অবশেষে আজ বইমেলায় গেলাম।ভালোবাসা দিবসে ভালবাসাহীন বইমেলা।গাড়ি থেকে টি,এস,সির মোড়ে নেমে অবাক হয়ে চারপাশে তাকালাম।কেমন যেন একটা শান্তিময় পরিবেশ।ফেরিওয়ালদের ভীড় নেই,রাস্তায় কোন জাম নেই।মানুষ জন অল্প।সবচেয়ে মজার ব্যাপার সেখানে কোন পুলিশের গাড়ি ছিল না।ভালোবাসা দিবস অথচ কোন জুটি দেখছি না।বইমেলায় ঢুকতে গিয়ে আরেকটি ধাক্কা খেলাম।কোন লাইন নেই।আজ এত নেই নেই কেন?বুঝতে পারছিলাম না।্বইমেলায় ঢোকার সাথে সাথে দেখলাম কোথায় যেন গান বাজছে,গ্রন্থমেলা গ্রন্থমেলা।আমি তন্ময় হয়ে শুনলাম।আমার জীবনে এত শ্রুতিমধুর গান আর শুনি নাই।আহা!এখনও কানে বাজছে।
যাই হোক,আমার অবাক হওয়া তখনো শেষ হয়নি।এবার স্টলের সংখ্যা অনেক কম,তাই ফাকা জায়গা অনেক।মনের আনন্দে হেটে বেড়াচ্ছি আর বই দেখছি।
মাওলা ব্রাদার্স থেকে আহমদ ছফার উপন্যাসমগ্র কেনার জন্য দাম জানতে চাইলাম।বলল,দশ টাকা।
কি বলেন ভাই,দশ টাকা!
না,আসলে অনেক মোটা বই তাই দাম একটউ বেশী হয়ে গেছে।
আসলেই দাম অনেক বেশি।
অন্যপ্রকাশের সামনে গিয়ে দেখি হিমু ঘুরে বেড়াচ্ছে।পাশে রুপার মতো একজনকে দেখলাম।আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে বললাম,আপনার সাথে দেখা করা আমার সার জীবনের স্বপ্ন।হিমু আমাকে বলল,যা এই মেয়েটাকে নিয়ে যা।আমাকে বাঁচা।
অতঃপর আমার সঙ্গি হল রুপা।মনে মনে হিমুকে হাজার কোটি ধন্যবাদ দিলাম।ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসা পেয়ে গেলাম।
আমি তাকে বললাম,কি বই কিনবে?
সে বলল,কবি ধ্যাবাকুল আসলাম এর বই।
বাহ!মেয়ের রুচিতো দারুন।আগামী প্রকাশনীর সামনে গিয়ে দেখি কবি ধ্যাবাকুল হাউমাউ করে কাঁদছে।সুলতা নাকি মারা যাচ্ছে।আমি শঙ্কিতবোধ করলাম।সুলতার কিছু হলে এদেশের কাব্যচর্চা পিছিয়ে যাবে।ওদিকে রুপাও কবির সাথে তাল মিলিয়ে কাঁদছে।সুলতার রক্ত লাগবে এফ নেগেটিভ।
এটা আবার কী!!রুপা বলে দিল,গাধা সুলতা কি সাধারণ কেঊ?রক্তগ্রুপ তো ওমন হবেই।
চারিদিকে হৈ হৈ শুরু হয়েছে।বাংলা একাডেমীর পরিচালক এসে হাজির।শেষ পর্যন্ত খবর পাওয়া গেল অপন্যাসিক পিল্লুর রহমান প্রিয়ন্তীকে ফেলে ছুটে আসছেন।কারণ তারো রক্তের গ্রুপ এফ নেগেটিভ।
আমি বুঝলাম এরা যে সে মানুষ না।এফ নেগেটিভ ব্লাড।
অবস্থা শান্ত হওয়ার পর রুপাকে নিয়ে ঘরে ফিরছি।তখন টের পেলাম যাকে রুপা ভেবেছি সে আসলে রুপা না,রুপম।চুল বড় রেখে মেয়ে সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে।