শীতকাল আসলেই সমুদ্র দেখার জন্য কাপুরুষ মন আকুলি বিকুলি শুরু করে।এটা আমার একদম পছন্দ না।সমুদ্র মানেই বিশালতা,সমুদ্র মানেই ভয়াবহতা,সমুদ্র মানেই উত্তাল তরঙগ আর সমুদ্র মানেই যৌবন।তাই শীতকালে সমুদ্র দেখার পক্ষপাতি অন্তত আমি না।অনার্স ফাইনাল ইয়ারে যখন পড়ি
তথন ডিপার্টমেন্টের সবাই সিদ্ধানত নিল সমুদ্র দেখতে যাবে।কমিটি গঠন করা হল।এবার লিষ্ট কারা কারা যাবে আর কে কে টাকা দিয়েছে।স্যাররা আমাদের রীতিমত পটাতে শুরু করেছেন।আমি যেতে চাই কিন্ত্ত পকেটে পাত্তি নাই।তাই চুপচাপ ।ক্লাসে বসে আছি আমাদের বন্ধু বিজয় লিষ্ট পড়া আরম্ব করলো।কেকে যাবে আর কারা কারা টাকা দিয়েছে।প্রথম কয়েকজনের নাম ঘোষণার পর আমার নাম।টাকা পুরোপুরি পরিশোধ!হেই কয় কি আমি টাকা দিয়ে দিলাম আর আমি জানিনা? কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম তারপরও বলিনাই।পরে তাকে জিজ্ঞেস করি দোস্ত আমার কাহিনী টা বল শুনি!সে বলে এতকিছু জানিনা তুই আমাদের সাথে যাচ্ছিস।টাকা না থাকলে আমি দিব।বললাম দেখ তুই ভাল করেই জানিস তোর টাকা দিয়ে আমি যাবনা।সে বলল ঠিক আছে যখন পারিস তথনই দিস।আপাতত আমি দিয়ে দিচ্ছি ।সুতরাং যেতে হবে।
মানুষের জ্বালায় শান্তি নাই।নিরবে একটি সমুদ্রের সাথে কথা বলতে চাইছিলাম কিন্ত্ত পারলাম কৈ?সাথে বন্ধুদের হাড্ডা হাড্ডি-
কক্সবাজার গিয়ে কিছুই ভাল লাগলো না।বার্মিজ মার্কেটে গিয়ে একটা কসমেটিক্সের মারমা মেয়েটা ছাড়া।মেয়েটাকে দেখার জন্যই মূলত তার সোপে প্রবেশ করি।কি কিনব ভেবে পাচ্ছিলাম না।চন্দন কিনব ঠিক করলাম।আসলে চন্দনের নামে রাং মাটি ।যাই হোক পারফিউমটা চমৎকার।দাম কত?
-৪৫টাকা।
বিজয় বলল কালকেতো আমরা এগুলো ২০টাকা করে কিনলাম।মেয়েটি বলল তাহলে ২০টাকা করেই দিন।
আরে মেয়েটাতো অনেক ভাল।মনে মনে বলি আরে অন্য দোকানে ২০টাকা বলে তোমার দোকানেও ২০টাকা হবে কেনো?তোমার এখানেতো মূল্য বেশিই হবার কথা!
-যাই হোক আমি বললাম ঠিক আছে আমাকে আমাকে......১০ পেকেট দিন আমি ৫০টাকা করেই দিব।মেয়েটা বলল না না আমিতো ৪৫টাকা চেয়েছিলাম আপনারা ২০টাকা করেই নিতে পারেন।আমি বললাম ধুর বোকা আপনার দোকান আর অন্য দোকান কি এক হলো।টাকাটা সপাং করে রেখে পেকেট নিয়ে চলে আসি।বিজয় তো আহা বেচারা.........
যাই হোক পরের দিন সকালে গেলাম মেয়েটিকে দেখার জন্য কারণ কিছুক্ষণ পরেই আমাদেরকে সেন্টমার্টিনের দিকে যাত্রা করতে হবে।স্যাররা বলে দিলেন সময় সকাল ১০টার মধ্যে হোটেলের গেটে সবাইকে থাকতে হবে।আমি এমনিতেই নাচানাচি কইরা টায়ার্ড ছিলাম।মোবাইলে এলাম দেয়াছিল।৮টার দিকে দিলাম ভো দৌড়।মেয়েটা আর একবার দেখখেই যাই।
গিয়ে দেখি বয়স্ক এক মহিলা বসে আছে।আমি দাঁড়াতেই জি্জ্ঞেস করলেন কি চাই?(মনে মনে বলি তোমার মাইয়াডা.......).
-আচার চাই।
কি আর করা বার্মিজ আচার নিলাম অনেকগুলো দেখতে কত জাত।সবাইকে অনুরোধ বার্মিজ আচারগুলো কেউ খাবেননা।ঐগুলোতে ফর্মালিন দেয়া থাকে।বাজে জিনিস।
অবশেষে বাস.>টেকনাফ>জাহাজ
দেখেন নাফ নটী থাইক্কা আমার দেশ-
নাও আছে মাঝি নাই!গেলো কৈ?
জাস্ট ওয়াটার
a4.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash1/hs245.ash1/17260_103456933011051_100000402347729_86580_3991552_n.jpg
a6.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash1/hs245.ash1/17260_103456936344384_100000402347729_86581_4368662_n.jpg
আমি শুনেছি তোমরা নাকি সাগরের নীল জল দিগন্ত ছুয়ে এসেছ........
দূরে ঐডা কী?জাহাজ হহ জাহাজ-
সেন্টমার্টিনের রাতের আকাশ-
সেন্টমার্টিন আমার কাছে
-আমি আমার সাধ্যমত এখানেই আসি
প্রবাল কারুকাজে করি স্বপ্নের আঁকাআঁকি
ভয়ানক নিখাদ মানুষের কাছাকাছি আসা যায়
এ বালুকায়।।
তোমরা দূরদেশ ভ্রমণের গল্প করো
অপেরা নায়াগ্রা ওয়াটার ফলস তোমাদের কাছে বড়ো
আমি আমার সাধ্যমত এখানেই আসি
দেখি প্রতীচীর তুলোর মত নরোম মেঘে সূর্যের নিস্প্রভ হাসি।
নীল আকাশ নীল জলারণ্যে নীল নীল ঢেউ
সহস্রমাইল জলস্নাত বাতাস আমায় আর কি দেবে কেউ?
বক্ষ টানটান করে নিঃশ্বাস নিতে আসি এ জিঞ্জিরা
ছেড়ে আমার বসতঘর যন্ত্রণাময় পিঞ্জিরা।
এ বালুকায় আমি আর একটা মাদুর শুয়ে থাকি
আকাশের তারাগুণি,সাইসাই গান শুনি বাতাসের একা,একাকি।
ঢেউয়ে ঢেউয়ে চাঁদ চিকচিক করে নাচে
ঢেউ নাচে চাঁদ নাচে, ঢেউ নাচে চাঁদ নাচে।
সুদূর সমূদ্রে জাহাজে,মাছধরার না'য়
মিটমিট জ্বলে জোনাকী,আর মঙ্গলকামনায় কাঁদে বধূরা প্রভুর পায়।
চারদিকে আমার ঢেউ ,ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ সুরে
আকাশে সাদাকালো মেঘ যায় সরে দূরে আরো দূরে।
মনে হয় আমি আছি ভেলায় চলছি ভেসে
অজানা দূর দেশে।
এ আমার ভেলা ,এ এক মায়া, প্রেমময় জিঞ্জিরা
আমার সঙ্গীর ছবি একখান
লাইট প্লেয়িং উইথ ওয়াটার-
কাপ্তায়ের পথে-
অতঃপর একা বড় একা-
রাত কেমন সুন্দরী দেখেন।পোলাপান কেন যে বৌ ছাড়া রাইত জাগে এইডা দেখলে একটু হইলেও বুঝবেন-
অতঃপর কিছু এলোমেলো কথা
মহাশয় আপনারা যারা এদেশটাকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলেন
কিংবা নাক সিঁটকে বলেন এটা কোন দেশ হল?স্রেফ ডাস্টবীন!
আপনারা যারা যেখানে খুশি চলে যান
আমি অসীম ঝুড়ির সন্তান
এই ডাস্টবীনটার মধ্যে নেড়ি কুকুরের মত লেজ নাড়িয়ে নাড়িয়ে
আমার আহার সন্ধান করব,এইখানের দুর্গন্ধ আমার নাকে মাখব,গায়ে মাখব,কপালে মাখব।
তবে দয়া কইরা এই ডাস্টবীনের কাছে আপনারা টাকা বানানোর ফ্যাক্টরী ভাইবা আসবেন না...........
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৭:৫০