somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পেশা

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“ সিগারেট মুখে দিয়া হাঁটলে নিজেরে রাজা রাজা লাগে ”- শহিদ মিয়ার ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে প্রথমেই তাকে প্রশ্ন করেছিলাম আপনি পাবলিক প্লেসে সিগারেট খান কেন? এর উত্তরে সে ওই কথাটি বলল। পাবলিক প্লেস কী জিনিস তা শহিদ মিয়ার বুঝার কথা না। তবে ব্যাপারটি সে অনুধাবন করল এবং তার অনুধাবন শক্তিতে আমি যারপরনাই খুশি। আমি একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। ফিচার রেডি করার জন্য পথে ঘাটে ছুটতে হয়। কথা বলতে হয় পথে আমার দৃষ্টিতে ‘আজব’ লাগে এমন লোকজনের সাথে। একবার মোটর সাইকেল দিয়ে যাচ্ছি দেখি রাস্তার ধারের বড় ড্রেইনটিতে এক লোক ‘ছোট’ প্রকৃতির ডাক সাড়ছে। মোটর সাইকেল থামিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই কাহিনী কী, রাস্তার পাশে যত্রতত্র মূত্র ত্যাগ করছেন কেন? সে ফিক করে হেসে দিয়ে বলল-“আইর্যেন্ট তো, তাই”। আমি তার ইংরেজি উচ্চারণে মুগ্ধ হলাম। যাক প্রধানমন্ত্রী আর শিক্ষামন্ত্রীর স্বপ্ন বিফল হয়নি। দেশের মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম ভাই আপনার নাম কী? –“ জিল্লুর রহমান”। আমি মুখ ফসকে বলে ফেললাম বাহ আপনি তো তাইলে দেশের প্রেসিডেন্ট । তো রাস্তা ঘাটে মুতেন কেন? সে আমার কথায় বিরাট মাইন্ড করে ফেলল। বলল “ওই মিয়া আপ্নে কেডা?” আমার পরিচয় দিতেই সে আরো খেপে গেল। বুঝলাম দেশের মানুষ সাংবাদিকদের উপর বিল্লা হয়া আছে। -“মিয়া আপ্নারা পত্রিকায় ওলট-পালট কতা লিকেন আর আমরা পরি ফ্যাচের মইদ্যে,ইত্রামির আর যায়গা পায় না”। বলেই সে হনহন করে হাঁটা ধরল। আমিও তার পিছে পিছে হাঁটা ধরলাম। তার প্যাচ ধরার জন্য আমার বিরাট উৎসাহ। সে ঘুরে আমার দিকে মারমুখী হয়ে এল। আমি বুঝলাম ঘটনা বেশী সুবিধার না। তাড়াতাড়ি ফিরে এসে মোটর সাইকেল নিয়ে গন্তব্যে চলে গেলাম। এবার আসি শহিদ মিয়ার কাছে। শহিদ মিয়ার সাথে কথা বলে যতদূর জানতে পারলাম যে তার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে, সে একটা খারাপ কাজ করে আর তা হল ফার্মগেটসহ আরও কয়েকটা এলাকায় সে পতিতাদের দালাল হিসেবে কাজ করে । অবশ্য কাজের সময় রাত ১০টার পর। আমাকে অবশ্য সে কথাটি সহজে বলে নাই। যখন তাকে বললাম যে আপনার কথা বললে পত্রিকায় আপনাকে নিয়ে একটা নিউজ করব, আপনার ছবি আসবে তখন সে সহজেই রাজি হয়ে গেল। সে লাফ দিয়ে বলে উঠল-“আরে আমি তো এইডাই চাইতাছিলাম,এইডা হইলে তো আমার কাস্টমার বাইড়া যাইব”। আমি তার আসন্ন ব্যবসায়িক সাফল্যের সাথে নিজের অংশগ্রহনে গর্ব বোধ করতে লাগলাম। অবশ্য বেশী গর্বে না গর্ভবতী হয়ে পড়ি তারও একটা আশঙ্কা কাজ করতে লাগল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই যে এতো ‘কঠিন’ কাজ করেন তো পুলিশের ভয় থাকে না? সে এর ফলে সবার জানা অথচ চমকপ্রদ একটি উত্তর দিল-“হেগো তো সিস্টেম মারা থাহেই,মাজে মইদ্যে ক্যাচাল করলে ফিটিং মারা লাগে আবারো। আর আমার উপ্রে তো কত্ত বস হের ইয়ত্তা নাইগা।আমি কী কী আর একলা এইসব কাম করি লগে আরো পোলাপাইন থাহে না! মাজে মইদ্যে নতুন মাইয়াডিও ক্যাচাল করে তয় ঠিক হয়া যায় , হাজার হউক মানুষ তো। কাম কইরা তো খাইতে হইব”। এই বলে সে লম্বা একটা সুখ টান দেয় সিগারেটে। জিজ্ঞেস করলাম ভাই কবে আসছেন ঢাকায়? –“আইছি ধরেন নিজের নাম কইতে পারি খালি হেইকালে,বাপের নামও মনে নাই,মায়ের চেহারাও মনে নাই। হে আরেক হিস্টরি,আইজকা সব কইলে আর তো আইবেন না। আরেকদিন আইয়েন, মোবাইল নাম্বারডা সেব করেন।” আমি শহিদ মিয়ার মোবাইল নাম্বারটা সেইভ করতে করতে ভাবি বলা তো যায় না কখন কী কাজে লাগে। পেশা আর জৈবিক প্রয়োজনে তো এদেরই দরকার হয়।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের কিছু উল্টা পালটা চিন্তা !

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১০

১।
কলকাতা গিয়ে টুকরা টুকরা হল আমাদের এক সন্ত্রাসী এমপি, কলকাতা বলা চলে তার ২য় বাড়ি, জীবনে কতবার গিয়েছেন তার হিসাব কেহ বের করতে পারবে বলে মনে করি না, কলকাতার অলিগলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×