somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইংরেজী জানা, না জানা

০৬ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইংরেজী জানা, না জানা নিয়ে আমাদের দেশে অনেক কথাই হয়। আমি একটি ব্লগে এই নিয়ে কিছু কথপোকথন পেয়েছি। ভালো লাগলো তাই সেগুলো তুলে দিলাম।

অনেক আশার পূরণ ঘটিয়ে কাল শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার সৌভাগ্য হল। বিএমএ তে। বাংলাদেশের কাছে এত বড় আশা ছিল না বললেই চলে। আশার মাত্রা ছাড়িয়ে অনেক বেশীই করতে পেরেছে আমাদের দেশ।।।। সবচেয়ে ভালো লেগেছে পর্যটন কর্পোরেশনের Beautiful Bangladesh আর Aerial cricket যাই হোক কথা তবু থেকেই গেছে। আমাদের দেশের মাথারা যখন বলেছে ওয়ার্ল্ড কাপ ২০০১…. তখন আর কিছু বলার থাকে না। আন্তর্জাতিক একটা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সবাই যখন উচ্চারণে অপারগ। ইংরেজি উচ্চারণে দুর্বল। স্ক্রিপ্ট দেখে বলতে হয়। তখন ভুলটা গৌণ হলেও হতে পারত।।। কিন্তু আমাদের মুখে চুনকালি মেখে তারা বুঝিয়ে দিলেন “আমাদের দেশের মাথাতেও কিছু অশিক্ষিত লোক নিয়োগ করা আছে” রাজনীতি না মূর্খের নীতি কে জানে!!!
তারা যদি শিক্ষিত হতেন সেরকম তবে তারা এ ভুল করতে পারতেন না।। আমরা চাই না আর এরকম হোক।। চাই সম্মানিত মানুষ। আলোকিত মানুষ, যারা আমাদের দেশকে আলোকিত করবেন, সম্মানিত করবেন।।।
এ প্রত্যাশায় আবারো কোন এক প্রান্ত থেকে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ এমন একটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করার জন্য। গর্বিত অনুষ্ঠান সত্যিই।।।।

কমেন্ট ১: দ্বিমত প্রকাশ করছি।ভুল উচ্চারণ, ২০১১ কে ২০০১ আর ৩৫০ কে সাড়ে তিনশ পঞ্চাশ বলা ইত্যাদির সমালোচনা করেও বলা যায়, ইংরেজি না জানাটা আমরা বাঙ্গালিরা যতবড় অপরাধ ভাবি ততটা নয় মোটেও-আর ইংরেজি না জানা মানেই জীবন বৃথা হয়ে গেলো এমনটিও নয়।তা-ই যদি হত তাহলে জাপান,ফ্রান্স ইত্যাদি দেশ অন্ধকারেই থাকত।লেখার মূল সুর বুঝতে পারছি তবে ইংরেজি উচ্চারণের ত্রুটি মানেই মূর্খ এটি ভুল কথা বলে মনে করি।এই চিন্তাধারাকে খুব দোষ অবশ্য দেয়া যাবেনা-২০০ বছরের গোলামীর প্রভাব যেতে আরো শ-খানেক বছর লাগবে।
এখানে এসে আমি দেখছি ব্রিটিশ কলোনীভুক্ত দেশগুলো ছাড়া আর কারো ইংরেজিই সেই রকম কিছু না। তাতে তো এই সব দেশ ধ্বংস হয়ে যায়নি। আর ইউরোপে গিয়ে (ইংল্যান্ড ছাড়া) ইংরেজিতে কথা বললে লোকজন যেই রেসপন্স করবে তার চাইতে বাংলায় কথা বললে বেশি ভালো রেসপন্স করবে।

দুইশ বছরের গোলামির অভ্যাস আমাদের অস্থিমজ্জা থেকে এত সহজে যাবেনা।আরেকটু খোঁজ-খবর নাও-এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখ চায়নার কয়জন মন্ত্রী ভুল বা শুদ্ধভাবে না,ইংরেজি ভাষাটা বলতে পারে।বিল ক্লিন্টনের জাপান সফরের সময় সেখানকার প্রধানমন্ত্রীর ভুলভাল ইংরেজি নিয়ে হাস্যকৌতুক তো মোটামুটি কিংবদন্তীর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে,তাতে কিন্তু জাপানের উন্নতি থেমে থাকেনি।সিঙ্গাপুরের অন্যতম টুরিস্ট স্পট জুরং বার্ড পার্ক থেকে এক জায়গায় যাবার সময় কোথায় যাচ্ছি জিজ্ঞাসা করায় সেখানকার গাইড বলল-”আন্দা ওয়াতা ওয়া”,আমি আর আমার ইংরেজিতে মাস্টার্স মা-জননী শত চেষ্টা করেও তার কিছুই বুঝতে না পেরে শেষে বাস থেকে নেমে দেখলাম “আন্ডার-ওয়াটার ওয়ার্ল্ড” লেখা রয়েছে।জাপানে মনবূশো স্কলারশীপ নিয়ে যারা পড়তে যায় তাদেরকে সেদেশের ভাষা শিখতে হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমডিএসে আমার “সহপাঠী” লেঃকর্নেল ফখরুল আহসানের কাছে শুনেছি তিনি যখন ফ্রান্সে স্টাফ কলেজ করতে যান তাঁকে পুরোপুরি ফ্রেঞ্চ ভাষা শিখতে হয়েছিলো।চাইলে এওকম কোটিকোটি উদাহরন দেয়া যেতে পারে।ইংরেজিটা আসলে কমনওয়েলথ দেশগুলোর জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ টেকনোলজি যেটা আয়ত্ব করলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়-এর বেশি কিছুই না।ইংরেজির গুরুত্ব অবশ্যই আছে কিন্তু বাঙ্গালি ওটা নিয়ে যেমন হ্যাংলামো করে তা এক কথায় হাস্যকর।

কমেন্ট ২: দেশ চালানো জন্য দরকার মেধা, প্রজ্ঞা, বিচক্ষনতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা এইসব। ভাষাটা জরুরী কিছু নয়। অন্যভাষাতো বটেই, তিনি যদি নিজের ভাষাতেও ঠিক মত কথা বলতে না পারেন, তাতে যে ক্ষতি থাকে তা পুষিয়ে নেয়া যায় সহজেই। তবে মৌলিক গুণ গুলো না থাকলে শুধু বিভিন্ন ভাষায় ফটর-ফটর করতে পারলে, সেই ক্ষতি পুষানো যায় না।

কমেন্ট ৩: আমি ঠিক এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলাম।দেশ চালানর জন্য ইংরেজিতে ফটর ফটর প্রয়োজন হলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কোন আইইএলটিএস ইন্সট্রাকটরকে প্রধানমন্ত্রী বানালেই তো ল্যাঠা চুকে যায়!

কমেন্ট৪: ইংরেজি নিয়ে হীনমন্যতারও কোন কারন নেই। ইংরেজীকে আমরা যতই স্মার্টনেসের উপাদান ভাবি না কেন শেষ পর্যন্ত এটা একটা ভাষাই। শরদ পাওয়ার এর ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলাতে যেমন আমরা মাইন্ড করি না তেমনি আমাদের নিজস্ব উচ্চারনের ইংরেজির জন্যও লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই। ইংরেজীকে পুরো পৃথিবীই গ্রহন করেছে তবে সেটা প্রত্যেকে নিজেদের মতো করেই গ্রহন করেছে। তাই তো ক্যারিবীয় ইংরেজি, আফ্রিকান পিজিয়ন ইংরেজি, অস্ট্রেলিয়ান ইংরেজি, ইন্ডিয়ান ইংরেজিরও আলাদা স্বকীয়তা রয়েছে।

কমেন্ট ৫: ইউরোপিয়ানরা ইংরেজি সাধারনত বলেই না। যদিও বলে তবে এমনভাবে বলবে যেন ইংরেজী সে বলছে এতেই আমার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। আমরা তাও ইংরেজির মধ্যে বাস করি। আমরা ইংরেজিতে অনুষ্ঠান দেখি, গান শুনি, পত্রিকা পড়ি, সিনেমা দেখি। কিন্তু ইউরোপিয়ানদের এসবের বালাই নেই। তাদের সব কিছুই তাদের ভাষায়। তারাও আমেরিকান মুভি দেখে ঠিকই কিন্তু সেটা ডার্ব হয়ে আসে তাদের ভাষায়। তারও ইএসপিএন দেখে কিন্তু সেই ইএসপিএন ব্রডকাষ্ট হয় তাদের ভাষায়। তাই তাদের জীবনে ইংরেজির কোন বালাই নেই।
একবার আমার এক সুইস জার্মান কলিগ আমার কম্পিউটার এ টম ক্রুজের মুভি দেখে হাসছে। আমি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম সে আমাকে বলে টম ক্রুজের মুখে ইংরেজি দেখে হাসছে। তার সারা জীবনে সে টম ক্রুজের মুখে সে জার্মান ভাষাই শুনেছে ( ডার্ব ছবির কল্যানে) । তাই টম ক্রুজ ইংরেজি বললে সেটা তার কাছে ইন্টারেস্টিং ই লাগছে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×