somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কপিরাইট করিয়েছেন?

০১ লা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ হলো একুশে বইমেলা। বইমেলায় প্রকাশ হল নবীন-প্রবীণ লেখকদের কত বই। অনেক বইয়ের পৃষ্ঠা ওল্টালেই দেখা যায়, লেখক কপিরাইট দিয়েছেন স্ত্রী, বাবা, মা অথবা পছন্দসই কাউকে। এটি দেওয়া হয় এ কারণে যে, এই বইয়ের স্বত্ব লেখকের নিজের, তাঁর অবর্তমানে এই বইটির মালিক কপিরাইট পাওয়া মানুষটি।
কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি কপিরাইট অফিসে গিয়ে নিবন্ধন না করছেন, এমন কপিরাইটের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। ফলে অনেক সময় বই নকল হয়ে গেলে অথবা অন্য কেউ যদি বইটির মতো হুবহু আর একটি বই নিজের নামে চালিয়ে দিলে সে ক্ষেত্রে নকলকারীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারা যায় না।
এ জন্যই সরকার ১৯৬২ সালের কপিরাইট আইন ১৯৬৭ ও ২০০৫-এ সংশোধিত আকারে প্রণয়ন করেছে। ফলে এখন বই, অ্যালবাম, সিনেমা, চিত্রকর্ম—সবই কপিরাইট আইনে নিন্ধন করা যায়। নিবন্ধন করা হলে তখন নকলের ভয় কম থাকে। হলেও দ্রুত আইনগত সুবিধা পাওয়া যায়।
এবারের বইমেলায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মোহিত কামালের মোট তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে প্রকাশিত হয়েছে ২১টি বই। লেখক জানেনই না যে, এই বইগুলোর মালিকানা নিশ্চিত করতে হলে কপিরাইট অফিসে নাম নিবন্ধন করতে হবে। মোহিত কামাল বললেন, ‘আমি তো জানিই না। বইয়ে লেখা আছে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের কথা। কিন্তু এখন জানলাম যে এর আইনগত কোনো ভিত্তি নাই।’

কপিরাইট করবেন যেভাবে
কপিরাইট করতে হলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় গ্রন্থাগারের তৃতীয় তলায় অবস্থিত কপিরাইট অফিসে যেতে হবে। সেখানে নিবন্ধন ফরম পাওয়া যাবে। একটি ফরম নিয়ে প্রথমে দুটি ফটোকপি করতে হবে। এরপর এক হাজার টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সোনালী ব্যাংকে ট্রেজারির মাধ্যমে জমা দিতে হবে। টাকা জমা দেওয়ার রসিদে ৩৪৩৭০০০০১৮৪১ কোড নম্বরটি দিয়ে কপিরাইট অফিস, ঢাকা লিখতে হবে।
এরপর টাকা জমা দেওয়ার রসিদসহ ফরম পূরণ করে (মূল ফরমের সঙ্গে দুটি ফটোকপি) কপিরাইট অফিসে জমা দিতে হবে। এরপর কপিরাইট নিজের নামে করলে ১৫০ টাকা দামের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। সেখানে বলতে হবে, এই বইটি আমার, এটি মৌলিক রচনা, কোথাও থেকে নকল করে এটি লিখিনি এবং এর মালিকানা আমার নিজের। যদি বইয়ের প্রচ্ছদ লেখক নিজে না করে অন্য কোনো শিল্পীকে দিয়ে করান, তবে সেই শিল্পীর কাছ থেকে অনুমোদনপত্র নিতে হবে এবং ২৫০ টাকা দামের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তা ঘোষণা করতে হবে। যদি বইয়ের মালিকানা নিজের নামে না রেখে স্ত্রী অথবা সন্তানদের নামে করতে চান, তবে ২৫০ টাকা দামের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তা ঘোষণা করে কপিরাইট অফিসে জমা দিতে হবে। যে বইয়ের জন্য নাম নিবন্ধন করাবেন, তার দুই কপি ফরমের সঙ্গেই জমা দিতে হবে কপিরাইট অফিসে। জমা দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে আপনাকে নাম নিবন্ধনের একটি সনদ দেওয়া হবে।
বই প্রকাশিত হয়েছে অনেক, কিন্তু কতগুলো বইয়ের লেখক-নাম নিবন্ধন করা হয়েছে?
কপিরাইট অফিসের পরীক্ষক রইসউদ্দিন ইসলাম খান বলেন, ‘আসলে আমরা এই কপিরাইট সম্পর্কে অনেকেই জানি না। ফলে বই অনেক বেরোলেও বইমেলার পর এখন পর্যন্ত সাত থেকে আটটির নিবন্ধন করানো হয়েছে। তবে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবারের বইমেলায় আমরা নিজেরাই একটি স্টল দিয়েছিলাম। লোকজন এসেছেন, জেনেছেন, কেউ কেউ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো শিল্পকর্মের স্রষ্টা বাধ্য নন নাম নিবন্ধন করাতে। কিন্তু যখন সিনেমা, অডিও অ্যালবাম, বই, চিত্রকর্ম পাইরেটেড হয়, মালিকানা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়, তখনই অনেকে কপিরাইট অফিসে এসে বলে, ভাই, দু দিনের মধ্যে একটা ছাড়পত্র দেন। কিন্তু কোনোভাবেই আমরা ৪৫ দিনের আগে ছাড়পত্র দিতে পারি না। তবে এখন বই বা সিনেমার নাম নিবন্ধন করার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।’
জেনে নিলেন কপিরাইটের নিয়মকানুন। আপনার মূল্যবান সৃষ্টি যেন আপনার নামেই থাকে, সে জন্য এখনই করিয়ে নিন কপিরাইট।

সূত্র: প্রথম আলো (নকশা:০১-০৩-২০১১)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১১ দুপুর ২:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×