somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুপ্রেরণা

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাঁত বুনতে ব্যস্ত দীপালিদেবী

দলের তাঁতেই গরিবি জয়, স্বপ্ন বুনছেন দশ সাহসিনী

দশ জন গরিব বধূর প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রমের কাছে হার মানল দারিদ্র্য।

বছর আটেক আগেও যাঁরা ছিলেন নেহাতই তাঁতশ্রমিক, এখন তাঁদের প্রত্যেকের নিজস্ব তাঁতঘর হয়েছে। নিজেদের সংসারে স্বচ্ছলতা তো এসেইছে, অন্যদেরও কাজ দিচ্ছেন।

গত এক দশক ধরেই মহিলাদের ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ গড়ে তোলার উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। মিড-ডে মিল রান্না থেকে নানা ছোট ব্যবসায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক। পূর্বস্থলীর ‘কাকলি স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ সেই দলেই পড়ে। আবার ঠিক ‘দলে’ পড়েও না।

আট বছর আগের কথা। ২০০২ সালে বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ ব্লকে যখন একের পর এক স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে উঠছে, স্থানীয় শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের গঙ্গানন্দপুর গ্রামের ১৩ জন সেই দলে নাম লেখান। তাঁরা হয় তাঁতির বাড়ির মেয়ে, নয় তাঁতির বাড়ির বউ। ইচ্ছে, তাঁত-গোষ্ঠী গড়ে লুঙ্গি-গামছা বুনবেন।

কিন্তু গোড়াতেই বিপত্তি। সবচেয়ে বেশি দূর পড়া, ক্লাস এইট পাশ দীপালি দেবনাথ না হয় গোষ্ঠীর সম্পাদক হলেন। কিন্তু বাকিদেরও তো অন্তত সই করতে জানাটা দরকার। এ দিকে কয়েক জনের অক্ষর পরিচয়ই নেই। অবশ্য তাতে কী? কুমেদি দেবনাথ, ললিতা দেবনাথেরা সোজা স্কুলে গিয়ে নাম লেখালেন। ‘নিরক্ষর’ নাম ঘুচে গেল।

পরের ধাক্কাটা এল মাস পাঁচেকের মধ্যে। পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে তিন জন পিছিয়ে গেলেন। বাকিদের একটু মনখারাপ হল। কিন্তু তত দিনে তাঁরা লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছেন। সংসারে হেঁসেল ঠেলে, কখনও গঞ্জনা শুনে, নিন্দুক পড়শির কটূক্তি সহ্য করে তাঁরা উদয়াস্ত খাটতে শুরু করলেন। ঠিক হল, ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে প্রত্যেকে মাসে ২০ টাকা জমা করবেন। তিল তিল করে গড়ে তুলবেন মূলধন।

কথায় বলে, ভাগ্য সাহসীর সহায় হয়। প্রমীলাবাহিনীকে অসীম সাহসে আগুয়ান হতে দেখে পরের বছরই এগিয়ে এল রাজ্যের গ্রামীণ ব্যাঙ্ক। দৈনন্দিন খরচ-খরচার জন্য তাঁরা যাতে যে কোনও সময়ে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলতে পারেন, তার জন্য স্বল্প সুদে ঋণের খাতা খুলে দেওয়া হল (সেই অঙ্কটা এখন বেড়ে সওয়া দু’লক্ষে পৌঁছেছে)। চাকা ঘুরে গেল।

দশ সদস্যার প্রত্যেকের বাড়িতে বসল তাঁত। বুনতে শুরু করলেন লুঙ্গি, গামছা, এমনকী মাঠা শাড়িও। ব্যাঙ্ক ঋণ দিয়েছিল বছরে ৯% সুদে। সেই টাকা থেকে প্রত্যেকে কিছুটা নিলেন, আর তার বিনিময়ে বছরে ২৪% সুদ ফিরিয়ে দিতে লাগলেন গোষ্ঠীকে। বাড়তি সুদের টাকা গোষ্ঠীর তহবিলে জমতে লাগল। পাশাপাশি, রোজগার বাড়তে থাকায় ব্যাঙ্কে মাসে ২০ টাকার বদলে ৬০ টাকা করে জমানো শুরু হল। দু’বছর পরে তা থেকেও ঋণ নিতে শুরু করলেন সদস্যারা। টাকা ঘুরিয়ে টাকা বাড়তে লাগল।

কিন্তু গোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা বলছিল, শুধু টাকায় ব্যবসা বাড়বে না। বাজার কী চায়, তা জানা জরুরি। সেই চাওয়া মেটাতে শিখে ফেলা দরকার নতুন কারিগরিও। কাছে-দূরের নানা বাজার ঘুরে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলেন দশ গোয়েন্দা।

এর পরে ২০০৯ সালে ব্লক অফিস চত্বরে যখন কম্পিউটারে নকশা (কম্পিউটর এডেড ডিজাইন বা ‘ক্যাড’) তৈরি শেখার ‘স্কুল’ হল, দীপালি গিয়ে সেখানে ভর্তি হলেন। তাঁর কথায়, “ঘর আর তাঁত সামলে সাত মাস শিখেছি। ওখানে যাতায়াত করতে করতে কম্পিউটারও শিখে নিয়েছি কিছুটা। সেই শিক্ষা গোষ্ঠীর সকলে ভাগ করে নিয়েছি।”

শুধু দীপালির নিজের বাড়িতেই এখন চারটি তাঁত। চমৎকার বালুচরী বোনা হচ্ছে। কাজের চাপ সামাল দিতে রাখতে হয়েছে চার কর্মী। দলের বাকিরাও কেউ কম যাচ্ছেন না। বাড়ির মহিলাদের কাজে বেরনো নিয়ে যাঁদের এক সময়ে প্রবল আপত্তি ছিল, দেখে-শুনে তাঁদেরও চোখ খুলে গিয়েছে। স্ত্রীদের তাঁতে গড়া জিনিস নিয়ে এখন হাটে-বাজারে বিক্রি করে আসছেন নারায়ণ, মন্টু, দিলীপ দেবনাথেরা। এক কথায় স্বীকারও করছেন, “ওরা কী করতে চাইছে, আগে বুঝিনি। ভাবলে এখন খারাপ লাগে।”

কিন্তু তাঁত-কন্যাদের স্বপ্ন আরও বড়। এখন তাঁরা চান, নিজের নিজের বাড়িতে বসে স্বপ্ন বুনে চলার বদলে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘তাঁত-বাড়ি’ গড়ে উঠুক। সেখানে সকলে মিলে হইহই করে কাজ হবে। গোষ্ঠীর সভাপতি আরতি দেবনাথ হাসিমুখে বলেন, “গ্রামেই তিন কাঠা জমি লিজে নেওয়া হয়েছে। সেখানে আমাদের বাড়ি তৈরি হবে।” যার জন্য ইতিমধ্যেই আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক। তার মধ্যে এক লক্ষ টাকা সরকারি ভর্তুকি!

শুধু শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতেই আরও প্রায় আড়াইশো স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে। আশপাশের এলাকাতেও আছে বহু। কিন্তু এই চোখধাঁধানো সাফল্য ক’টিই বা পেয়েছে? পূর্বস্থলী ১ ব্লকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘রিসোর্স পার্সন’ সবিতা মজুমদারের মতে, “অন্যদের চেয়ে ওঁরা বেশি উদ্যমী ও সচেতন। করুণ আর্থিক অবস্থা থেকে ঘুরে তো দাঁড়িয়েইছেন, এখন গ্রামবাসীর বিপদ-আপদেও ওঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।” আর, পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ মল্লিকের আশা, “ওঁদের লড়াই অন্যদেরও প্রেরণা দেবে।”

আশা করাই যায়। ওঁরা তোশুধু দশের এক নয়। অন্তত হাজারে এক।

-কেদারনাথ ভট্টাচার্য • গঙ্গানন্দপুর (পূর্বস্থলী)
.........................................
হাত না-পেতে কর্মেই স্বনির্ভর গাঁধীবাদী আশ্রম


‘বড়দি’ বেলা বন্দ্যোপাধ্যায়
সাহায্যের জন্য পরমুখাপেক্ষী হওয়া নয়। আত্মনির্ভরতাই এখানে মূলমন্ত্র।

পশ্চিমবঙ্গের সীমানা শেষ হয়ে ঝাড়খণ্ডের সূচনা। পুরুলিয়া থেকে ৪৫ কিলোমিটার রেল-দূরত্বে এই নিমড়ি স্টেশনের গায়েই ‘নিমড়ি লোকসেবায়তন।’ গাঁধীবাদের পুঁজি নিয়ে স্বাধীনতার এক বছর পরে যাত্রা শুরু করে এখনও যা জ্বলছে প্রদীপের অনির্বাণ শিখার মতো। রুখু জমিতে দিয়েছে সবুজের ছোঁয়া। দারিদ্রে জর্জরিত মানুষকে জীবিকার সংস্থান। নিরক্ষর শিশুদের সাক্ষরতার আলো।

আর এ সবের জন্য টাকা চেয়ে বাইরের লোকের কাছে হাত পাতেনি লোকসেবায়তন। “স্বাধীনতার ছ’দশক পরেও গাঁধীবাদকে এ দেশে প্রতিষ্ঠা করতে দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ আমদানি করতে হলে গাঁধীজিকেই অপমান করা হবে।”— সকালের প্রার্থনা শেষে আশ্রম প্রাঙ্গণে বসে দৃঢ় প্রত্যয়ে বললেন আশ্রমের বর্তমান সম্পাদক দীপঙ্কর রায়, এলাকায় যিনি ‘দুনিদা’ নামে পরিচিত। তাঁর মা-বাবার হাতে প্রতিষ্ঠিত এই আশ্রম। কে তাঁরা?

ওয়ার্ধার গাঁধী আশ্রমের কর্মী ছিলেন বাসন্তী দাশগুপ্ত। তাঁর স্বামী সুবোধকুমার রায় ছিলেন ইলাহাবাদ আর্ট কলেজের শিক্ষক। স্বাধীনতার পরে গাঁধীজির নির্দেশে চার বছরের দীপঙ্করকে কোলে নিয়ে ওঁরা চলে এসেছিলেন নিমড়িতে। উদ্দেশ্য, গাঁধীজির আদর্শে এমন এক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যা মানুষকে স্বনির্ভর হতে শেখাবে। জমিদার অমূল্য জানা ও পড়শি গ্রামবাসীরা পতিত পাথুরে জমি দান করেন। পত্তন হয় নিমড়ি লোকসেবায়তনের।

সেই থেকে শুরু। ’৯৮-এ আশ্রমের সুবর্ণজয়ন্তী পার হয়েছে। সত্তর ছুঁইছুঁই দীপঙ্করবাববু স্ত্রী শ্রীপর্ণাকে নিয়ে আজও সেই আদর্শে অবিচল। পুত্র দেবদীপ কলেজের পড়াশোনার পাশাপাশি আশ্রমের কাজ করেন। চাষ, সাফাই, ঝাড়াইবাছাই— যখন যেখানে দরকার, মায়ের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে নেমে পড়েন। আছেন তাঁর মাসি সুলেখাও। এঁরা সকলে লোকসেবায়তনের স্থায়ী আবাসিক ও কর্মী। কোনও কাজ ওঁদের কাছে অচ্ছুত নয়।

কী আছে আশ্রমে? দূষণহীন পরিবেশে অসংখ্য বনস্পতি ঘেরা একাধিক টালির ঘর। আশ্রমের লাগোয়া অংশে দু’টো মাত্র পরিবারের বাস। পরের জনপদ এক-দেড় মাইল দূরে। আশ্রমের জমিটা এমন ভাবে ঢালু যে, বর্ষায় গড়ানি জল (রেন ওয়াটার হারভেস্টিং) জমা হয় বাঁধে। সেই জলে মাছ-চাষ, কৃষিকাজ। পাশে ঘাঘরা নদী। এ বছরের খরায় শুকিয়ে কাঠ।
আর আছে স্কুল। খোলা মাঠের স্কুল। বন্ধ হয়ে যাওয়া ছোট হাসপাতালটি আপাতত ছাত্রাবাস। এ তল্লাটে বাংলা পাঠ্যবইয়ের চল নেই বলে হাতে লিখে পাঠ্যাংশ তৈরি করেন দীপঙ্কর, তাতে ছবি আঁকেন শ্রীপর্ণা। খুদেরা তিনটে ভাষাই শেখে— বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি। স্কুল বসার আগে গাছ-গাছ খেলাও তাদের কাছে মস্ত আকর্ষণ। কেউ সাজে অর্জুন, কেউ বট, কেউ নিম, কেউ শিমূল।

প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে জীবনের পাঠ। সঙ্গে থাকেন তিন দিদিমণি। ‘বড়দি’ বেলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স তিরাশি। সঙ্গী পানুদি ওরফে স্নেহলতা ঘোষ আশি ছুঁতে চলেছেন। মমতাদি আটাত্তর। রান্নাবান্না-সহ নিজেদের যাবতীয় কাজ আপন হাতে করেন ওঁরা। কর্মই ধর্ম। স্বনির্ভরতার পথ বেয়ে চলেছে নিমড়ি লোকসেবায়তন।

-অশোককুমার কুণ্ডু • নিমড়ি (ঝাড়খণ্ড)
.........................................
মহিলার দেওয়া জমিতেই মেয়েদের স্কুল হবে নিরোলে


নীলকমল মণ্ডল ও বাসন্তীদেবী

দশ বছরের লড়াই এ বার শেষ।

মেয়েদের জন্য যাতে গ্রামেই একটি স্কুল তৈরি হয়, সেই চেষ্টার শুরু তখন থেকেই। অবশেষে গ্রামের বধূর দান করা জমিতেই গড়ে উঠতে চলেছে সেই স্কুল। কেতুগ্রামের নিরোলে সোমবার দুপুরে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) পূর্ণচন্দ্র শীট। ছিলেন সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পের আধিকারিক তুষারকান্তি পাঠকও। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল তৈরির জন্য সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই মঞ্জুর করা হয়েছে।

বছর তিনেক আগে স্কুল গড়ার জন্য ৩৭ শতক জমি দান করেছিলেন ৪৯ বছরের বাসন্তী মণ্ডল। জমির আনুমানিক মূল্য বেশ কয়েক লক্ষ টাকা। কিন্তু সরকারি নিয়ম মেনে জমি দান না করায় স্কুলের অনুমোদন পেতে দেরি হয়ে যায়। বছর খানেক আগে ফের তিনি ‘নিয়ম মেনে’ ওই একই জমি দান করেন বর্ধমানের জেলাশাসকের নামে। কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতি তখন সরকারের কাছে চিঠি পাঠায়। ২০০৯ সালের ২০ অক্টোবর ‘নিরোল জুনিয়র হাই স্কুল’ তৈরির জন্য অনুমোদন দেয় সরকার। কিন্তু অনুমোদনের সেই চিঠি এসে পৌঁছয় গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে।

গ্রামের ভিতরে উচ্চ বিদ্যালয় ও পঞ্চায়েত অফিসের মাঝে তৈরি হবে ওই স্কুল। উচ্চ বিদ্যালয়ে এখন ছাত্র-ছাত্রীরা এক সঙ্গেই পড়াশুনা করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিজনবান্ধব দাসের কথায়, “আমাদের স্কুলে পড়ুয়ার চাপ খুব বেশি। বালিকা বিদ্যালয় তৈরি হলে সেই সমস্যা দূর হবে।”
গ্রামে অবশেষে মেয়েদের নিজস্ব স্কুল হবে জেনে খুবই আনন্দিত বাসন্তীদেবী। বললেন, “গ্রামে মেয়েদের জন্য এত দিন আলাদা কোনও স্কুল ছিল না। অনেককেই গ্রামের বাইরে গিয়ে অন্য স্কুলে পড়াশোনা করতে হত। এখন তারা নিজেদের গ্রামেই পড়তে পারবে। এটা কত আনন্দের ব্যাপার। আমার স্বামী যখন জানালেন, মেয়েদের স্কুল তৈরির জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে, তখনই আমি ওই জমি দান করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।” গ্রামেরই এক বাসিন্দা কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দশ বছর ধরে যে লড়াই চলছিল, তার একটা ধাপ শেষ হল।”

শাশুড়ি কনকলতাদেবীর নামে স্কুলের নামকরণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন বাসন্তীদেবী। জমি দান করার এই সিদ্ধান্তে খুশি তাঁর স্বামী নীলকমলবাবু ও ব্যবসায়ী পুত্র আশিসবাবুও।

গ্রামেরই বাসিন্দা তথা স্কুলের উদ্যোক্তাদের অন্যতম মহাদেব গুঁই বলেন, “নীলকমলবাবু প্রান্তিক চাষি ছিলেন। পরে তিনি পরিবহণ দফতরে চাকরি পান। তিল তিল করে টাকা জমিয়ে ওই জমি কেনেন। কিন্তু স্কুলের কথা শুনে এক কথায় ওঁরা সেই জমি দান করে দিলেন। গ্রামের মানুষ চিরকাল ওঁদের ত্যাগের কথা মনে রাখবে।” স্কুল তৈরির জন্য যে কমিটি হয়েছে, তার সম্পাদক ধনঞ্জয় গুঁই বলেন, “বিশিষ্ট সমাজসেবী হরমোহন সিংহের সাহায্য ছাড়া স্কুলের অনুমোদন মেলা সম্ভব ছিল না। তিনিই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করিয়ে দেন।”
কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণালকান্তি সিংহের আশা, শীঘ্রই স্কুল তৈরির কাজ শেষ হবে। ফলে চলতি মরসুমেই স্কুলে পঠনপাঠন শুরু করা সম্ভব হবে।

বেলা শেষে বাসন্তীদেবীর মুখে তখন যেন এক নতুন প্রভাতের আলো।

-কেতুগ্রাম; মঙ্গলবার ১৮ জানুয়ারি ২০১১
......................
৫২টি মন্তব্য ৫২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×