somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মন্দা সত্ত্বেও এক লাখ নতুন বিনিয়োগকারী !

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধারাবাহিক মন্দা সত্ত্বেও পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের আগমনের প্রবণতা থামছে না। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে একের পর এক বিপর্যয়ের কারণে আতঙ্কিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু এর মধ্যেই সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) আওতায় প্রতিদিনই বাড়ছে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসেবের সংখ্যা। ১ জানুয়ারি থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যনত্ম মোট ১ লাখ ৭ হাজার ৫৫৭টি বিও হিসাব চালু হয়েছে। একইভাবে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমেও শেয়ারবাজারে যুক্ত হচ্ছেন নতুন বিনিয়োগকারীরা। অস্থিরতার মধ্যেও বিপুলসংখ্যক নতুন বিনিয়োগকারী আগমনের প্রবণতা পুঁজিবাজারের প্রতি সাধারণ মানুষের ব্যাপক আগ্রহের বহির্প্রকাশ। তবে বিদ্যমান তারল্য সঙ্কট কাটিয়ে বাজারে স্বাভাবিকতা ফেরাতে না পারলে অচিরেই এই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন বাজার বিশেস্নষকরা।
ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি শাকিল রিজভী জনকণ্ঠকে বলেন, জাতীয় উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ৰেত্রে পুঁজিবাজার গুরম্নত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রত্যৰ ও পরোৰভাবে প্রায় এক কোটি মানুষ পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। গত এক বছরে অনেক ভাল কোম্পানি পুঁজিবাজারে এসেছে। সরকারের পুঁজিবাজারবান্ধব নীতি এবং এসইসি ও ডিএসইর সমন্বিত প্রচেষ্টাসহ বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে শেয়ারবাজারে টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হবে।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যনত্ম দুই স্টক এঙ্চেঞ্জের আওতায় বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবধারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিল ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৮। গত বৃহস্পতিবার পর্যনত্ম এই সংখ্যা বেড়ে ৩৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৩৫-এ দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ চলতি বছরের ৬ সপ্তাহে ১ লাখ ৭ হাজার ৫৫৭ জন নতুন বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজারে এসেছে। বাজার বিশেস্নষকরা মনে করেন, শেয়ারবাজারে মন্দা থাকলেও বেশ কিছু ভাল কোম্পানির প্রাথমিক শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া চলছে। নতুন বছরে যে কয়টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রসত্মাবের (আইপিও) মাধ্যমে প্রাথমিক শেয়ার বরাদ্দের আবেদন সংগ্রহ করেছে_ সেগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ইতিবাচক ধারণা ছিল। এসব আইপিওতে আবেদন করার জন্য অনেকে নতুন বিও হিসাব খুলেছেন।
পাশাপাশি বাজারে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসজুড়ে অধিকাংশ শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে অনেক সচেতন মানুষ পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থাকে বিনিয়োগের জন্য অনুকূল মনে করছেন। বিশেষ করে গত বছরের শেষ প্রানত্মে অধিকাংশ শেয়ার অতি মূল্যায়িত হয়ে পড়ায় আগ্রহ থাকলেও অনেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেননি। তারা বাজার সংশোধনের অপেৰায় ছিলেন। সম্প্রতি বাজারে বড় ধরনের সংশোধন হওয়ায় এসব বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসতে শুরম্ন করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় শিক্ষিত বেকারদের অনেকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী থেকে শুরম্ন করে গৃহবধূরাও এখন শেয়ারবাজারমুখী হচ্ছেন। বাড়তি আয়ের জন্য চাকরিজীবীরাও শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে তরম্নণ এবং শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিও হিসাবধারী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বর্তমানে ২৫ লাখ ৬১৮ জন পুরম্নষ এবং ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৪৯৬ জন নারী। ৩১ ডিসেম্বর পর্যনত্ম বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুরম্নষের সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৩১০। ওই সময় বিনিয়োগকারী নারীর সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৬। সেই হিসাবে গত দেড় মাসে বিনিয়োগকারী পুরম্নষের সংখ্যা ৮২ হাজার ৩০৮ এবং নারীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৫০ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নামে চালু থাকা বিও হিসাবের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৬। গত ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৪৩।
চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমদের মতে, বিদু্যত ও গ্যাস সঙ্কটের কারণে গত কয়েক বছর ধরে দেশে নতুন শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠছে না। কিন্তু প্রতি বছরই চাকরির বাজারে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। চাহিদা অনুযায়ী চাকরি না পেয়ে এদের একটি বড় অংশ বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজছে। এদের অনেকেই স্বল্প পুঁজি নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য আসছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি দেশের দুই স্টক এঙ্চেঞ্জের আওতায় বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবধারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৬৭। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নবায়ন না করায় গত জুলাই মাসে প্রায় ১ লাখ এবং অক্টোবরে প্রায় ৩০ হাজার বিও হিসাব বাতিল করা হয়। তা সত্ত্বেও ৩১ ডিসেম্বর বিও হিসাবধারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। সেই হিসাবে এক বছরে পুঁজিবাজারে নতুন প্রায় ১৯ লাখ ৪২ হাজার বিনিয়োগকারী যুক্ত হয়েছেন। ব্যাংক আমানত ও সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমে যাওয়া এবং বিদু্যত ও জ্বালানি সঙ্কটের কারণে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ অনুকূল পরিস্থিতি না থাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষ পুঁজিবাজারের দিকে ঝুঁকেছেন।
ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি গত দেড় মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে সিডিবিএলে প্রাতিষ্ঠানিক বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৪০২টি। বর্তমানে এ সংখ্যা ৮ হাজার ৬২১টি। ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সঙ্কট কাটিয়ে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু গত দেড় মাসে অধিকাংশ ৰেত্রেই তারা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। সরকার ঘোষিত পদৰেপ অনুযায়ী ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ শুরম্ন করলে বাজারে মন্দা পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই শেয়ার কেনা থেকে বিরত রয়েছে। অনেক ৰেত্রে প্রাতিষ্ঠিানিক বিনিয়োগকারীরা বিক্রেতার ভূমিকা পালন করছে। এসব কারণে বাজারে আরেক দফা মন্দা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী যুক্ত হওয়ার প্রবণতা বাজারের জন্য ইতিবাচক। কারণ ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি নতুন প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার কেনা শুরম্ন করলে বাজারে ভাল শেয়ারের চাহিদা বাড়বে। এতে পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ তৈরি হবে। নিজেদের স্বার্থেই তাদের বাজারে সক্রিয় হতে হবে বলে সংশিস্নষ্টরা মনে করেন।
সুত্র
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×