somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিলেটের পথে পথে

০৪ ঠা মার্চ, ২০১১ রাত ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শ্রীমঙ্গলের নামটা শুনলেই মাথায় আসে চা বাগান।চা বাগান মানেই বৃষ্টিপাত আর দুটোই যখন আমার পছন্দে্র তখন তো আর বলার অপেক্ষা থাকে না আমাকে শ্রীমঙ্গল ভ্রমনের পরিকল্পনা করতে হবে। সুতরাং অনেক পরিকল্পনা করে ১২ ই সেপ্টেম্বর ২০১০ সকাল ৮ টায় রওয়ানা দিলাম শ্রীমঙ্গলে্র উদ্দেশ্য। এবার আমার সফর সঙ্গী হলেন জুয়েল ভাই, তানভির ভাই, রাকিব ভাই, আমিন ভাই ও মামুন, মুরাদ। মুরাদের আগেই সিলেট ভ্রমনের অভিজ্ঞতা থাকলেও বন্ধুদের সঙ্গ দেবার জন্য অনেক কষ্ট করে আমাদের সফরসঙ্গী হওয়ায় আমরা মহাখুশি। এই ভ্রমন থেকেই আমি মুরাদের পরোপকারীতার প্রমান পেলাম।

হবিগঞ্জ পাড় হতেই চোখে পড়ল "ফিনলে চা রাজ্য" সেখানে ছোটো বড় পাহাড় ঘেরা বাগান দেখে মনে হয় এক অনিন্দ্য সৌন্দয্যে˙র লীলাভূমি। আমরা শ্রীমঙ্গল পৌছে গেছি বেলা ১২ টার আগেই। এতো কম সময়ে এতো সুন্দর একটা জায়গা দেখে আমি দারুন মুগ্ধ হলাম। ঢাকা থেকে Saint Martin ১৫ ঘন্টা, কক্সবাজার ১৩ ঘন্টা আর শ্রীমঙ্গল মাত্র ৪ ঘন্টার পথ। শ্রীমঙ্গলের প্রধান বৈশিষ্ট্য বৃষ্টিপাত আমদের সুস্বাগতম জানাল। রাকিব ভাই ও আমিন ভাই ভিজে একাকার। আমরা উঠলাম BTRI এর বিশ্রামালয়ে।

আমাদের সেদিনের গন্তব্য লাউড়াছড়া বন, সাত রঙ এর চা ও চা বাগান দেখা। লাউড়াছড়া বন দেখলাম খুব কম সময় নিয়ে।কোন ট্রেইল ঠিক মত হাঁটা হল না।

এবার চলে এলাম সাত রঙ চা দোকানে। ১ ঘন্টা সময় নষ্ট করে আমরা এই বিখ্যাত চায়ের স্বাদ পেলাম।

আমাদের দ্বিতীয় দিনের যাএা শু্রু করলাম একটা এসি মাইক্রো নিয়ে। প্রথমে গেলাম মাধবপুর হ্রদ এ। ফটো সেশন জন্য দারুন একটা জায়গা। এতো সুন্দর একটা লেক, দেখলেই মন ভাল হয়ে যায়।

এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড় বেড়াতে থাকলাম। অনেক শান্ত একটা পরিবেশ।সময় কে তো আর বেঁধে রাখা যায় না, তাই আমাদের রওয়ানা করতে হল মৌলভীবাজার এর উদ্দেশ্য। মৌলভীবাজার গিয়ে আমার উঠলাম সাইফুল রহমান রোড এর হোটেল বীনা তে। দারুন একটা রুম পেলাম। কিন্তু বিশ্রাম এর সময় নাই। কারণ আমাদের যেতে হবে ৫২ কিঃমিঃ দূরে মাধবকুন্ডুতে। সেখানে গিয়ে তো আমরা হতবাক। কয়ে্ক হাজার মানুষের ঢল। তার উপর আবার পথে পাচঁটা বাস খাধে পড়ে আছে। সবাই আমাদের মাধদকুন্ড ঝরণা যেতে মানা করল এই বলে ৪ কিঃমিঃ হাঁটতে হবে তাও আবার পথ কাদায় ভরা। রাকিব ভাই ও আমিন ভাই খুব উৎসাহী হয়ে রওয়ানা দিল। আমিও কিছুটা সাহস পেলাম এই বলে “আমদের তো কোনো কাজ নাই, তো আল্লাহ নাম নিয়ে হাঁটা দেই”। প্রায় ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট হেঁটে গেলাম সেই ঝরনাতে। সবাই মিলে ডুবা ডুবি করে আবার সেই কাদাময় পথ পার করলাম অনেক কষ্ট করে। মুরাদ আমাকে অনেক সহযোগীতা করল রাতে আধার পথ চলতে। সেদিন রাত হোটেলে ফিরে দারুল একটা ঘুম দিলাম আর নতুন একটা পরিকল্পনা করলাম আমি সিলেটেও যাব রাকিব ভাইদের সাথে।



ঘুম থেকে খুব সকালে উঠলাম রাকিব ভাই এর ডাকে। আমরা বের হলাম জুয়েল ভাই,মুরাদ ও মামুনকে বিদায় জানিয়ে,তারা আজ এ ঢাকা চলে যাবে আর রাকিব ভাই, আমিন ভাই ও আমি যাব আরো দুইদিন পর। আমরা একটা লোকাল বাস এ করে অনেক দিন এর স্বপ্ন সিলেট শহরে পৌছালাম। সেখানে আরেক বড় ভাই “জিস ভাই” ওরফে জামান ভাই, দারুন বন্ধুত্বসুলভ, আত্মীয়পরায়ন একটা মানুষ। ওনা্র মত এমন মানুষ এখন খুঁজে পাওয়া কঠিন। সিলেটে গিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়লাম একটা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে। প্রথমে গেলাম তামাবিল সীমান্তে। ও পাড়ে ভারতের মেঘালয়। মেঘালয় মানেই হলো মেঘে রাজ্য। নীল আকাশ, সাদা মেঘ আর উচুঁ উচুঁ সবুজ পাহাড় দেখে মুগ্ধ হলাম। মেঘের উপর দিয়ে পাহাড়ের মাথা বের হয়ে আছে। তামাবিল সীমান্তে ফটোসেশন শেষ করে সমতল ভূমি থেকে উপরে উঠতে শুরু করল আমাদের গাড়ী। দুপুর ২ টায় আমরা গেলাম জাফলং। একটা বোটে করে গেলাম সেই ভারতে বিখ্যাত ঝলন্ত ব্রীজ ও পাহাড়ে ঢালে বাজার দেখতে। রাকিব ভাই প্রথমে পানিতে নামতে না চাইলেও পরে আমার পীড়াপীড়িতে উনি পানিতে নামলেন। আমি মজা করতে করতে এক পা চোরাবালিতে পড়ে গেল। দারুন ভয় পেয়েছিলাম। এরপর গেলাম ঝরনা রিসোট এ। বাংলাদেশ সীমান্তে শেষ বাড়ি, দুটো ঝরনা মিলিয়ে আসাধারন একটা বিনোদন কেন্দ্র। এবার আমরা মাজার শরীফ ঘোরে জামান ভাই ফ্ল্যাটে উঠলাম। রাতে সুপারহিট Dabangg ছবি দেখলাম। পরদিন লাক্কাচু্রা চা বাগান দেখে ঢাকায় ফিরে এলাম। আর এভাবেই আমার ঈদ আনন্দ ভ্রমন ২০১০ শেষ করলাম।


:):):)





০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×