somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম ষ্টিমার ভ্রমনের স্মৃতি......

০২ রা মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্টিমার। আহা! কত যুগ যে স্টিমারে চড়িনি। সেই ছোটবেলায় দু’বার চড়েছিলাম। সেটা মনে আছে। ৫/৬ বছর বয়সে দোতলা স্টিমারে চড়ে কুষ্টিয়া যাত্রা আর ৯/১০ বছর বয়সে গোপালগঞ্জের জলিড়পাড় যাত্রা। এ দুটোই মনে আছে। প্রথম যাত্রাতে যে কি ভোগান্তি, দুঃখ, আনন্দ জড়িয়ে আছে তাই সেটাই আগে বর্ণনা করি। :|

ছোট খালার বিয়ে উপলক্ষে সেজমামা আমাদের বিয়ের বেশ আগেই নিতে এলেন। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আব্বা যাবেন বিয়ের আগের দিন। ফিরবেন একেবারে আমাদের নিয়ে। নানাবাড়ি যাবো একথা ভেবেই আমরা দু’ভাই-বোনের লম্ফঝম্ফ শুরু হয়ে গেলো। আম্মা যাত্রার প্রস্ততি নিতে লাগলেন। তখনকার দিনে দূরে কোথাও যাওয়া মানেই মাল-পত্র, লটবহরের মেলা। হোল্ডওলের ভিতর ছোট্ট একটা তোষক, বালিশ, লেপ দিয়ে বাধা বেডিং, ট্রাঙ্ক, সুটকেস, একটা বেতের ঝুড়ি। তাতে গরম পানির ফ্লাক্স, চিনির বোয়াম, হরলিক্স, বিস্কুট আরো এটা সেটা।
সেজমামা তখন বোধহয় সদ্য কলেজে ভর্তি হয়েছেন। উনার সাথে আমাদের পাঠাতে আব্বা বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছিলো। বার বার বলছিলেন, কি ভাবে যাবে, কি করতে হবে। উনি সেই সেজমামা যার সৌন্দর্য আর রাগের কথা আমি কুষ্টিয়া পোস্টে দিয়েছিলাম। যাক!

অবশেষে যাত্রা শুরু হলো। সদরঘাট থেকে আমরা একটা বিশাল দোতলা স্টিমারে উঠলাম। কেবিনে গিয়ে আম্মা আমাদের বিছানায় চাদর বিছিয়ে আমাকে বললেন, “কেউ এলে বলবে এটা রিজার্ভ”। আমাকে পাহারায় রেখে আম্মা ভাইয়াকে বাথরুমে নিয়ে গেলেন। কেবিনটা বেশ বড় সড় একটা ঘরের মতই। ওপাশে আরেকটি বিছানা খালি ছিলো সেটাতেও আরেকটি পরিবার এসে বসলো। দুই মহিলা আমার পাশে এসে বললেন, “খুকি আমরা একটু বসি?” আমি কিছু বলবার আগেই উনারা ধপাস করে বসে পড়লেন। আম্মা ফিরে এসে আমার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকালেন। আমি ফস করে বলে উঠলাম, “ বারে! আমার কি দোষ? উনারা তো ধপাস করে বসে গেলেন”। ঐ দুই মহিলা তাড়াতাড়ি বলে উঠলেন, “স্টিমার ছাড়লেই আমরা চলে যাবো। বাইরে এখন অনেক ভীড় তো”। আম্মা লজ্জা পেয়ে বললেন, “ না, ঠিক আছে, বসুন।

আমরা কেবিনের বাইরে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠলে আম্মা মামাকে বললেন, “এগুলোকে ডেকে নিয়ে যা তো”। ডেকে গিয়ে দাড়াতেই দেখলাম। কাঠের সিড়ি উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে। আমাদের ভিষন ভাবে চমকে দিয়ে স্টিমারের ভো বেঁজে উঠলো। চারিদিকে মানুষের চিৎকার, চেঁচামেচি। তারমাঝে আস্তে আস্তে স্টিমার নড়ে উঠলো। রেলিং এ ঝুকে পড়ে দেখলাম পানিতে বিশাল আলোড়ন তুলে ফেনা কেটে বিশালায়তন চাকা ঘুরছে। পানির সেই আলোড়নে আশে পাশের ছোট ছোট নৌকাগুলো ঢেউয়ের আগায় দুলে দুলে উঠছে। স্টিমারটা ক্রমাগত ভো বাজিয়ে গলগল করে এক রাশ ধোয়া ছেড়ে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে।
ডেকের উপর অনেক মানুষ। পোটলাপুটলি নিয়ে বসে আছে। কেউ কেউ রেলিং এ ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আস্তে আস্তে তীরের মানুষজন, ঘরবাড়ী সব ছোট হতে হতে এত্তোটুকুন হয়ে গেলো। সন্ধ্যার অন্ধকারে চারিদিক ঝাপসা হয়ে এলো। মাঝে মাঝে নদীর বুকে কিছু মাছ ধরার নৌকার মিটমিট আলো দেখা গেলো। মামা আর এক মুহুর্ত দাড়াতে দিলেন না। ঘাড় ধরে কেবিনে নিয়ে গেলেন। যদিও ঘাড় ধরার কোনই মানে হয়না। হাতে ধরলেও পারতেন। কিন্তু ঐ যে বলেনা, খাসলত! অভ্যাস! উনার অভ্যাসই ছিলো এমন বিটকেলে। X((

পরদিন সকালেই আমাদের ঘাটে পৌঁছে যাবার কথা। ওখান থেকে ট্রেনে সোজা কুষ্টিয়া। ঘুম ভাংতেই অনুভব করলাম ষ্টিমার চলছেনা। লাফ দিয়ে উঠে বললাম, “আমরা কি এসে গিয়েছি?” আম্মা চিন্তিত মুখে বললেন, “চুপচাপ বসে আল্লাহকে ডাকো। ষ্টিমার মাঝ নদীতে নষ্ট হয়ে গেছে। চুপচাপ বসে নাস্তা করলেও আল্লাহকে ডাকতে ভুলে গিয়েছিলাম তা ঠিক মনে আছে। :P এক ছুটে ডেকে। চারিদিকে শুধু গেরুয়া রঙের পানি খলবল করে ছুটে যাচ্ছে। তার সাথে মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে একঝাক কচুরিপানার দঙ্গল। কোনো দিকে ডাঙ্গার কোন চিহ্ন মাত্র নেই। দূরে দূরে ছোট ছোট মাছ ধরার ডিঙ্গি নৌকা ঢেউএর তালে উঠছে আর নামছে।

সেজমামা নাস্তা খাচ্ছিলেন। আমি কেবিনে ঢুকতেই বললেন, “এই মিয়েটা বড্ড পাঁজি, আর বাইরে গেলি পরে ঠ্যাং ভেঙ্গে দেবো কয়ে দিলাম”। উনার হুমকিতে একটুও না ঘাবড়িয়ে বললাম, “আম্মা, আমরা কখন বিয়ে বাড়িতে যাবো”। আম্মা মাথায় হাত দিয়ে বললেন, “ ষ্টিমার ঠিক হলেই ইনশাল্লাহ যাবো”। কেবিনে গোল গোল ভারী কাঁচের জানালা দিয়ে আলো আসছে। ভাইয়া সদ্য উপহার পাওয়া আনাতলি রিভাকভের “ছোরা” শুয়ে শুয়ে পড়তে লাগলো। আমি কি করি? পুরো ষ্টিমার চক্কর দিয়ে লোহার সরু সিড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে নিচে নেমে গেলাম। ষ্টিমার এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে। নিচতলার জগত দেখে, আরো নিচে গিয়ে আমার তো চক্ষু চড়ক-গাছ। যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার বাম দিকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আর কয়েক জন মানুষ ক্রমাগত বেলচা দিয়ে আগুনে কয়লা ছুড়ে দিচ্ছে। একি আজব কান্ড! আমি হা করে কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম তা মনে নেই।

হঠাৎ কানে বিষ পিঁপড়ের কামড়ের মতো ব্যাথা অনুভব করে নিজের কানে সেজমামার হাতের উপস্থিতি টের পেলাম। প্রায় শূণ্যে ঝুলিয়ে আমায় কেবিনে নিয়ে এলেন। বেশী উত্তেজিত হলে মামা তোতলিয়ে কথা বলতেন। আম্মার জিজ্ঞাসু দৃষ্টির সামনে হড়বড়িয়ে বললেন, “ মেজেবু, একে কুতায় পেইয়েছি জানেন? বয়লারে চলে গিইয়েছিলো। ইমুন শয়তান খান্নাস মিয়ে আমি আর দেখিনিরে বাপু”। “ওর কান ছাড় খসরু”। থতমত খেয়ে মামা কান ছেড়ে কেবিনের বাইরে চলে গেলেন। আম্মা হতাশার দীর্ঘশ্বাষ ছেড়ে বললেন, “ তোকে নিয়ে আমি কি যে করি? দেখতো বাপী কতো লক্ষী হয়ে বই পড়ছে। তুই তো বসে ছবি দেখতে পারিস। বয়লারে কি ছোটরা যায়”? যায় কি না তা তো আমি জানিনা। আর ঐ জায়গার নাম যে বয়লার তাই কি ছাই জানতাম!:|

কানের যন্ত্রনায় কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিলো। কষ্ট বুকে চেপে কখন যেনো ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম ভাংতেই দেখি তখনও ষ্টিমার স্থির হয়ে আছে। আম্মা, ভাইয়া ঘুমুচ্ছে। আস্তে করে বিছানা থেকে নামতেই ভাইয়া চোখ খুলে তাকালো। ইশারায় দরজার দিকে ইঙ্গিত করতেই সেও নেমে এলো। পা টিপেটিপে দু’জনে বের হয়ে এলাম। উথাল পাথাল হাওয়ায় ডেকে খানিক্ষন ঘুরে বেড়ালাম। কোথা থেকে যেন গানের সুর ভেসে আসছিলো। মনে হলো উপর থেকে। উপরে উঠার সরু সিড়ি বেয়ে উঠতে লাগলাম। ভাইয়া দু’সিড়ি উঠেই নেমে গেলো। ভয় করছে তার। ভীতুর ডিমটাকে রেখে আমি একাই উঠে গেলাম। সিড়ির মাথায় মাথাটা উঁচিয়ে উঁকি দিতেই দেখলাম কয়েকজন যুবক গোল হয়ে বসে আছে। আর একজন চোখ বন্ধ করে গান গাইছে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো কখন যে নিজের অজান্তে উপরে উঠে গেছি নিজেও জানিনা। হুশ হলো যখন সেই যুবকের দল থেকে একজন প্রায় চাপা আর্তনাত করে উঠলো, এ কি! তুই এখানেও উঠেছিস”? সঙ্গে সঙ্গে গান বন্ধ হয়ে গেলো। সেজমামার হাত কানে পড়বার আগেই অন্য একজন আমায় আদর করে কোলে তুলে নিলো। বসিয়ে দিলো তাদের গানের আসরের মধ্যিখানে। সাঁঝের মায়াময় আলো-আধারিতে সেই গানের সুর আজো যেন আমার কানে বাজে। গানের পরে তারা সবাই আমার সাথে অনেক গল্প করলো। আমি যা বলি তারা তা শুনে কেনো যে হেসে গড়িয়ে পড়ে কে যানে! ওদের মাঝে দু’জন বল্লো, “আজ থেকে আমরা তোমার বন্ধু। আমরা যখন কুষ্টিয়াতে তোমার ওখানে যাবো তখন আমাদের চিনতে পারবে তো? ঘাড় কাত করে সায় দিলাম। তাহলে চলো এখন বন্ধুকে মার কাছে দিয়ে আসি”। মামার হাতে পড়তে হলোনা এই আনন্দেই আমি অস্থির। তাঁরা দু’জন কেবিনে এসে আমায় ঘাড় থেকে নামিয়ে আম্মাকে সালাম করলো। কথা দিলো, কুষ্টিয়ায় নানাবাড়ি যাবে আমাকে দেখতে।

রাতে ষ্টিমার ঠিক হলো। আর আমরাও পরদিন নানাবাড়ি পৌঁছে গেলাম। সেই দুই বন্ধু কিন্তু তাঁদের কথা রেখেছিলেন। এসেছিলেন। দু’জনই নানার ছাত্র ছিলেন। সবাই আমার সাথে ঠাট্টা করতে শুরু করলো। “ বাব্বাহ! তোর বন্ধুরা তো তোকে দেখার জন্য ছুটে এসেছে”। খোদ হিটলার নানা যখন আমায় ডেকে পাঠালেন, তাঁদের সামনে গেলাম, দু’হাত ভরে তাঁদের আনা উপহার নিলাম। কিন্তু তাঁদের হাজার প্রশ্নের একটারও উত্তর দিতে পারলাম না। হিটলার নানার সামনে আমি বোবা হয়ে ছিলাম। পরে জেনেছিলাম, সেই দু’জনের একজন বিখ্যাত গায়ক “আব্দুল জব্বার” ও পরবর্তীতে সিনেমার বিখ্যাত খলনায়ক “রাজু আহমেদ”। যিনি মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন। ৭৪/৭৫ সালে তিনি অজ্ঞাত আততায়ীর হাতে নিহত হন।

ছবি সুত্রঃ নেট। এই ছবিটি বেছে নিয়েছি ছাদে উঠার সিড়িটি এখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তাই।:)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:৪৮
৬৮টি মন্তব্য ৬৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অলীক সুখ পর্ব ৪

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৫

ছবি নেট

শরীর থেকে হৃদয় কে বিচ্ছিন্ন করে দেখতে চেয়েছি
তুমি কোথায় বাস করো?
জানতে চেয়েছি বারবার
দেহে ,
না,
হৃদয়ে?
টের পাই
দুই জায়গাতে সমান উপস্থিতি তোমার।

তোমার শায়িত শরীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় জেনে নেই!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫১

চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় তা জেনে নেই৷ এবার আপনাদের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঘটনা শেয়ার করবো৷ আমি কোরিয়ান অর্থনীতি পড়েছি৷ দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১৯৭০ সালের পর থেকে প্রায় আকাশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৮

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪


আজকের গল্প হেয়ার স্টাইল ও কাগজের মোবাইল।






সেদিন সন্ধ্যার আগে বাহিরে যাব, মেয়েও বায়না ধরল সেও যাবে। তাকে বললাম চুল বেধে আসো। সে ঝটপট সুন্দর পরিপাটি করে চুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×