জানিনা কেন জানি বার বার মা প্রসঙ্গটা চলে আসে। কখনো নিজের মা, কখনোবা বন্ধুর মা। কিন্তু বন্ধুর মা-ও কখনো নিজের মায়ের মতোই অনেক ভালোবাসার হয়। আমার প্রিয় বন্ধু গালিব, আপনারা অনেকেই হয়তো চিনতে পারেন। "শহরতলী" ব্যান্ডের গালিবের কথা বলছি। দীর্ঘদিনের বন্ধু ও। দেশ ছেড়ে আসার পরেও যোগাযোগ নিয়মিতই ছিলো, এখনো আছে। আজ হঠাৎই ওর ফেসবুকের পোস্ট দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল।
ঠিক ৬ বছর আগে এমনি কোন একদিনে মা(গালিবের ও আমার) আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, অনেকটা হঠাৎ করেই। তার চলে যাওয়াটা ছিলো নিতান্তই অপ্রত্যাশিত, সুস্থ-সবল একটা মানুষ যার সাথে আমার কথাও হলো চলে যাওয়ার একদিন আগেও। অসম্ভব ভালোবাসতেন আমাকে, কখনো ছেলের বন্ধু বলে ভাবেননি। শাসন চলতো সমান তালে। মাঝে মাঝেই বকুনি খেতাম। একবারতো লুকিয়ে সিগারেট খেতে গিয়ে ধরাই পড়ে গেলাম, তারপার আর যাই কোথায়!
প্রায় বিকেলেই গালিবের বাসায় চলতো জমজমাট আড্ডা আর চা। গালিবের কবিতা আবৃত্তি চলতো একের পর এক। অসম্ভব অভিমানী আর প্রতিভাবান ছেলে গালিব, মাঝে মাঝে মনে হতো আবৃত্তির জন্যই ওর জন্ম, সাম্প্রতিক সময়ে গানও গাইছে। ওদের প্রথম এ্যালবাম "বরাবর শহরতলী"-র গানগুলো শুনেছি, বেশ ভালো হয়েছে। তবে কিছুটা দুঃখবোধ রইলো বইকি! মা, দেখে যেতে পারলে অনেক খুশি হতেন।
মা'র কথা বলছিলাম। আমাদের নিজেদের গ্রামের বাড়ি আর গালিবের নানা বাড়ি বেশ কাছাকাছি, গালিবকে তাই নিজেদের এলাকার ছেলে বলেই মনে হতো। মা'র কথাগুলো আমার নিজের মা'র অনেক কথার সাথে হুবুহু মিলে যায়, উচ্চারণও প্রায় একইরকম ভাবে করতেন। শ্বাস্বত বাংলার নারী বলতে যা বোঝায়, মা তেমনই ছিলেন। কিন্তু কোন এক অজানা অভিমানে মা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আজ জীবনের চলার পথে হঠাৎ যখনই থমকে দাঁড়াই, একটু অবসর মেলে পেছনে ফিরে দেখার, তখনই মায়ের কথা মনে পড়ে। আজও ভাবতে অবাক লাগে মা নেই, তবুও মায়ের স্মৃতি, কথা সব মনে পড়ে। যেখানেই থাকো, যতদূ্রেই থাকো, মা তুমি ভালো থেকো, আর জেনো তোমার ছেলেরা তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে।