বলে স্থানীয় বিজ্ঞ ডাক্তারগণ বলেন। উল্লেখ্য, পল্লীর বাজারগুলোতে কিছু অসাধু ফার্মেসীর মালিকরা মোটা অংকের টাকা উপর্জনের নিমিত্তে বিভিন্ন জায়গা থেকে এমবিবিএস ডাক্তার নাম দিয়ে বহুদিনের পুরনো নার্সদের নিয়ে আসেন। তাদের মাধ্যমে চিকিৎসা করিয়ে ন্যুনতম ভিজিট বাবত ৫০ টাকা করে নেন এবং যেখানে ১শ' থেকে ২শ" টাকার ঔষধ যথেষ্ট, সেখানে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকার ঔষধের (প্রেসক্রিপশন) ব্যবস্থাপত্র দেন। পল্লী গ্রামের জনসাধরণদের অভিযোগ, এব্যাপারে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে। প্রশাসনের সুদৃষ্টি থাকলে প্রতারক ডাক্তারদের থেকে সরলমনা গ্রামের রোগীরা প্রতারকদের কবল থেকে রক্ষা পাবে বলে মনে করেন
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×