somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুলাঙ্গার © একটা কিস্্সা :P

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




চৌরাস্তার মোড়ে মনোরম একটা গন-আরামখানা। নারী পুরুষদের আলাদা প্রবেশ পথ আছে।
মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য উন্নতমানের সব ব্যবস্থা আছে, লুটা বদনা ও আছে কয়েকটা। লোকজন তড়বড় করে আসছে এবং যাবার সময় শান্তির দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আরামে হাত মুখ ধোয়ে হেলে দুলে আনন্দে হেসে হেসে চলে যাচ্ছে।
আহ কত যে শান্তি! এখন অনেক আরামবোধ করছি। যাকে বলে একেবারে প্রশান্ত।

আমার লেখা পড়ে হয়তো নাক সিঁটকাচ্ছেন, কেউ হয়তো বলছেন লোকটার মগজ বিকল হয়ে গেছে। গন-পায়খানার নতুন নাম বানিয়েছে। লোকটা আগে থোড়া ভালা ছিল এখন পুরাটা বদ হয়ে গেছে। পায়খানার নাম নাকি আরামখানা! এই সব লোক কেন যে লেখা লেখি করে!?
শুনেন, দস্ত ঠিক আছে এবং মাঝে মাঝে কদাচিৎ সবারই পেট নামে, তবে পায়খানা এবং পাতলা পায়খানা শুনতেই কেমন কেমন লাগে তাই না?
আর একটা গল্পের নাম পায়খানা হবে কেমন করে? আপনারাও আজিব! গল্পটা নুতন এবং উন্নতমানের, তাই নামটাও নুতন এবং উন্নতমানের হওয়া চাই কি বলেন? জানি এখন হ্যাঁ বলছেন, তাইতো আমি অনেক সময় ধেয়ান চিন্তা করে অন্য ভাষার অভিধান পরে স্থিরসিদ্ধান্ত করলাম, গল্পের নাম গন-আরামখানা © হবে এবং আগামী সংস্করণে এই শব্দ অভিধান এবং শব্দকোষে যোগ হবে। যোগ না করলে গন-পায়খানা ডাকতে থাকুন আমার অসুবিধা নেই।
পায়খানা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং বিষয়। যে স্থান বিষয়ে সবাইকে এক মত হতেই হবে। কম হলে দিনে চার ছয় বার সবাইকে যেতে হয়। পায়খানা পাতলা হলেত হয়েছে, হাত থেকে বদনা নামানু যায় না। এখন কথা হল, যে স্থানে সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীবকে দিনে অন্তত ছয় বার (এখানে পয়েন্ট ক্লিয়ার করছি, মল ত্যাগের জন্য দুই বার এবং মুত্র ত্যাগের জন্য চার বার) যে স্থানে সবাইকে দৌড়ে যেতে হয়, সেই স্থানের জন্য সুন্দর একটা নাম বানিয়ে আমি অপরাধ করে থাকলে আমাকে শাস্তি দিন। তবে, আমাকে শাস্তি দেবার আগে চিন্তা করে দেখুন, আমাকে শাস্তি দিলে পায়খানা নামক স্থানে লুটা বদনা টিসু নিয়ে যেতে পারবেন্না। এখন রায় শুনান।

হাঃ! হাঃ!! হাঃ!!! জানি রায় এখন নিজেই নিরুপায়।

আচ্ছা এখন আসল ঘটনায় আসেন; কিস্সা বলছি শুনেন,

ব্যাগ হাতে এক ভদ্রলোক প্রায় দৌড়ে গন-আরামখানায় ঢুকে প্রশান্ত হয়ে ফ্লাস কর বেরিয়ে হাত মুখ ধোয়ে তাইরে নাইরে করে খালি হতে বেরিয়ে গেল।
অন্য এক জন লাইনে খাড়া ছিল। সে সট করে ঢুকে পড়ল। অন্যরা অস্থিরতা করছে।
ভদ্রলোক গাড়িতে উঠার সাথে সাথে চালক দ্রুত চালাতে লাগল।
হঠ্যাৎ ভদ্রলোক ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে ব্যস্তসুরে বলল, ‘এই! আমার ব্যাগ গেল কোথায়?’
‘কি হয়েছে বস?’ বলে চালক দ্রুত গতিরোধ করল।
‘গন-আরামখানায় ব্যাগ রেখে এসেছি। সট করে গাড়ি ঘুরা।’ ভদ্রলোক ব্যস্তসুরে বলল।
‘বস! গন-আরামখানা কি?’ চালক অবাক হয়ে বলল।
‘গন-পায়খানার নতুন নাম। জলদি গাড়ি ঘুরা। বিপদজনক লোকের হাতে পড়লে মহা বিপদ হবে। ব্যাগে অনেক গোপন কাগজ তত্ব আছে। গোয়েন্দার হাতে গেলে সেরেছে, গন আন্দোলন শুরু হবে। কাগজে আমাদের সবার নাম স্বাক্ষর এবং ছবি আছে। ওই যে, যুদ্ধের সময় দেশকে মাগ্না বেচার জন্য এক হয়েছিলাম। তোর দাদা ও সেই গুলমিটিং এ ছিলেন। জলদি কর, নতুবা কবর থেকে তুলে এনে ফাঁসিতে ঝুলাবে।’ বলে লোক অস্থিরতা শুরু করল যেন এক্ষণি পাতলা পায়খানা হবে। (ঘেন্না হচ্ছে তাই না?)
‘বলেন কি বস! এত গোপন তত্ব গন-পায়খানায় রেখে এলেন কেমন করে? জনগনের হাতে গেলে জন্মাবিচ্ছিন্নের জন্য পায়খানাই বন্ধ করে দেব।’ বলে চালক হন্যের মত চালাতে লাগল।
‘আরে গন-পায়খানায় নয় গন-আরামখানা।’ ভদ্রলোক বেশী দেশদ্রোহী বলল।
‘একই কথা।’
‘আরে না এক কথা নয়।’
‘তাহলে?’
‘বাঙালিরা পানিও খায় ভাত খাও। এই জন্যইত আমরা পানি পিয়ে চাউল খেয়ে যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু পায়খানায় বসে পায়খানা করার জন্য বাঙালিরা মরিয়া হয়ে উঠেছিল। আপসোস! নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েও বাঙালিরা পানি পান করা শিখল না। তাইতো তাদের সাথে আমাদেরকেও কষ্ট করে ভাতের সাথে পানি খেতে হয়।’ ভদ্রলোক বেশী দেশদ্রোহী বিরক্ত হয়ে বলল।

ফ্লাস করে ছোটকোঠা থেকে বেরুবার সময় ডান পাশে একটা ব্যাগ দেখে হাতে নিয়ে বেরিয়ে এল এবং হাত ধোবার সময় নিচে রেখে হাত ধোতে লাগল। পাশের লোক হাত ধোয়ে ডান হাতে পকেট থেকে রুমাল বার করতে করতে বাম হাতে ব্যাগ তুলে বগলদাবা করে হাত মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেল। অন্যলোক হাত ধোয়ে মিশিনে হাত শুকিয়ে ব্যাগ হাতে নিলে দেশদ্রোহীটা প্রবেশ করে পিস্তল বার করে গুলি চালিয়ে বলল, ‘ঐ ছোটকোঠায় একটা ব্যাগ ছিল। কে পেয়েছ সট করে দাও নতুবা সবাইকে মেরে ফেলব।’
লোক ব্যাগ মাটিতে রেখে ধাক্কা দিয়ে বলল, ‘আমি এমনিতেই থানায় নিয়ে যেতাম। এই নিন আপনি আসায় আমি হয়রানি থেকে বেচেছি।’
‘ব্যাটা ব্যাগ খুলেছিলে?’ দেশদ্রোহী দাঁত কটমট করে বলল।
‘খুলার সময় পানি। বেশী বেগ পেয়েছিল। এখন পেট খালি হয়ে গেছে। হেটে যাবার চিন্তা করছিলাম। ভুখ লাগলে ফালতু কাজ করতে ভালা লাগে না।’ লোক বলল।
‘খুব ভালো করেছিস। এই নে তোর বকশিশি।’ বলে দেশদ্রোহী নিশানা করতেই হুলস্থূল শুরু হয়ে গেল এবং পলকে গন-আরামখানার আরাম হারাম হল।
দেশদ্রোহীরা দৌড়ে গাড়িতে উঠে দ্রুত প্রস্থান করল।
অনতিদূর থেকে একজন ডিটেক্টরে দিয়ে ঔ লোককে অনুসরণ করছিল। রুমালে হাত মুছে যে বেরিয়েছিল।
রুমালআলা হাত উঠিয়ে ক্যাব থামিয়ে উঠে থানায় নিয়ে যাবার জন্য বলল। দেশের সব থানার বড় থানা হল এটা।
ডিটেক্টরআলাও ক্যাব থামিয়ে সামনের ক্যাবকে অনুসরণ করার জন্য বলল। থানার সামনে ক্যাব থামলে ডিটেক্টরআলা মোবাইল বার করে গুরগম্ভীরসুরে বলল, ‘আবে ওই! ব্যাগ কোথায়?’
দেশদ্রোহী চমকে লাফ দিয়ে উঠে বলল, ‘ওই! কার সাথে কথা বলছিনি বেআদব কোথাকার?’
‘তোর ব্যাগ খুলে দেখ, চক্ষুকর্ণেরে বিবাদ ভঞ্জন হবে এক্ষণি। তালকানা কোথাকার!’ ডিটেক্টরআলা মুখ বিকৃত করে বলল।
‘মরার আগে দম টান, দেখে বলছি। শুন পারলে গন-আরামখানা যা ব্যাগ দেখেই আমি তোর আরাম হারাম করব।’ দেশদ্রোহী দাঁত কটমট করে বলে ব্যাগ খুলতে না পেরে চিন্তিত হয়ে বলল, ‘ওই আমি আমার ব্যাগ খুলতে পারছি না। তুই কি বলছিলে আবার বুঝিয়ে বল।’
‘তোর ব্যাগে এখন বাংলাদেশের সব বড় থানায়। সেই কখন আমার আওয়াত ব্যাগ এসে যেত কিন্তা ঔ ব্যাটাকে আমি চিনি এবং সে আমাকে চিনে তাই গন-পায়খান ঢুকিনি।’ ডিটেক্টরআলা সাধারণ সুরে বলল।
‘ওটার নাম গন-পায়খানা নয়, গন-আরামখানা। এক বদবাঙালি নতুন শব্দ বানিয়েছে।’ দেশদ্রোহী বিরক্তসুরে বলল।
‘আবে ঔ! বাঙালির জয়গান গাওয়ার সময় এখন নয়। তোর বসকে ফোন করে ব্যাগ না খুলার হুমকি দেবার জন্য বল। ব্যাগ খুললেই সর্বনাশ হবে, একটাও রেহাই পাব না। বাঙালিরা আবার জানবাজি ধরবে। খুলার আগে স্ত্রী সন্ত্রান নিধনের হুমকি দিলে ব্যাগ দিয়ে দেবে, কিন্তু খুলে ফেললে ব্যাটাটা বলবে, পারলে মার আমরা আসছি।’ ডিটেক্টরআলা গম্ভীরসুরে বলল।
‘তুই আরাম কর আমি ফন করছি।’ বলে দেশদ্রোহী থানায় ফোন করে বলল, ‘তোমার সাথে আমার ব্যাগ রদবদল হয়েছে। খবরদার ব্যাগ খুলবে! ব্যাগ খুললে তোমার সব আপনজনকে জানে মেরে ফেলব।’
থানা প্রধান লাফ দিয়ে উঠে বলল, ‘কার সাথে কথা বলছ জানো!’
‘আমি জেনে শুনেই ফোন করেছি। ব্যাগ নিয়ে গন-আরামখানায় এসে তোমার ব্যাগ নিয়ে যাও। কারু কোনো ক্ষতি হবে না।’ দেশদ্রোহী গুরু গম্ভীরসুরে বলল।
‘ঠিক আছে আমি আসছি।’ বলে থানা প্রধান লাইন কেটে হাত দিয়ে ইশারা করলে সবাই দৌড়ে এল।
সবাইকে উদ্দেশ্য করে থানা প্রধান বলল, ‘এই ব্যাগে এমন কিছু আছে যার জন্য ফোন করে আমার আপনজন হত্যার হুমকি দিয়েছে। বাইরে যারা আছে সবাইকে গন-আরামখানা যাবার জন্য এবং এই ব্যাগ নিয়ে কোথায় যায় সন্ধ্যান জানার জন্য বলো। আর শুন, আমরা কিন্তু অনেক বড় দেশদ্রোহী এবং সন্ত্রাসির সন্ধান পেয়েছি। কোনো ক্রমে যেন হাতছাড়া না হয়। ছোটখাট দেশদ্রোহী এবং সন্ত্রাসিরা আমাকে হুমকি দেবার সাহস পাবে না। এরা নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসি। আর শুনো, ওদেরেকে হাতে নাতে ধারার আগ পর্যন্ত এ খবর যেন সাংবাদিকদের কানে না যায়। সব পণ্ড করে দেবে। কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা ওরা শুধু আগুনে হাওয়া দেয়। চলো।’
অন্যরা ফোন এবং মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হল। থানা প্রধান ব্যাগ হাত লয়ে বেরিয়ে পড়ল।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×