বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও কয়েকটি ম্যাচ বাংলাদেশে হচ্ছে বলে আনন্দের সীমা নেই অনেকেরই। সেই অনেকের মধ্যে আমি একজন হতে পারলাম না। আমার আনন্দের সীমা আছে। ঘরের চার দেয়ালই আনন্দের সীমা। কারণ, মাঠে যাওয়া দূরে থাক মাঠের ধারেকাছেও খেলা চলাকালীন যাওয়া সম্ভব না। টিভিই সব ভরসা। তার উপর যদি খেলার সময় কারেন্ট যায় তাহলে তো বোঝেনই।
তবে ভাগ্য ভালো, উব্দোধনী অনুষ্ঠানের সময় কারেন্ট যায় নাই, ডিশও যায় নাই। শান্তিমতো পুরোটা প্রোগ্রাম দেখতে পারলাম। প্রথমে তো খুঁজেই পাই না কোন চ্যানেলে দেখাচ্ছে। ভাইয়া কতক্ষণ এনটিভি-ইটিভির খবর-টবর দেখে তারপর চ্যানেল ঘুরিয়ে বিটিভিতে রাখলো। বিটিভিও খবর শেষ করে সঙ্গীতানুষ্ঠান শুরু করে দিল। কী আর করা! বসে বসে সঙ্গীত শুনতে থাকলাম। একটু পরে বিডিনিউজে দেখলাম অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। তবুও বিটিভিতে দেখানোর খবর নেই। পরে খেয়াল করলাম আমরা বিটিভি ওয়ার্ল্ড খুলে বসে আছি। বিটিভি ওয়ার্ল্ডে কেন দেখালো না এটা না বুঝে শেষে অনেক খুঁজে ইএসপিএন বের করলাম। ততক্ষণে জাতীয় সঙ্গীত শুরু হয়ে গেছে। এর আগে কী মিস করেছি আল্লাহই জানে।
জাতীয় সঙ্গীতের সময় মাঠটা অসাধারণ লাগছিল। দূরের ফ্লাডলাইটগুলো কেবল সবুজ আর লাল আলো তৈরি করে অদ্ভূত এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। সম্ভবত প্রথমবারের মতো আমার মনে হলো সবুজ আর লাল আসলে দুইটা খুব সুন্দর রঙ।
যাই হোক, অনুষ্ঠানের একটা প্রধান অংশ ছিল অধিনায়কদের রিকশায় চড়ে মাঠে প্রবেশ করা। টাইমস অফ ইন্ডিয়া না কে যেন ঠিকই বলেছে, দুই-একটা রিকশায় হুড উঠানো ছিল তাই দর্শক সারি থেকে হয়তো তাদের চেহারা দেখা যায়নি ভালো করে। কিন্তু টিভিতে দেখে মনে হচ্ছিল এই তো সামনে দিয়ে যাচ্ছে!
তখন অবশ্য একটা চিন্তা হচ্ছিল। যদিও রিকশাগুলো স্পেশাল অর্ডারে বানানো , যদি কোনো রিকশার চেইন পড়ে যেত তখন, অবস্থাটা কী হতো? বিশেষ করে অন্যান্য দেশের অধিনায়কদের কারো ক্ষেত্রে এটি হলে রিকশাওয়ালা যখন চেইন লাগাতে পেছনে যেত, তখন বেচারার কী মনে হতো? মনে হতো না যে পিছনে কী করে? (তারা তো রিকশার মেকানিজম জানে না )
যাই হোক, পুরো অনুষ্ঠানের রিভিউ লিখতে ইচ্ছে করছে না। শিল্প ভবনের পাশে ক্রিকেট খেলাটা যেমন অসাধারণ ছিল তেমনি ঝুঁকিূপূর্ণও ছিল। এমন স্টান্ট কেমনে করলো তারা এটাই ভেবে অবাক হতে হয়।
আর পুরো অনুষ্ঠানে বেখাপ্পা লাগলো দুইটা জিনিস। মন্ত্রীদের বক্তব্য, আজব উচ্চারণ এবং ভুল (টু জিরো জিরো ওয়ান) এমনকি প্রধানমন্ত্রীও সম্ভবত ২০০১ বলেছেন। আরেকটা জিনিস মেজাজ খারাপ লেগেছে সেটা হলো মমতাজের গান। আমার প্রথম কথা হলো বিশেষ করে রুনা লায়লা আর সাবিনা ইয়াসমিনের মতো মানুষের সাথে তাকে এক মঞ্চে কেন আনা হয়? তার যোগ্যতা কী আছে? তারপর সে বিশ্বকাপে নান্টু ঘটকসহ চরম বেমানান সব গান গেয়ে অনুষ্ঠানের ফ্লেভারটাই নষ্ট করে দিল।
অনুষ্ঠানে কার কেমন লাগলো জানান।
আনরেজিস্টার্ড পাঠকরা মন্তব্য করুন এখানে ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১১ বিকাল ৩:১৬