সময় নেই, যেন ঘণ্টা বাজবে এক্ষুণি। এসব নিছক অভ্যস্ততা। সময় থাকে ভীড়ে ছুটতে ছুটতে ক্যানভাসার দেখতে থাকা মানুষটির। টিভিতে একটা মৃগশাবক দেখাচ্ছে। ঝুপসি গুল্ম লতায় মুখ দিয়ে ঘাসের মত সবুজ খেয়ে নিচ্ছে। টিভি বন্ধ করে দিতে বললো গৃহকর্তা। এক্ষুনি স্কুলে যেতে হবে। সময় নেই। এই এখনই বন্ধ হয়ে যাবে কলাপসিবল গেট। পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে দমকলের গাড়ি যেভাবে চারপাশের সব অবজ্ঞা করে দৌড়াতে থাকে - আমি দৌড়ে উঠে যাচ্ছি দোতলা বাসে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সেই তাড়া মনে পড়লে চায়ের চুমুকের অর্ধেকটা ঠোঁটে রেখে ছুটে বেরিয়ে যাই। ভাড়া জিজ্ঞেস না করে রিকশায় উঠে বলি, সামনে. একটু সামনে।
বাইরে বেরিয়ে দেখছি কত কিছু এরই মধ্যে বদলে গেছে্ এসব তো কিছুই ছিল না আগে। বাতাসে একটা বড় বেলুন বিজ্ঞাপন বার্তা উড়াচ্ছে। সেলফোনে একটা পাখি কিচ কিচ করে ডাকছে। ব্যানারে সোনার দোকানের উদ্বোধনীর ঘোষনা। দেয়ালে কিছুক্ষণ আগে এক উন্মাদ তার জীবন দর্শন লিখলো।
বিবিধ ১
গোপন ইচ্ছেটা প্রকাশ্যেই একদিন বলে ফেলেছিল আমাদের মশরু।
বড় হলে সে সবার চেয়ে ভিন্ন কিছু হবে। হয়ে তাক লাগিয়ে দেবে। বড় হলে বিমানের পাইলট হবে।
সে পরে জানলো। এবং মন খারাপ করলো যে রচনা খাতায় এইম ইন লাইফে আমরা প্রত্যেকেই লিখেছিলাম
পাইলট হবে।
বিমান চালকদের ড্রেস কি জোশ, মশরু বলেছিল, মাথায় হেডফোন, সামনের কাচ দিয়ে আকাশ আর সাদা সাদা মেঘ দেখা যায়।
আমি কেন লিখেছিলাম এই পেশা? একমাত্র এক পেশাতেই প্রতিদিন দেশ বিদেশ ঘুরতে পারতাম। পাখির মত যখন খুশি জাপান বা লন্ডন।
গত বছর বিমানে করে বিদেশ ভ্রমনেরসময় এক দেশী ক্রু বললো, চলুন ককপিট ঘুরিয়ে আনি
উঠলাম। দেখলাম স্বপ্নের সেই পেশা। ইচ্ছে হয়েছিল তাকে জিজ্ঞেস করি, তিনি শৈশবে পাইলট হতে চেয়েছিলেন। বড় হয়ে হলেনও। সৌভাগ্যবান ভীষণ!
অন্য দিকে আমি সহ সব কয়জন যাত্রীদের ইচ্ছে ব্যর্থ হয়ে কত নানান প্রফেশনে। তার কি এইওড়াওড়ি ভাল লাগে? কখনো কি উঁচু আকাশে এক জেলখানার মত অবরুদ্ধ লাগে না? শ্রমিকের মত লাগে না?
পাখিদের কোন মালিক নেই। পাখিদের বেতন নেই। পাখিদের বুকে ব্যাজ নেই। আর তাদের সংসারই থাকে আকাশে।
দমবন্ধ এক মাঝবয়সী মানুষ, অজস্ত্র যন্ত্রের কাঁটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে
মাটি থেকে উঁচুতে কাজ করে যাচ্ছিল। একটানা শব্দ হচ্ছে। এক বন্দর থেকে অন্য বিমানবন্দরে অনিচ্ছাতে তাকে উড়ে যেতে হবে। গল্পে পড়া ইকারুস যতটা উড়ে যেতে পেরেছিল সভ্য মানুষেরা তার ধারে কাছেও নেই।
বোধ.২
প্রবাদ আছে যে মন একদিন বুড়িয়ে যায়, প্রেম মুছে যায়, ভালবাসা ভ্রষ্ট হয়, গোলাপের সৌরভ উবে গিয়ে
কাচ ভাঙা চশমার ফ্রেমের মত কাম পড়ে থাকে, বঙ্কিম শরীর জ্যামিতি এবং হরমোনের স্বাদ বাসা বাঁধে মাকড়সার জালের মতন, ভালবাসা নয়, শহর আচ্ছন্ন হয় শরীরের ঘ্রাণে।
সত্যি প্রেম বোকা হরিন শাবক অরণ্যের ধারে জলের কিনারে
নিজের ছায়ায় সঙ্গিনীকে চেয়ে দেখে, যে মায়ার মৃদুঢেউয়ে ফোঁপায় অযথা
হামিং বার্ডের মত ফ্রুকটোজ ঘ্রাণ স্নেহ শুঁকে নিতে আসে,
বটবৃক্ষে আশ্রিত স্নেহবীজ আবেগী কিশলয়ে প্রেম হয়
বড় হলে রূঢ় হিংসা বাড়ে, বল্লমে জরির অঙ্গে পোক্ত হয় লোভের পাহারা।
মন যেন শিশু হয়ে থাকে, জলের কণা জমে মেঘের দর্পন
সমস্ত খেলনার বাড়ি উপহার দিয়ে নীল ব্যথা হয়ে থাকে বুকে,
কপালে নিঃশ্বাস ফেলে আধো আধো উচ্চারণে সে বলে,
তোমাকে ভালবাসি
ফুটনোট -
যা কিছু কতি ইচ্ছে হতিছে সব কি আর কতি পারবেন? পারবেন না। দিলের ভিত্রে কইলজে থাকে, সেই খানে ডর বাসা বান্ধিছে। আমি দ্যাশের স্বাধীনতার বিষয়টা বুঝাইতে চাইলেম। আমারে কি কইছে জানেন? আমরা ঠিকই খুঁজি বাহির করবো আপনি কোন দলের সাপোটার। আমাদের গিরামের নাম সকলেই জানে। সেই গেরামে গেলে দেখতি পারবেন হাজারো হাজারো বেবসা পতিষ্ঠান গড়ি উঠিছে। আমি কইছিলেম কিষানের কথা কি কারো মাথায় আছে? রাইসমিল,ইটের ভাটা, দোকান কাচারিতে যারা কাজ কাম করতিছে তাদের কথা কি মাথায় আছে? শৈলাপুকুর রোড হতিছে। মটার সাইকেল ক্যামন যে অশান্ত করি চলি যায় ভাটির দিকে। সব কিছু কতি গেলে কবি পুরনো দিনের মানুষ বলি গাল দিতে থাকে। পেত্তেক দিন পুলিশ মানুষরে খুন করি ফেলি রাখে। জিজ্ঞেস করলি আমরা জানি এরা ডাকাতের সন্তান। এক ডাকাত আরেক ডাকাতরে মারি নিজে ভাল থাকে। ক্ষেমতা ক্যামোন সেইটে আপনার নিশ্চয়ই কম জানা না। আমরা কত দিন আর বাচি থাকবো বলেন? জগতের সব কিছু পরের মানুষগুলা নিজ হাতে তুলি নিবে। মরণ বেবাক মানুষেরই হবি। তাও কিসের ভয়ে মন্দ মানুষরে মানি লয় আর আমরা খালি চুপ থাকি।
--
ড্রাফট ১.৮
ব্লগ অনেকটা খসড়া খাতা। বার বার লেখা বার বার কাটাকুটি
আজকে এখানেই লিখে যাবো যা ইচ্ছে হয়।