somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বইমেলায় আমাদের বই “জাতীয় সম্পদ বহুজাতিক পুঁজি ও মালিকানার তর্ক”

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবারের বইমেলায় আমাদের বই “জাতীয় সম্পদ বহুজাতিক পুঁজি ও মালিকানার তর্ক”। ভূমিকা: অধ্যাপক আনু মুহম্মদ। প্রকাশক: সংহতি। পৃষ্ঠা ১৪৪। গায়ের দাম ১২০ টাকা। পাওয়া যাবে বাংলা একাডেমির গেটের বাইরে সংহতি’র স্টলে (স্টল নং ৪৩৮) আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ থেকে।

আনু মুহম্মদের ভূমিকা থেকে

গ্রন্থটি গত দুই বছরে লিখিত খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তথ্যবহুল ও বিশ্লেষণমূলক কয়েকটি প্রবন্ধের সংকলন। প্রবন্ধগুলির রচয়িতা, কখনও এককভাবে কখনও যৌথভাবে, কল্লোল মোস্তফা, মাহবুব রুবাইয়াৎ এবং অনুপম সৈকত শান্ত। এই তরুণ লেখকেরা সকলেই বিজ্ঞান ও প্রকৌশল শাস্ত্রের শিক্ষাপ্রাপ্ত। সেই শিক্ষার সঙ্গে সমাজ অর্থনীতি ও রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহ ও অঙ্গীকার মিলে তাঁদেরকে সক্ষম করে তুলেছে বেশ কিছু জটিল বিষয় মোকাবিলা, উন্মোচন ও বিভ্রান্তি দূরীকরণে।

বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে জনগণ ও তার জগতকে বিপর্যস্ত করে আধিপত্য স্থাপন এবং লুণ্ঠন ও পাচারের প্রকল্পকে ‘উন্নয়ন প্রকল্প’ হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য করে উপস্থিত করার বেশ কিছু পথ আছে। জনস্বার্থবিরোধী নীতি, ঘুষ দুর্নীতি ছাড়াও আরও যেসব পথ এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তার মধ্যে অন্যতম হল, তথাকথিত বিশেষজ্ঞদের ব্যবহার করে এসব প্রকল্প মহিমান্বিত করা এবং মিডিয়ার উপর আধিপত্যের সুযোগে তার পক্ষে প্রচারণা চালানো। বিশ্বব্যাংক প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংস্থা এসব অপকর্মের গুরু, তারা বহুজাতিক ও দেশীয় লুটেরা পুঁজির প্রধান মাধ্যম ও মুখপাত্র, আর সরকার হচ্ছে বাস্তবায়নের মেশিন। এই দুষ্ট বিশ্বজোটের কাজে ভাড়া খাটার জন্য উদগ্রীব কনসালটেন্ট তাই সবসময়ই সুলভ। এরাই বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এ কথাটা সবসময় মনে রাখা দরকার যে, কোন ডিগ্রীপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ যখন ভাড়ায় খাটেন কিংবা কোম্পনির কর্মচারী হন তখন তিনি আর বিশেষজ্ঞ থাকেন না, হয়ে পড়েন কোম্পানি প্রচারক। তখন তাকে সেভাবেই চিনতে হবে।

এসব কোম্পনি প্রচারক ও প্রচারণা দিয়ে বাংলাদেশের মতো দেশে অনেক সর্বনাশা প্রকল্প ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রচারণার ধারে মানুষও অনেক ক্ষেত্রে এগুলোকে তাদেরই প্রকল্প বলে গ্রহণ করেন। কিন্তু এগুলোর সর্বনাশ যখন জনগণের সামনে স্পষ্ট হয় তখন এর জন্য দায়ী ব্যক্তি, কোম্পানি, কনসালট্যান্ট বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় না। দায় টানতে হয় দেশ ও দেশের জনগণকে।
এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা দেশি-বিদেশি অপশক্তির বিরুদ্ধে জনগণের সংগঠিত শক্তির বিকাশ অপরিহার্য। কিন্তু এই শক্তির বিকাশের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে, কোম্পানি প্রচারকদের তৎপরতা ও মিডিয়া প্রচারণায় সমাজে উন্নয়ন-প্রগতি সম্পর্কে যে ভুল বিশ্বাসগুলো তৈরি হয়, তার বিরুদ্ধে তথ্য ও জ্ঞানের লড়াই। প্রতিষ্ঠিত বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ এখন শত্রুপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, সুতরাং তরুণ প্রজন্মকে নিজেদের ঘাড়ে এর বড় দায়িত্ব নিতেই হবে। তথাকথিত ডিগ্রী এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির চাইতে এখানে গুরুত্বপূর্ণ নির্মোহ জ্ঞান, পরিশ্রম, দায়িত্ববোধ ও জনগণের পক্ষে সক্রিয় অবস্থান। বর্তমান গ্রন্থটি এরই একটি নমুনা।

সূচি:

অল-ক্লিয়ার নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ ?

সাগরের গ্যাস ব্লক ইজারা: এবার সাগর লুটের লাগল ধুম

কনোকো-ফিলিপস, শেভরন ও এশিয়া এনার্জির হয়ে বাংলাদেশকে মার্কিন চাপের মূল উইকি দলিল

জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স/পেট্রোবাংলার সক্ষমতা, সংকট ও সম্ভাবনা প্রসঙ্গে

এবার সিসমিক সার্ভের কাজও তুলে দেয়া হচ্ছে বিদেশী কোম্পানির হাতে!
গ্যাস উৎপাদন কে করবে

উন্মুক্ত কয়লা খনন: বৈদেশিক দাওয়াই এর গুণবিচার

আনু মুহম্মদের প্রবন্ধ, জোবায়ের জামানের "বিশেষজ্ঞ" প্রতিক্রিয়া এবং "দেশের স্বার্থ"

প্রস্তাবিত খসড়া কয়লানীতি ২০১০ সম্পর্কে জ্বালানী মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরিত অভিমত

বড়পুকুরিয়া: মাটির নীচের উন্মুক্ত খনি, মাটির উপরের দু:খ

ল্যাটিন আমেরিকার তাম্বোগ্রান্দে- আরেক ফুলবাড়ি

ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির লাভ-লোকসান

বৈষম্য মুক্ত লোডশেডিং চাই!

বাংলাদেশে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ নিয়ে প্রশ্নোত্তর

সাগর লুট নিয়ে প্রশ্নোত্তর

আমাদের ভূমিকা

এই বইয়ের লেখাগুলো ২০০৮ থেকে ২০১০ সালে বিভিন্ন সময়ে সামহোয়ারইনব্লগ এ দিনমজুর ব্লগ হিসেবে লিখিত হয়েছে। কিছু কিছু লেখা তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ওয়েবসাইট এ প্রকাশিত হয়েছে এবং সাপ্তাহিক ”বুধবার” পত্রিকাতেও ছাপা হয়েছে। মূলত জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনের যৌক্তিকতার ভিত্তি প্রসারিত করা, পুজিবাদী উন্নয়ণ দর্শনের প্রেক্ষিতে সেটাকে বোঝার চেষ্টা করা এবং অন-লাইন কমিউনিটি ও রাজনৈতিক কর্মীদের মাঝে জাতীয় সম্পদ ও জাতীয় মালিকানার তর্কগুলোকে হাজির করার আগ্রহ থেকেই আমাদের এই লেখা। ব্লগে লেখার একটা সুবিধা হলো, কোন লেখা প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে কয়েকশো পাঠক সেটা পড়ে ফেলে, বিভিন্ন মন্তব্য করে এবং লেখাটির ভালো-মন্দ, পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে প্রাণবন্ত তর্ক জমে উঠার সুযোগ তৈরী হয়। ফলে ব্লগের লেখায় কোন দুর্বলতা বা ফাঁকি ঝুকি রাখার কোন সুযোগ সাধারণত থাকে না কারণ কারো না কারো চোখে সেটা পড়বেই এবং লেখককে তার জবাব দিতে হবে নতুবা সংশোধন করতে হবে। তাছাড়া প্রায়শই বিভিন্ন পাঠক/ব্লগার একটি বিষয়কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে যাচাই করার কারণে এবং সেসব নিয়ে নতুন তর্ক তৈরী হওয়ার কারণে অনেক সময় লেখার মধ্যে নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হয় কিংবা একেবারে নতুন আরেকটি লেখাও তৈরী হয়। আমাদের একাধিক লেখার ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটেছে।

ব্লগের ভারচুয়াল জগৎ থেকে লেখাগুলো বাস্তব জগতে হাজির করার জন্য এর আগে আমরা ”নাইল্যাকাডা” পত্রিকার তিনটি সংখ্যা প্রকাশ করেছি। আরো বেশি সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌছানো এবং অনলাইন কমিউনিটির বাইরে থাকা সারাদেশের জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের কর্মী ও সমর্থকদের কাজে লাগানোর তাগিদেই সংহতি প্রকাশনির উদ্যোগে জাতীয় সম্পদ বিষয়ে এযাবৎ লিখিত সবগুলো লেখা একটি পুস্তক আকারে হাজির করা হলো। এ উদ্যোগটি নেয়ার জন্য সংহতি প্রকাশনির ফিরোজ আহমেদেকে বিশেষ ধন্যবাদ। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনুমুহম্মদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যাস্ততার মাঝে সময় করে বইটির একটি চমৎকার ভুমিকা লিখে দেয়ার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩৭
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×