somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আড়িয়াল বিলে জনতার জয়

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে আড়িয়াল বিল জনতার কাছেই থেকে গেল। প্রধানমন্ত্রী অনেক পরে হলেও সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই আড়িয়াল বিলবাসীর পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বিমানবন্দর তৈরী করা নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। ঢাকা জেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলা ও পদ্মা নদীর মাঝখানে একটি জলাভূমি অঞ্চল হল আড়িয়াল বিল। এককালে বিক্রমপুর নামেই সুপরিচিত ছিল। সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলার প্রতিক রবিশস্য, তরি-তরকারী, মাছে ভরপুর ও অসংখ্য প্রজাতির পাখির অভায়াশ্রম হিসেবে সুপরিচিত ছিল দেশের বৃহত্তম বিল বলে খ্যাত "আড়িয়াল বিল"।

এই আড়িয়াল বিলের দৈর্ঘ্য ২৬মাইল আর প্রস্থ ১০মাইল অর্থাৎ ২৬০বর্গমাইল বা ১,৬৬,৬০০একর।

যেখানে ধান হয় প্রায় ৪০,০০০মেট্রিক টন।
মাছ চাষ হয় প্রায় ৭০০মেট্রিক টন।
সব্জি ও রবিশস্য হয় প্রায় ১০,০০০মেট্রিক টন।

অনেকেই এখান থেকে শাপলা সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জিবিকা নির্বাহ করে থাকে। আর এখানেই সরকার একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর তৈরী করতে যাচ্ছিলেন। "বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর"।

এই এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন ১০ল মানুষ আর অস্থায়ীভাবে (মৌসুমী) বসবাস করেন ১লক্ষ মানুষ। তার মানে ১১লক্ষ মানুষকে বেকার করে দিয়ে এই বিমান বন্দর তৈরী করতে যাচ্ছিলেন বর্তমান সরকার।
অবশ্য সরকার বলেছেন এই বিমান বন্দরের জন্য জমির প্রয়োজন হবে ১০,০০০একর, উপশহরের জন্য ১৫,০০০একর, মোট ২৫,০০০একর।
এখানে বলে রাখা ভাল যে শাহজালাল (জিয়া) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জমির আয়তন মাত্র ২,০০০একর।
প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের ২৫,০০০একর জমির মধ্যে ৬০%গ্রাম ও শস্য ক্ষেত্রে এবং বাকি ৪০%শস্য ক্ষেত্র ও জলাশয়। এখানকার মাটি ভাল হওয়ার কারনে খুব কম সময়ের মধ্যেই এখানে বেশি ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়ে থাকে।
শোনা যাচ্ছিল ২৫,০০০একর জমি অধিগ্রহনের মাধ্যমে আসবে শ্রীনগর উপজেলা থেকে ১৪টি মৌজা, নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৮টি মৌজা এবং দোহার উপজেলা থেকে ৭টি মৌজা। এই বিশাল এলাকা ব্যবহারের কারনে বাকী জায়গাতেও এর প্রভাব পড়বে আর এতে অন্য জায়গুলোতেও আর ভালভাবে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। তার মানে ১০ল লোকের পেটে লাথি মেরে (সাময়িকভাবে হলেও) এই বিমান বন্দর করার চিন্তা করা হয়েছিল।

আমাদের দেশে এখন ৭টি বিমানবন্দর আছে। তার মধ্যে একটি জাতীয়, দুইট আন্তর্জাতিক আর বাকিগুলো স্থানীয়। এই বিমানবন্দরগুলোর কোনটাতেই চাহিদা মত যাত্রি পরিবহন করছে না। বরং বলতে গেলে বলতে হয় এর ধারণ মতার মাত্র অর্ধেকেরও কম এখানে পরিবহন করা হচ্ছে! যেখানে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বছরে যাত্রী পরিবহনের মতা ৮০লাখ সেখানে এই মতার সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার হয় ৩০%।
অন্যদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বছরে যাত্রী পরিবহনের মতা ৮০লাখ আর যাত্রী আসা-যাওয়া করে ৪০লাখ তার মানে রানওয়ের মতার ব্যবহার সর্ব্বোচ্চ ৪০%।
আর অভ্যন্তরীন ৫টি বিমানবন্দরের মধ্যে রাজশাহী, সৈয়দপুর ও বরিশালে এখন বিমান চলাচল করে না।

যেখানে বর্তমান বিমান বন্দরগুলোরই যথাযথ ব্যবহার নাই সেখানে ৫০,০০০কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি বিমান বন্দর কেন নির্মান করতে হবে তা বুঝে আসে না। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরের যেই আধুনিকায়ন করার কথা তার নাম গন্ধও নাই!
যেখানে আমাদের দেশের মানুষ অনেক কষ্ট করে নিজের জিবীকা নির্বাহ করে সেখানে তো এত এত বিমানবন্দরের প্রয়োজন হতে পারে না। আর যদি প্রয়োজনই হবে তাহলে সেই আড়িয়াল বাসীর সাথে কথা বলে তা ঠিক করলে তো আর এত সহিংস ঘটনা ঘটতো না। পুলিশের এসআই মারা যেতেন না। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন ঠিক কিন্তু তাতে যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আর এই দেরি হওয়ার কারনেই আমাদেরকে একজন এসআইকে হারাতে হল। শুধু তাই নয় এই ঘটনার জের অনেকদূর পর্যন্ত গড়িয়েছে ও গড়াচ্ছে।
আমরা সকলেই জানি যে এই আন্দোলন ছিল আড়িয়াল বিল এলাকাবাসীর স্বতস্ফুর্ত আন্দোলন। এখানে কোন দলের স্থান ছিল না। বরং সকল দলই এখানে একটি দলে রুপান্তরীত হয়েছিল। এই কথাটা কেন যে আমাদের এমপি-মন্ত্রীরা বুঝতে পারলেন না তা ভাবতে সত্যিই খুব কষ্ট লাগছে। সব জায়গায়ই কেন যে তাঁরা যুদ্ধাপরাধীদেরকে দেখতে পান তাও বুঝে আসে না।
সেখানকার মানুষের অবস্থা এমন হয়েছিল যে তাদের একটাই বক্তব্য আমরা জীবন দিব তবুও এই বিলের এক টুকরা মাটি ছেড়ে দিব না। মিডিয়ার কল্যানে আমরা সেই দৃশ্যগুলো ভালভাবেই দেখেছি। এখানে শুধু পুরুষরাই নয় বরং পুরুষ-মহিলা, আবাল বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই এই আন্দোলনে সমান তালে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কয়েকজন মহিলা তো মিডিয়ার সামনে বলেই ফেললেন -এই বিলের মাটি সোনার চেয়ে খাঁটি, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে হলেও এই বিলের মাটি রা করবো। অন্য একজন মুরুব্বী বললেন- আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, প্রয়োজন হলে এই বিলের জন্য আরও একটা যুদ্ধ করবো তারপরও আমরা আমাদের এই বিলকে ছেড়ে দিব না।

বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে সেখানে বিল রা যেই কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটিকে সবাই যথাযথভাবে সম্মান দেখিয়ে ও নির্দেশ পালন করে চলতো, যার কারনে ওখানে কোন সরকারী লোকও ঢুকতে পারছিল না। সরকারী লোকের উপর তারা এমন ক্ষ্যাপা ছিল যে কোন সরকারী লোকের পরিচয় পেলেই তারা তাকে অপমানিত করে বের করে দিত, এমন কি অনেককে মেরেও বের করে দিয়েছিল বলে শোনা যায়। কারন সেখানে যে তারা শত শত বছরের বংশানুক্রমিক জীবন যাপন করে আসছিলেন। তারা তাদের বাপ-দাদার সেই বসত ভিটা হারাতে চায় না। তাদের বেদনা ছিল অপরিসীম। এই কারনে তারা বিভিন্নভাবে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করেছিল। তারা ব্যানারে লিখেছিল- রক্ত দিব তবু বিল দিব না। তারা মানব বন্ধন করে সরকারকে বলতে চেয়েছিল যে আমাদের পেটে লাথি মারবেন না।

আড়িয়ালবাসী কত বেশি সুসংবদ্ধ ছিলেন তার প্রমান মিলে ২৭জানুয়ারীর ঢাকার এক সহযোগি পত্রিকার হৃদয়বিদারক বর্ণনায়। ঐ পত্রিকার রিপোর্টার ও ফটোসাংবাদিক আড়িয়াল বিল এলাকায় গিয়েছিলেন সরেজমিনে রিপোর্ট করতে। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া, তারা প্রাণ নিয়ে ফিরে এসেছেন। কিন্তু ফিরে এসে যে রিপোর্ট লিখেছেন তাতে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। হৃদয় ভারী হয় আর কন্ঠও হয় বাষ্পরুদ্ধ।
তারা রওয়ানা হয়েছিলেন ঢাকার নবাবগঞ্জের খারহা হয়ে চুরাইন সড়ক ধরে আর আড়িয়াল বিলের দিকে। মুন্সিনগর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে তারা দেখতে পান একটি অস্থায়ী ঘর। উপরে ছামিয়ানা টাঙানো, নিচে খড় বিছানো। চার পাশে "রক্ত দেব, প্রয়োজন হলে প্রাণ দেব তবু পৈতৃক ভিটা ও জমি দেব না" লেখা লাল কালো ব্যানার। বিল রা কমিটির অস্থায়ী ক্যাম্প সেটি। ক্যাম্পে কোন লোকজন নাই।

গাড়ি চলছে বিলের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর অংশের দিকে। সেখানে প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের মূল স্থাপনা হওয়ার কথা। গ্রামের রাস্তার পাশে ছোট একটি চায়ের দোকান। তাতে একজন মাত্র লোক। গাড়ি দেখে হাত তুলে থামার ইঙ্গীত দিয়েছিল লোকটি। কিন্তু সাংবাদিকরা থামেনি। রাস্তার দুই ধারে বিশাল বিল। তার বুবে কোথাও ধান আর কোথাও রবিশস্যের সমাহার। বিশাল বিশাল পুকুর আর মানুষের বাড়ি-ঘর। এসব দেখতে দেখতে দুপুর ১২টায় তারা পৌঁছেছিলেন মরিচপট্টি। থেমেছিলেন এক মসজিদের পাশে। ধারনা করেছিলেন, মসজিদের ছাদ থেকে বিলের একটি ছবি তুলবেন।

কিন্তু তাদের বিপত্তি শুরু হয়েছিল সেখান থেকেই। গাড়ি থামাতে না থামাতেই জনা বিশেক লোক হাজির।
"আপনারা কারা, কেন এলেন, কে আসতে বলেছে, সরকারী লোক কি না"?
একের পর এক প্রশ্ন আড়িয়াল বাসীর। তারাই জানালেন, চায়ের দোকানের যে লোকটি সাংবাদিকদের থামতে বলেছিলেন, তিনি ফোন করে জানিয়েছিলেন গাড়িতে করে সরকারী লোক এলাকায় ঢুকেছে। আর তাতেই লোকজন বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন। মুহুর্তে মসজিদের সামনে নারী-পুরুষ মিলিয়ে কয়েক শত হাজির। সবাই উত্তেজিত, কারো কারো হাতে লাঠি। সাংবাদিকরা যতই বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন তারা সরকারী লোক নন, কিন্তু এলাকাবাসী তা কিছুতেই মানতে নারাজ।

মাঝ বয়সী এক লোক এসে তাদের বললেন, "দেখুন বিমান বন্দরের কাজের জন্য রোববার সরকারী লোক সার্ভেয়ার এসেছিলেন। গ্রামবাসী মার-ধর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এখন সাংবাদিক সেজে সরকারী লোক সার্ভে করতে এলো কি না এটিই সবার সন্দেহের কারন। আপনারা সাংবাদিক হলে কার্ড দেখান"।
ততোনে কয়েকজন মারমূখী হয়ে তেড়ে এসেছেন। ভাগ্য ভাল পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধিকে একজন বয়স্ক লোক চিনতে পারলেন।

পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য উদ্ধারকারী ফোন করলেন আড়িয়াল বিল রক্ষা কমিটির আহ্বায়ককে। আহ্বায়ক বললেন, এলাকার লোক ক্ষুব্ধ, সরকারী লোক মনে করলে আর রক্ষা নাই। সাংবাদিকরা যেন দ্রুত ওখান থেকে সরে যায়। কিন্তু বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী তাদেরকে সেখান থেকে সরতে দিবেন না। তারা প্রশ্ন করলেন "এরা মন্ত্রীর পরে সাংবাদিক কি না, তাহলে তো আমাদের বিপে লিখবে।"
আর একজন বললেন "মন্ত্রী ঢাকায় সাংবাদিকদের কইছে রক্ত দিয়ে হলেও আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করে ছাড়বেন। আমরা কইলাম রক্ত দিয়া বিল রা করবো। এখন মন্ত্রীর পরে সাংবাদিকদের রক্ত আগে বাইর করো।"

ইতোমধ্যে মানুষ বাড়ছে, উত্তেজনাও বাড়ছে। সাংবাদিকদের উদ্ধারকারী তাদের রা করার চেষ্টা করছেন। কেউ শোনে না কারো কথা। জীর্ণশীর্ণ দেহের একজন তেড়ে এলেন। নিজের জমি নেই, পরের জমি বর্গা করে চলে তার জীবিকা। তার প্রশ্ন "বিল গেলে আমি খাব কি? আপনার প্রধানমন্ত্রীকে লেখেন আমাদের পেটে যেন লাথি না মারে।"

কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল। তখন সাংবাদিকরা সাহায্যের জন্য ফোন করেন আড়িয়াল বিল রক্ষা কমিটির সদস্য সচিবকে। সদস্য সচিব এলাকার দু'জন লোক পাঠান সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে। তারা এসে ছোট-খাট বক্তৃতা দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। উদ্ধারকারী দু'জন সাংবাদিকদের এগিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের গাড়িতে এসে বসেন। তারা জানান, মোবাইল ফোনে খবর ছড়িয়ে পড়েছে যে এলাকায় সরকারী লোক ঢুকেছে। তাই পথে পথে গ্রামবাসী গাড়িতে আক্রমন করে বসতে পারে। ফলে সাংবাদিকরা শ্রীনগর যাত্রা বাতিল করে আবার নবাবগঞ্জের পথে ফিরতে থাকেন।

একটি গ্রাম পার হতেই দেখা গেল শতাধিক লোক রাস্তায় লাঠি হাতে দাঁড়ানো। হাতে ব্যানার "রক্ত দেব তবু মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে দিব না।" উদ্ধারকারী একজন গাড়ি থেকে মাথা বের করে উত্তেজিত জনতার উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন "সরে যান ওনারা সাংবাদিক, আমাদের পরে।" ঐ দিকে ততনে মিছিল-শ্লোগান। বাড়ি বাড়ি থেকে নারীরা বেড়িয়ে আসছিলেন লাঠি হাতে।

গাড়ি থেমে গেলে এক যুবোক এসে বললেন "আপনাদের ভাগ্য ভাল মসজিদের মাইকে ঘোষনা হয়নি, নয়তো আপনাদের রা করা কঠিন হতো। এখানে রাত জেগে মানুষ পালা করে পাহাড়া দেয় যেন সরকারী সার্ভেয়ার ঢুকতে না পারে। বলা আছে সরকারী কেউ ঢুকলে প্রতি গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষনা দেবে ও লাঠি-সোটা নিয়ে বেরিয়ে আসবে।"

ঐ সাংবাদিকরা আরও দু'টি লাঠি মিছিল পার হয়ে মুন্সিনগরে ঢোকার আগে গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন এক বৃদ্ধা। হাতে লাঠি। তিনি বললেন "আমার জমি নিতে আইছে, লাঠির এক বাড়ি হলেও আমি দেব।" সাংবাদিকরা আতঙ্কিত। বৃদ্ধার লাঠির বাড়ি দিয়ে শুরু হলেও সম্মিলিত জনতার আঘাতে তা শেষ হবে না তো!

তারা মুন্সিনগর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে সেই অস্থায়ী ক্যাম্পের কাছে ফিরে এলেন। এখন সেখানে একমাঠ জনসভার লোক। সবাই বিক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত। আবার একই প্রশ্ন সরকারী লোক কি না, কার পরে সাংবাদিক? একজন বললেন "সরকার বলেছে, কিছু বহিরাগত আর জামায়াত-বিএনপি নাকি বিমানবন্দরের বিরোধিতা করছে। কারা জামায়াত-বিএনপি? এখানে রক্ষা কমিটির তো সবাই প্রায় আওয়ামীলীগ করে। এখানে আবার দল কি? আপনার ভাতের থালা কাইড়া নিলে আপনি কি বইসা থাকবেন?"
এরকম আহাজারী, চিৎকার, চেচামেচি অনেক্ষণ চললো। কেউ বললেন আড়িয়াল বিলে তার পুকুর আছে, মাছ চাষ করে সংসার চালান। এখানে ইরি ধান একর প্রতি ১০০মণ হয়। বিলে আট মাস পানি থাকে। প্রাকৃতিক মাছ। চাষ করতে হয় না। শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে দরিদ্র মানুষ। বিভিন্ন জেলার শত শত মানুষ বিলে কাজ করে। শামুক হয় লাখ লাখ টাকার। চাষ হয় পেঁয়াজ, রসুন, রবিশস্য। বড় লাউ ও মিষ্টি কুমড়া হয় এই বিলে। সরকার বলছে বেশিরভাগ জমি পরিত্যক্ত। দেখান তো দেখি কোন জমি অনাবাদী।
এই হল সেখানকার একটি বাস্তব খন্ডচিত্র।

সরকারের কাছে আমার অনুরোধ, এরপর যখন কোন বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিবেন, বিশেষ করে যেটা সাধারন মানুষের সাথে সম্পর্কিত সেটা অনেক ভেবে-চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিবেন। কারো প্ররোচনায় পড়ে সিদ্ধান্ত নিলে সরকারের যেমন ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয় তেমনি জনগনেরও দূর্ভোগ বাড়ে।
আসুন আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে যেন সুন্দর করে গড়তে পারি সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করি-
"হে আল্লাহ! শান্তির উৎস তুমি, তোমার থেকেই আসে শান্তি। হে প্রতাপশালী মহামর্যাদার অধিকারী! তুমি বড়ই বরকতময়, প্রাচুর্যশীল -মুসলিম শরীফ।"
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×