somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাকিব খানের প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হতে পারে, তাহার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ :)

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আয় ও সম্পদ গোপন করে বাংলা চলচ্চিত্রের হার্টথ্রব নায়ক শাকিব খান ফেঁসে গেছেন। দেড় কোটি টাকারও বেশি আয়কর ফাঁকি দেয়ায় মা রিজিয়া বেগমসহ শাকিব খানের ৩টি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট জব্দ করে সব ধরনের লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসেল)। আয়কর রিটার্নে মিথ্যা তথ্য দেয়া, প্রকৃত আয় গোপন করা, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঘোষণাবহির্ভূত অস্বাভাবিক লেনদেন এবং জমি ও বাড়ি ক্রয়ে পরিশোধিত অর্থ গোপন করে কর ফাঁকির গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তদন্তে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকার কর ফাঁকি প্রমাণিত হওয়ায় এনবিআরের চেয়ারম্যানের অনুমোদন নিয়ে সিআইসেলের উপ-মহাপরিচালক বিভিন্ন ব্যাংকে পত্র দিয়ে হিসাব জব্দ করার অনুরোধ জানান। এরপর আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ধারা ১১৭(৪) অনুযায়ী শাকিব খান রানার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড মতিঝিল শাখার হিসাব নং-১৮১৬৬৬৬১৪০১, একই ব্যাংকের গুলশান শাখার শাকিব খান ও তার মা রিজিয়া বেগমের যৌথ হিসাব নং-১৮৫৪২৫৪৮৪০১ এবং ব্র্যাক ব্যাংক মতিঝিল প্রধান কার্যালয়ের সেভিংস অ্যাকাউন্ট ১৫০১১০০০১৮৯৬২০০১ থেকে অর্থ উত্তোলন বা অন্যত্র স্থানান্তর স্থগিত করা হয়। এছাড়া তার নামে আরও কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করার প্রক্রিয়া চলছে। সিআইসেলের চিঠিতে বলা হয়, বিষয়টি অতীব জরুরি ও গোপনীয় হিসেবে বিবেচনা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গত সপ্তাহে এনবিআরের সিআইসেলে হাজির হলে তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিআইসেলের মহাপরিচালক মোঃ আলাউদ্দিন এবং উপ-মহাপরিচালক শারমিন নাজ কর ফাঁকির বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এসময় শাকিব খান জানান, তিনি নিয়মিত আয়কর পরিশোধ করে আসছেন। প্রকৃত আয় এবং জমি ক্রয়ের সঠিক তথ্য অজ্ঞতাপ্রসূত রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি। কর আইনজীবী এ বিষয়ে তাকে সঠিক পরামর্শ দেননি। তবে যত দ্রুত সম্ভব ফাঁকি দেয়া কর পরিশোধের অঙ্গীকার করেছেন শাকিব খান। এ বিষয়ে সিআইসেলের মহাপরিচালক মোঃ আলাউদ্দিন ও উপ-মহাপরিচালক শারমিন নাজ কোন কথা বলতে অস্বীকার করে বলেছেন, করদাতার স্বার্থেই কিছু বলা সম্ভব নয়।
পরপর দু’বার যুগান্তর প্রতিনিধির মুখোমুখি হলে কিং খান নামে পরিচিত নায়ক শাকিব খান বলেন, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে কর ফাঁকি দেইনি। নিয়মিত কর দেই বলেই হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছি। অনেক ক্ষেত্রে আমি অগ্রিমও কর পরিশোধ করেছি। তিনি জানান, বন্ধুবান্ধব এবং মায়ের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে জমি ও বাড়ি কিনেছি। কোন কিছুই গোপন করিনি। সিআইসেলের ডিজিকে বলেছি, সঠিকভাবে হিসাব করে যে কর পাওনা হয় তা আমি দিয়ে দেব। সব কিছুই অনিচ্ছাকৃত বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, সপ্তাহের সাত দিনই তাকে শুটিংয়ে দেশে বা দেশের বাইরে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ ব্যস্ততার কারণেই আয়কর বিষয়ে সঠিকভাবে নজর দিতে পারেননি। শাকিব খান আরও বলেন, জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে না দিলে কিভাবে বকেয়া কর পরিশোধ করবেন?
বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্রের তিনিই সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ব্যস্ত নায়ক। প্রতিটি ছবির শুটিংয়ের জন্য কমপক্ষে ৩৫ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হয় প্রযোজকদের। তারপরও অনেককে তিনি ফিরিয়ে দেন সময়ের অভাবে। অতীত বা বর্তমানে আর কোন নায়কের পারিশ্রমিকই তার ধারেকাছে নেই বলে জানা গেছে। অথচ তিনি তার আয়কর রিটার্নে যে আয় দেখাচ্ছেন তাতে হতবাক হয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। পাশাপাশি গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তার অর্থ সম্পদের যে দালিলিক প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতেও স্তম্ভিত হয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী শাকিব খান সর্বশেষ করবর্ষে প্রায় ৮ লাখ টাকা কর পরিশোধ করেছেন। প্রতি বছরই তিনি নিয়মিত কর দেন। কিন্তু শাকিব খানের গত ৫ বছরের ব্যাংক হিসাব পরীক্ষা করে রিটার্নে দেয়া তথ্যের সঙ্গে পার্থক্য পাওয়া গেছে আকাশ-পাতাল। বিশেষ করে গত দুটি করবর্ষে তিনি কোটি কোটি টাকা আয় করলেও তা গোপন করে নামমাত্র কর দিয়েছেন। বছরে তার যে আয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে তিনি ২৫ শতাংশের সর্বোচ্চ স্ল্যাবের করদাতা। গত অর্থবছরের করবর্ষে তার অ্যাকাউন্টে কয়েক লাখ টাকা ব্যালেন্স দেখানো হলেও লেনদেন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। অনেক ক্ষেত্রেই মাসে কোটি টাকারও বেশি অর্থ জমা পড়েছে। তার ব্যাংক হিসাব পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি যে পরিমাণ আয় করেন তার সিংহভাগই গোপন করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৯-১০ এবং ২০১০-১১ করবর্ষে তার অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অংকের অর্থ জমা পড়েছে। যদিও তার আয়কর ফাইলে এসব আয় গোপন করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার পূবাইলে শাকিব খান ২ বিঘা জমিসহ একটি বাংলো বাড়ি কিনেছেন। বর্তমানে তার অধিকাংশ ছবির শুটিং হয় এখানে। আয়কর রিটার্নে এ জমি ক্রয় বাবদ মাত্র ৯০ লাখ টাকা মূল্য পরিশোধ দেখানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এ জমির মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ কোটি টাকা তিনি পরিশোধ করেছেন তার চেকের মাধ্যমে। এভাবে প্রায় ৪ কোটি টাকা পরিশোধের দালিলিক প্রমাণ রয়েছে কর গোয়েন্দাদের কাছে। এতে ফেঁসে গেছেন তিনি। তবে সিআইসেলের জিজ্ঞাসাবাদকালে এ অর্থ পরিশোধ বিষয়ে অস্বীকারও করেননি তিনি। এছাড়া তিনি গুলশান নিকেতনে ১০ কাঠা জমির মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। কিন্তু বিক্রেতাকে ব্যাংক হিসাবের চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেছেন আরও ৪ কোটি টাকা। এভাবে তিনি জমি ও বাড়ি ক্রয়ে প্রকৃত অর্থ পরিশোধের অংক গোপন করে একদিকে সরকারকে বিপুল অংকের কর ফাঁকি দিয়েছেন, অপরদিকে জমি রেজিস্ট্রেশনে বিপুল অংকের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন। প্রচলিত আইনে এটা আÍসাতের শামিল এবং দণ্ডযোগ্য অপরাধ।
সূত্র আরও জানিয়েছে, শাকিব খান অবশ্য জমি ও বাড়ি ক্রয়ের হিসাব মেলাতে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি তার মা রিজিয়া বেগমের কাছ থেকে ১ কোটি টাকা ঋণ দেখিয়েছেন। রিজিয়া বেগম এ টাকা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক গুলশান শাখার হিসাব থেকে পরিশোধ দেখিয়েছেন। অথচ তার মায়ের আয়কর রিটার্নে তার উল্লেখ নেই। এছাড়া বিভিন্ন বন্ধুর কাছ থেকে কোটি টাকারও বেশি ঋণ দেখানো হলেও তা আইনগত ছিল না। মূলত আইনজীবীর অজ্ঞতায় ঋণ দেখিয়েও তিনি ফেঁসে গেছেন।
সূত্র আরও জানিয়েছে, শাকিব খান আয়কর আইনে পাহাড়সম অপরাধ করেছেন। আয়কর আইনে প্রকৃত আয় গোপন বা তথ্য গোপন করে শুল্ক ফাঁকি প্রমাণিত হলে কর বিভাগ ফাঁকি দেয়া অর্থের আড়াইগুণ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে। এছাড়া ১৬৫ ও ১৬৬ ধারায় মামলা দায়ের করা করলে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যে সম্পদ অবমূল্যায়ন করে ক্রয় দেখানো হয়েছে তার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করারও ক্ষমতা রয়েছে।

Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৩৭
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×