somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি প্রভা বলছি... সব দোষ কি আমার? আমাদের সেলিব্রেটিদের অবস্থা ও আমাদের বিনোদন সাংবাদিকদের দীনতা

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফিচারটি গত ২২শে ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ ছাপা হয়েছে.....একটু কেটে ছেটে এখানে কপি পেস্ট করলাম।


১১ ফেব্রুয়ারি, রোববার। বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ অপূর্ব-প্রভার ডিভোর্সের খবর ছাপা হয়েছে। সারাদিন এ নিয়ে নানা মানুষের কৌতূহল। ওইদিন রাত ৮টা ১২ মিনিটে আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে। নিভু নিভু কণ্ঠের উচ্চারণ, 'আমি প্রভা বলছি...'। যাকে কেউ খুঁজে পাচ্ছে না, তার ফোন! বিস্ময়করই বটে। প্রভা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার কিছু কথা আছে। কথা তো থাকবেই। জল অনেক ঘোলা হয়েছে। কিন্তু কখনো মুখ খুলেননি তিনি। এবার মুখ খুলবেন। বললেন, 'শুধু একতরফাভাবে সবাই আমাকে দোষারোপ করেই গেল। আমি দোষী। কিন্তু সব দোষই কি আমার? এর ভাগিদার কি আর কেউ না?' প্রভার কথায় যুক্তি আছে। এক হাতে তালি বাজে না কখনো। তিনি জানান, ডিভোর্স নেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না তার। সংসার বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি। তিনি বলেন, 'আমার চৌদ্দ গোষ্ঠীর মধ্যে কারও ডিভোর্স হয় নাই। আমার হইছে। আমি এটা চাই নাই। সংসার করার অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু পারি নাই।' প্রভার এ কথার সঙ্গে অপূর্বর কথার কোনো মিল নেই। অপূর্বও তো সংসার করতে চেয়েছেন। বিয়ের পরপর, এমনকি রাজিবের সঙ্গে প্রভার অনৈতিক ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ হওয়ার পরও অপূর্ব বলেছিলেন, তিনি প্রভার হাত কখনো ছাড়বেন না। এটিএন নিউজ-এ মুনি্ন সাহার উপস্থাপনায় অপূর্ব ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি প্রভার পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তাহলে সমস্যা হলো কোথায়? সমস্যা আছে। সেই সমস্যার কথা জানিয়ে প্রভা আবারও প্রমাণ করলেন, সত্যিই সর্ষের মধ্যে ভূত থাকে।

একজন ভালো অভিনেতার নাম অপূর্ব

অভিনেতা অপূর্ব সত্যিই একজন ভালো অভিনেতা। পর্দায় তার অভিনয় দেখে মুগ্ধ অনেকে। কিন্তু বাস্তবেও কি তিনি অভিনয় করেন? প্রভার কথা শুনে এ প্রশ্নই জাগে মনে। প্রভা একটি অতীত মনে করিয়ে দেন। তাদের বিয়ের পরপর বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ বেশ কিছু খবর ছাপা হয়েছিল। তখন অপূর্ব আমাকে ফোন করেছিল। প্রভার দাবি, ওই সময় সে ফোন কনফারেন্সে ছিল। আমার সঙ্গে অপূর্বর আলোচনা সেও শুনেছে। প্রভা সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, 'বলেন ভাই, তখন অপূর্ব আপনাকে বলে নাই, সে আমার পাশে থাকবে? বলছে। আমি সব শুনছি। ও তো আমার সবই জানত। তাহলে এখন কেন উল্টা হইল? ও তো আপনাকে ফোনে বলছিল, অনেকের জীবনেই উল্টা-পাল্টা ঘটনা থাকে, সেগুলো ধরে বসে থাকলে চলে না।' হ্যাঁ, প্রভার কথা সত্য। অপূর্ব কথাগুলো বলেছিল। সে তখন এও বলেছিল, 'অনেক দিনের প্রেম থাকলে সেক্স হতেই পারে। বর্তমানে যারা প্রেম করছে কেউই ভার্জিন না। আমিও ভার্জিন না, তুমিও ভার্জিন না। সমস্যা হলো আমাদেরটা কেউ জানে না, ওরটা [প্রভা] সবাই জেনে গেছে। রাজিব [প্রভার সাবেক প্রেমিক] ট্র্যাপে ফেলে ভিডিও করেছে। এখানে প্রভার দোষ নেই। তাহলে কেন পত্রিকাগুলোতে ওকে দোষারোপ করা হচ্ছে?' অপূর্ব এ কথাগুলো শুধু আমাকে না, অনেক সাংবাদিককেই বলেছিলেন। সবার কাছে তখন সে মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন একজন বিশুদ্ধ মানুষ। অপূর্ব কি আসলেই তাই? প্রভা এর উত্তরে বলেন, 'সবই ওর ঢঙ, অভিনয়। বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, ও আমার গায়ে হাত তুলত। প্রায়ই মারধর করত। আগেকার দিনের সিনেমায় দেখেন নাই, শাবানা-ববিতারা কত কষ্ট করে সংসার করত, আমিও ওইভাবে সংসার করছি। মার খেয়ে ব্যথা পাইছি। ব্যথা নিয়ে অপূর্বর জন্য রান্নাও করছি। আমি সংসার করতে চাইছিলাম। তাই মুখ বুঝে সব সহ্য করছি। কিন্তু পারি নাই। ও আমাকে সহ্য করতে পারত না।'

অনেকেই জানে, অপূর্বর মাথা কিছুটা গরম। প্রভাও সেটা জানত। অপূর্বর আরও কিছু মানবিক সমস্যা আছে, প্রভা সেটাও জানত। তবুও কেন প্রেম হলো? এ বিষয়ে প্রভা বলেন, 'আমি জানি না, কিচ্ছু জানি না। কিভাবে যেন কি হয়ে গেল। বিশ্বাস করেন ভাই, আমি কোনো দিনও ওরে পছন্দ করতাম না। অনেকেই জানে। আমি সবার কাছে অপূর্বরে নিয়া হাসহাসি করতাম। বলতাম, কাইল্লা পোলা, ও আবার নায়ক হইছে। একসাথে কাজ করলে কি হবে, দূরে দূরে থাকতাম। মোটকথা ওরে ভালোই লাগত না।' ভালো লাগা প্রসঙ্গে প্রভা বলেন, 'অপূর্ব খুব ভালো করে জানে, কিভাবে মেয়েদের দুর্বল করতে হয়। ওর কেয়ারিং দেখে আমি পাগল হইছি। পাগলের মতোই ভালোবাসছি।' প্রভার কথায় বোঝা যায়, অনেক মেয়ের সঙ্গে অপূর্বর প্রেম ছিল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'একটা কথা শুনলে অবাক হবেন, আমাকে বের করে দেওয়ার পনের দিনের মাথায় ওর বাসায় একটি মেয়ে আসে। ওর কাছে প্রায়ই মেয়ে আসত। তারা বাসায় বউদের মতোই থাকত। রান্নাবান্না করত। আর এ নিয়া ওর বাসার মানুষের কোনো মাথাব্যথা নাই।'

ডিভোর্সের ব্যাপারে প্রভা বলেন, 'অনেকে বলছে, ডিভোর্সে আমার মন খারাপ হয় নাই। আরে কষ্ট তো আমার হইছে, হয় নাই অপূর্বর। ও তো ডিভোর্স দিয়া বাঁইচা গেছে।' দেনমোহরের ব্যাপারে প্রভার ভাষ্য : 'সবাইকে বলা হচ্ছে, আমি দেনমোহরের টাকা পাইছি। আসলে আমি টাকা পাই নাই। অপূর্ব আমাকে বলছে কোর্টে গিয়া টাকা নিতে। আমি এটা চাই না। কোর্টে গেলে নোংরামি আরও বাড়বে। আর আমি এত ছোটলোক না যে ডিভোর্সের পর অপূর্বর টাকা নেব।'




এখন যেভাবে আছি বেঁচে

আমাদের নারী নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী তখন বলেছিলেন, 'অপূর্ব অনেক ভালো একটি ছেলে। ও বিয়ে করে প্রভাকে বাঁচিয়েছে।' এখন প্রশ্ন জাগে, তাহলে ডিভোর্স কেন হলো? ডিভোর্স দিয়ে কি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল প্রভাকে; একজন মানুষকে? প্রভা এখন একাকী পার করছেন তার জীবন। কোথাও বের হতে পারছেন না। তার পৃথিবী এখন একটি ফ্ল্যাটের মধ্যে আটকে গেছে। জানালা দিয়ে যতদূর চোখ যায়, ততটুকুই তার আকাশ। প্রভা বলেন, 'আমি কিভাবে বেঁচে আছি তা আমি জানি। আমাকে যদি মেরে ফেলত তাও ভালো ছিল। আমি এখন যাবজ্জীবনের আসামি।' বাবা-ভাইকে মুখ দেখাতে পারেন না প্রভা। এক বাসায় থেকেও স্বজনদের সঙ্গে দূরত্ব অনেক। তিনি বলেন, 'আমি আমার বাবা-ভাইয়ের দিকে তাকাতে পারি না। আমি ওদের মাথা নিচু করে দিছি।' প্রভা এখন নিজের ভুল বুঝতে পারছেন। কিন্তু এর কোনো সমাধান নেই। সব ভুলের সমাধান হয় না। তিনি বলেন, 'আমি ভুল করছি। এর জন্য সবসময় তওবা করি। বলি, আল্লাহ তুমি আমাকে মাফ করে দাও।' প্রভা তিলে তিলে টের পাচ্ছেন বাংলাদেশের নাটকে তার কি অবস্থান ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার কাছের ডিরেক্টর যারা আছে, তারা ভালো একটা স্ক্রিপ্ট পেলে আমারে ফোন দেয়। তখন আমার বুকটা ফেটে যায় ভাই। আমি কাঁদি। আমি এখন বুঝি আমি কি হারাইছি। প্রেম-ট্রেমের দিকে না তাকাইয়া যদি শুধু কাজ করতাম তাহলে আজকে আমার এ সর্বনাশ হইত না।'


এই হল অবস্থা। এরা আবার আমাদের সেলিব্রেটি, আমাদের তারুন্যের ড্রিম!! এদেশের তরুনদের ভবিষ্যৎ ভাবলে কষ্ট হয়।
বিনোদন সাংবাদিকের অবস্থা দেখলে আরো হতাশ লাগে। এটা কি ধরনের ফিচার?

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ২:০৬
১৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×