নববর্ষার নব বারিধারা , ভেজা কদম ফুল,
জল - কাদা,
কাশফুল- শরতের আকাশে উড়ে যাওয়া সাদা মেঘগুচ্ছ,
সাদা বক,
জ্বলজ্বলে নীল নভো- উড়ন্ত চিল,
গাংচিল,
হিমেল বাতাস- বাতাসে ভেসে আসা কোন ফুলের গন্ধ,
বুনো ফুল,
আমাকে কবিতা লিখতে বলে।।
চৈত্রের প্রচন্ড উত্তাপ- ফেটে চৌচির মাঠ,
মরুময়,
সবুজ ফসলের ক্ষেত, কৃষকের মুখ,
নবান্ন,
বিলের জলে শাপলা-শালুক, ছোট ছোট মাছ,
রং-বেরং,
শীতের কুয়াশা, ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু,
মুক্তার মত,
আমাকে কবিতা লিখতে বলে।।
ঝুনঝুনি হাতে ছোট্ট শিশু- আধো আধো বোল,
হামাগুড়ি দেয়,
উড়ন্ত রঙ্গিন ঘুড়ি- নাটাই হাতে বালক,
মুক্তবিহংগ,
বেনী দোলানো উচ্ছল কিশোরী, লাল ফিতা,
লাল চুড়ি,
সুশ্রি অথবা কুশ্রি তরুনী, প্রেমময় দুই চোখ,
প্রেমিকা,
আমাকে কবিতা লিখতে বলে।।
বয়ে চলা স্রোতস্বিনী, শান্ত অথবা বিক্ষুব্ধ,
পালতোলা নৌকা,
নদী ভাঙ্গা বিস্তির্ন জনপদ, গৃহহীন মানুষ,
হাহাকার,
সমুদ্রের গর্জন- ফেনিল ঢেউ, সুদীর্ঘ সৈকত,
নোনা জল,
দূর পাহাড়ের চূড়া, মনে হয় আকাশ ছুয়েছে,
ঝর্নাধারা,
আমাকে কবিতা লিখতে বলে।।
কালো কালো কাক, কা-কা করে,
আমাকে ওদের দলভুক্ত করতে চায়।
সময়ের ব্যাস্ততায় আমি অস্থির হই,
কিন্তু এই যান্ত্রিক নগর আমাকে-
যন্ত্র হতে নিষেধ করে।
আমার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আমার ধর্ম-
আমাকে দূরে যেতে দেয় না।
নানা বর্ন, নানা ধর্ম, নানা জাতপাত,
নিরন্ন, আধপেটা অথবা উদ্ধৃত খাবার যার,
দারিদ্র, শোষন, বৈভব- সহাবস্থান,
রক্তিয় অথবা আত্মীয়, কাছের দূরের
সবাই বলে কবিতা লিখ।।
টং ঘরের গরম চা, সিগারেট ভাগাভাগি,
ধোয়া,
অহেতুক হৈ-চৈ, আড্ডা, নানা পরিকল্পনা,
বাহাস,
বন্ধুরাও বলে - কবিতা লিখ।।
আমার জন্মভুমির দীর্ঘ ,রক্তাক্ত ইতিহাস,
গৌরব,
মুক্তি সংগ্রাম, লক্ষ প্রানের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা,
বিজয়,
আমার কবিতা লেখার প্রেরনা।
আমি কবিতা লিখতে পারি না
তবু আমি লিখে যাই।
আমি কবি হতে পারি নি
তবু কবি হতে চাই।
আমার আছে রক্তে রঞ্জিত বর্ণমালা।।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১:৪৮