somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ‘প্রথম’ উদ্দেশ্যহীন প্রলাপ

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের ৯০% অভিভাবক ( অনুমাননির্ভর কিন্তু অনির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া, আপনারা মতামত দিলে সত্য বের হয়ে আসতে পারে) একটি আপাত অচিকিৎস্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। ব্যাধির নাম ‘মহামানব প্রস্তুতি’ ব্যাধি। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত অভিভাবক সন্তানের বয়স বা বোধ-ক্ষমতার কথা কম বিবেচনা করে নানা মানসিক বোঝা চাপিয়ে দিয়ে ‘মহামানব’সন্তান প্রস্তুতির পথে এগিয়ে যাবার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় লিপ্ত হন (সাফল্য/ ব্যর্থতার হিসাব তোলা থাকল)। এই ব্যাধি যতটা না ব্যক্তিগত ইচ্ছাপ্রসূত তার চেয়েও বেশি সামাজিকভাবে প্রদত্ত। অতএব, অভিভাবকদের দোষ দেব না। সমাজের দোষ দেবার দোষে দুষ্ট হবার ইচ্ছাও নেই। যাহোক, বাবা-মা যা ভাবেন আমাদের মঙ্গলের জন্যই ভাবেন। আমার মা-বাবাও তার ব্যতিক্রম নন। তারাও আমার জন্মের পর আমার নিষ্পাপ মুখে জগদ্বিখ্যাত মহামানবদের ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন, অবশ্য সেই ছায়াতেও কিঞ্চিত দোষ ছিল। তারা যখন নিউটনকে দেখতেন, তখনো ডাক্তারি অ্যাপ্রন পরা অবস্থায় দেখতেন। একটু বয়স হবার পর আমাকে যখন রবীন্দ্রনাথের কথা বলতেন তখনো তাদের কথা থেকে কেমন যেন ঔষধের গন্ধ পাওয়া যেত! তাদের কথা শুনে অবোধ আমি যে মাঝে মাঝে দিবাস্বপ্ন দেখতাম না, তা নয়। একেই বলে নির্দোষ ‘সঙ্গদোষ’।
স্কুল নামের কারাগারে যখন থেকে আমার পদার্পণ ঘটলো তখন সমাজের কিয়দংশ আমাকে পরিচিত করালো ‘aim in life’ বা ‘জীবনের লক্ষ্য’ নামক জুয়াখেলাসংক্রান্ত শব্দবন্ধনীর সাথে যেখান থেকে আজো বের হতে পারিনি। যাহোক, সময়ের পরিক্রমায়... ভাব ধরার জন্য; গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসানোর জন্য; বাধ্য হয়ে অথবা ‘মোল্লার দৌঁড় মসজিদ পর্যন্ত’-জিদ এবং আরো নানা কারণে জীবনের লক্ষ্য পরিবর্তিত হয়েছে বারবার। সেই তালিকা ডাক্তার থেকে শুরু করে হাল আমলের স্টিভ জবস, জুকারবার্গ পর্যন্ত গড়িয়েছে। মানুষের মন, বাতাসে প্রাসাদ গড়ার স্বপ্ন তো আমরা দেখতেই পারি (আমরাই তো অভিভাবক হব একদিন, তাই নয় কি?)।
একটা সময় পর্যন্ত ভালো ছাত্র ছিলাম। সেটা মা-বাবার বশীকরণ বিদ্যা বা মাঝে মাঝে দুই হাতের আগ্রাসী তৎপরতার জন্য অবশ্য। ‘মহামানব’ হবার পথে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিলাম, মাঝখানে কিছু সুখকর ঘটনা ঐ দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। সেটা আপনাদের দোয়া বলতে পারেন।
স্কুল-কলেজে থাকার সময় পড়াশোনা বাদে আর সব বিষয়েই কমবেশি আগ্রহ ছিল। পড়ার টেবিলে বসলে সেসব আগ্রহ হাজারগুণ বড় হয়ে দেখা দিত। পুরানো খাতাগুলো খুললে এখনো একজন ‘যে ফুল না ফুটিতেই ঝরিয়া গেল’ সুকান্ত, পিকাসো বা ভ্যানগগের অতি হালকার উপর ঝাপসা প্রতিচ্ছবি পাওয়া যাবে। কলেজে পড়ার সময় (খুব বেশি আগের দুর্ঘটনা নয় কিন্তু) Biological Practical ক্লাসে তেমন একজন ‘আমি মকবুল ফিদা’ এঁকেছিল কেতুপুরের হার্টথ্রুব কুবের মাঝিকে কপিলার Seduction চিত্র (‘পদ্মা মাঝির নদী’ অবলম্বনে )। তারা যেভাবে সুপ্তভাবে ছিলেন, আজো তেমনভাবে রয়ে গেছেন। তাদেরকে জাগানোর দুঃসাহস হয় নি।
ছেলেদের স্কুল-কলেজে পড়েছি। কাজেই, মেয়েদের ব্যাপারে মাথা ঘামাতে হয় নি। মাথা এমনিতেই ঘেমে থেকেছে তাদের চিন্তায় বা দুশ্চিন্তায়। রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের চার দেয়ালের মাঝে যে নারী-দর্শন (নারী সংক্রান্ত দর্শন) পেয়েছি শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুদের কাছ থেকে, তা কোন বিচারেই সামান্য নয়। আর সব বন্ধুর মতই নারীর গুণগ্রাহী হতে চেয়েছি, Eve Teaser নয়। অবশ্য কোন কুসুমকুসুম প্রেমে জড়ানোর অভিজ্ঞতাও হয় নি। কাজেই, এ ব্যাপারে যেখানে অনেকে ‘নাদাল’, সেখানে আমি নিতান্তই নাদান বাচ্চা। অভিজ্ঞ মানুষের পরামর্শ শিরোধার্য, কোন সহৃদয় অভিজ্ঞ ব্যক্তির জন্য ব্যাগ্র (ব্যাঘ্র) হয়ে আছি।
যাহোক, সব কথার এক কথা হল আমি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন কখনো যেমন লেখা হবে না, তেমনি আঁকতে পারব না কোন স্থাপনার নকশা। Computer এ করা হবে না কোন Programming, জুকারবার্গের ছবির দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে শুধু বলা হবে, “বাঁইচা গেলি এই জীবনে...”। ‘মহামানব’ হতে পারিনি, পারব না। তাতে দুঃখ নেই। আমার যেমন নেই, আমার মা-বাবারও নেই। Facebook এর ‘৩২টা থাপ্পড় দিয়া ১টা দাঁত ফালাইয়া দিমু’ এর blog link দেখে ভাবলাম, মাথার ‘মলত্যাগ’ দরকার। তাই গোপাল ভাঁড়ের মত ‘মলত্যাগ’ দর্শন অবলম্বন করলাম, সুখ পেলাম.........মহাসুখ! আমার লেখা প্রথম blog, কিছু প্রলাপ, কিছু সংলাপ, কিছু অপলাপ ঝেড়ে গেলাম। হয়তো কেউ পড়েও দেখবে না। যেভাবে রেখে গেলাম, ওভাবেই রেখে দেবে। কেউ পড়ে হয়তো ‘বাজে’ বলবে, ‘ফালতু’ বলে রেখে দেবে......কেউ উৎসাহ দেবে সান্ত্বনার ছলে, আমিও গদগদ হয়ে ‘ধন্যবাদ’ জানাব............এই তো আমাদের অ’মহামানব’দের blogging. আপাতত আমার কোন ‘aim in blogging’নেই, এ কথা বলতে পারি। বলতেই পারি; কারণ, আমি তো আর ‘মহামানব’ নই। আমার ‘প্রথম’ উদ্দেশ্যহীন প্রলাপ তো একথা বলার উদ্দেশ্যেই লেখা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×