somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

মানুষ ‘মেহেরজান’ দেখতে চায়

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুমায়ূন আহমেদ যখন আগুনের পরশমনি ছবিটি ঢাকঢোল বাজিয়ে নির্মান করেছিলেন তখন সর্বত্র আলোচনার ঝড় উঠেছিল।বহুদিন পর মুক্তিযুদ্ধের একটি ছবি দেখার সুযোগ হয় দর্শকদের।কিন্তু ছবিটি হলে যাওয়ার আগেই বির্তকের ঝড় উঠল।মুক্তিযুদ্ধের ছবি হবে অথচ মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা দেখানো হবে না তা কি করে হয়?মুজিব অন্তঃপ্রান তরুনরা ছবি প্রদর্শন রুখে দাঁড়ানোরও ঘোষনা করল।শেষ মুহুর্তে পরিচালক হুমায়ুন আহমেদ তার আগুনের পরশমনিতে বেতারে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন শুনিয়ে বির্তক ও প্রতিবাদের ঝড় থেকে তার ছবিকে রক্ষা করেন।(এ ছবিটি নির্মিত হয়েছিল বিএনপি সরকারের অনুদানে।)যাই হোক,আমার প্রসঙ্গ আগুনের পরশমনি নয়।এই প্রজন্মের শিক্ষিত বুদ্ধিমান পরিচালক রুবাইয়াত হোসেনের চলচ্চিত্র 'মেহেরজান'।'মেহেরজান' নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বির্তক চলছে।বির্তকই ভালো ছবির নমুনা।মুক্তিযুদ্ধ ও ভালোবাসার ছবি বলে পরিচালক ৭১ কে সেলুলয়ডের ফিতায় বন্দী করেছেন।যারা 'মেহেরজান' দেখেছেন তারা সবাই মুগ্ধ হয়েছেন।আর যারা দেখেননি তারা একটি ভালো ছবি দেখার সুযোগ হারালেন।বির্তকের ঝড় দেখে যারা ছবিটি সব প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে ফেলেছেন তাদের অনুরোধ করি- মানুষকে ভালো ছবি দেখার সুযোগ দিন।মানুষ 'মেহেরজান' দেখতে চায়।চায় বলেই হলে গিয়ে বিমুগ্ধ হয়ে ফিরছে।যারা আজাইরা বির্তক করছেন,তাদের বলি- সব দায়-দায়িত্ব দর্শকদের উপর ছেড়ে দেন।(মত পার্থক্য তো থাকবেই।(কিছু বাজে মানুষ মিলে যদি কোনও কারণ ছাড়াই একটা মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে,তাহলে দেখা যাবে-একদল লোক খুব হইচই করছে,তাদের মাথা গরম হয়ে যাবে।দেশে নানান অশান্তি শুরু করবে।আবার কেউ কেউ বলবে- না,না মসজিদ ভেঙ্গেছে তা নিয়ে নতুন করে ঝামেলা করার দরকার নেই।প্রয়োজন হলে নতুন একটা বানিয়ে নেওয়া যাবে।যদিও মসজিদ ভাঙ্গা মোটেই ভালো কথা নয়।)বোকা গুলো বুঝে না,দর্শকদের ভালো লাগলে ছবিটি তারা গ্রহন করবেন।ভালো না লাগলে ছবিটি থেকে বিরত থাকবেন।ঝামেলা চুকে গেল।র্দশক তো নির্বোধ না।এটি একটি গন্তান্ত্রিক মূল্যবোধের বিষয়।তাই বলতে চাই,ইতিহাসনির্ভর আরও ভালো ভালো ছবি নির্মানে মেহেরজান বির্তক এদেশের সিনেমা শিল্পের জন্য একটি নতুন মোড় নিতে পারে।একজন পরিচালক তার স্বাধীন সৃজনশীলতায় ও দেশপ্রেমের কমিটমেন্ট নিয়ে ভালো ছবি নির্মান করবেন।মেধাবী রুবাইয়াত হোসেন মেহেরজান নামে যে ছবিটি তৈরি করেছেন তা নিয়ে নানাজন নানা মত প্রকাশ করেছেন।কিন্তু মজার ব্যবপার হলো,কেউ ছবির প্রদর্শন বন্ধের কথা বলেননি।সত্যিকথা বলতে কি,রুবাইয়াত একজন পরিচালক হিসেবে রুপালী পর্দার জগতে এসেই কিস্তিমাত করেছেন।তার মেহেরজান সবার নজর কেড়েছে।তার মেধা ও সৃজনশীলতার বড় অর্জনই হলো তিনি মেহেরজান নিয়ে এলেন এবং ঝড় তুললেন।অন্যসব সস্তা পরিচালকদের দেখিয়ে দিলেন।দিন দিন ঢাকার সিনেমা হলগুলো ভেঙ্গে মার্কেট হচ্ছে।রিকশাওয়ালা আর গার্মেন্টস কর্মী ছাড়া কেউ সিনেমা হলে যায় না।অতিসম্প্রতি সুনীলের লেখা 'মনের মানুষ' অবলম্বনে লালনকে নিয়ে গৌতম ঘোষের 'মনের মানুষ' জনপ্রিয়তা অর্জন করতে না না করতেই রুবাইয়াতের মেহেরজান মানুষকে হলের দিকে টেনেছে।তরুন প্রজন্মের সৃজনশীল কর্মে দেশ এগিয়ে যাবে।
মেহেরজানের নির্মান শৈলী,শিল্পী বাছাই,লোকেশন,ক্যামেরার শট এক কথায় অসাধারন।রুবাইয়াত আপনাকে ধন্যবাদ।আপনার দৃষ্টি প্রখর,ভাবনা ক্রিয়াশীল,চিন্তা সৃজনশীল।আপনি ভয় পাবেন না।আপনি আরও ছবি নির্মান করুন।কিছু খারাপ লোক তো থাকবেই।আমি নিশ্চিত এই বাংলার বুকে তসলিমা নাসরিন ফিরে আসবেন এবং মেহেরজান কেউ বন্ধ করতে পারবে না।শারুখ খান প্রাণনাশের হুমকিতে পড়েছিলেন 'মাই নেম ইজ খান' করে।এ ছবিতে দেখানো হয়েছে সব মুসলমান জঙ্গি নয়।একটি দেশের সব মানুষ খারাপ নয়।আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সাহস দেয়,স্বপ্ন দেখায়।অনেক পাকিস্তানি কি তাদের বর্বরতা দেখে গ্লানিতে ভোগেননি?
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফের আত্মজীবনীতে কি ৭১ এর উচ্চবিলাষী জেনারেলদের উন্নাসিকা,ভুট্রোর ষড়যন্ত ফুটে ওঠেনি?পাক সামরিক অফিসার পারভেজ মোশারফের সাথে বাংলাদেশি কন্যার প্রেমের কথা কি উঠে আসেনি তাতে?বেলুচ সৈন্যদের অনেকেই তো বর্বরতায় নাম লিখাতে চায় নি।এই সত্য যদি সেলুলয়েডের ফিতায় রুবাইয়াত পজেটিভ চরিত্র বলে তুলে আনেন তাতে তো সত্যের জয় হয়েছে।ছবি বানানোর স্বাধীনতা রুবাইয়াতের আছে।তেমনি ছবির সমালোচনার অধিকার সবারই আছে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে অসংখ্য ছবি নির্মিত হয়েছে। যেখানে অনেক নাৎসিকে পজেটিভ চরিত্রে দেখানো হয়েছে।'পেজিং প্রাইভেট বায়ন', পিয়ানিস্টেও এক নাৎসি চরিত্র পজেটিভ ভাবে এসেছে।মিউজিক আসক্ত এক নাৎসি- যে পিয়ানো বাজায় তার প্রতি ছিল সহানভূতিশীল।যাই হোক,সকল বির্তকের অবসান হোক।আবারও হলে হলে পর্দায় উঠুক মেহেরজান।মানুষ দেখুক।মনে রাখতে হবে- পৃথিবীর সৃষ্টিশীল মানুষ ও তাদের কর্ম নিয়ে বির্তক হবেই।

(সংগ্রহ)

৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×