somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে ধরা পড়ল সেই জ্বীনের বাদশা। :|:|

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
''":)
'
'
'
'
'
'
'
'
'
'
'
'

':P:P

:((

কৃষি মজুর আজমল হোসেন নিজের কোটিপতি আর অপরাধ জগতের দুর্ধর্ষ গডফাদার হয়ে ওঠার বর্ণনা দিয়েছে পুলিশের কাছে। গ্রেপ্তারের পর তার সকল অপরাধের কথা স্বীকার না করলেও আজমল অপরাধ জগতের গডফাদার হিসেবে তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের নাম-ঠিকানা ফাঁস করে দিয়েছে। সে একজন জ্বীনের বাদশা।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদী বেষ্টিত বিশ্বনাথ গ্রামের বাসিন্দা আজমল হোসেন। দরিদ্র পিতার একমাত্র সন্তান। পিতার নিজের কোন জায়গাজমি ছিল না। নদীর পাড়ে টিনের দোচালা বাংলাঘরে মাথা গুঁজে থাকতো। অন্যের জমিতে কাজ করে এবং নদীতে মাছ বিক্রি করে সংসার চলতো। ১৯৮৯ সালে আজমলের পিতার মৃত্যু হয়। তখন তার বয়স ২৫ বছর। পেটের দায়ে মাছ ধরে বিক্রি করা এবং অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো আজমল।


১৯৯০ সালে সে বিয়ে করে। তারপর স্ত্রীকে রেখে ধান কাটার কামলা হিসাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে যায়। বছরের বেশির ভাগ সময় ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন বাড়িতে দিনে ক্ষেত খামারে কাজ করে রাত কাটাতো ওইসব বাড়িতেই। ওই সময় হিসাবু নামের এক প্রতারকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই হিসাবুর কাছেই তার অপরাধকর্মে হাতেখড়ি। জিনের বাদশা সেজে কিভাবে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা যায়, কিভাবে সোনার মূর্তি ও ধাতব মুদ্রা বিক্রির নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া যায় ইত্যাদি বিদ্যা তার মাধ্যমে সে শেখে। ভিন্ন কৌশলে লোকজনকে আকৃষ্ট করতে মোবাইল ফোনে কণ্ঠ বিকৃত করে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে কণ্ঠস্বর পরিবর্তনও রপ্ত করে সে।
তারপর ১৯৯৫ সালে আজমল চলে আসে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের নিজ বাড়িতে। তারপর গোসাইপুর, রামনাথপুর, বিশুবাড়িসহ কয়েকটি গ্রামের বেকার যুবকদের সংগঠিত করে। শুরু হয় পুরাতন আমলের মূল্যবান ধাতব মুদ্রা এবং সোনার ও কষ্টি পাথরের মূর্তির ব্যবসা। এই ব্যবসা করতে গিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয় ফরিদপুর জেলায়। তারপর একে একে বাড়তে থাকে ঘটনা ও প্রতারণার সংখ্যা- বাড়তে থাকে মামলার সংখ্যাও। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও গোবিন্দগঞ্জে একাধিক হত্যা, অপহরণ, প্রতারণা, অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়। ততক্ষণে আজমল সারাদেশে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। পুলিশও আজমলকে গ্রেপ্তারে মরিয়া হয়ে ওঠে। ৫ বছরে শতাধিক অপরাধ কাজ করলেও পুলিশ ছুঁতে পারেনি তাকে। ইতিমধ্যে আজমলের অপরাধ জগতের কথা ফাঁস করতে হুমকি দেয় তার এমএ পাস স্ত্রী ফারজানা আকতার। এ কথা জানতে পেরে আজমল তাকে হত্যার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে আজমলের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানার স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন।


আজমলের প্রতারণার প্রথম টার্গেট যে বাড়িতে যখন থাকতো সেই বাড়ির ধনী মালিক। তার কাছে খুলে বলতো গোবিন্দগঞ্জে কমদামে সোনার ও কষ্টিপাথরের মূর্তি ছাড়াও ধাতব মুদ্রা পাওয়া যায়। এসব সস্তায় কিনে নিয়ে যেতে উৎসাহিত করতো। সহজ সরল মালিক তার আশ্রিতা কৃষিমজুরের কথায় বিশ্বাস করে রাতারাতি আরও বড়লোক হওয়ার মতো সোনার হরিণ ধরতে পা বাড়ায় আজমলের বাড়িতে। তারপর মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে লোহার মূর্তিতে রঙ করা মূর্তি সোনা হিসেবে তুলে দেয়া হয়। আবার এসব নিয়ে যাওয়ার সময় করতোয়া নদীর গোসাইপুর ঘাটে তার লোকজন দিয়ে কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। এভাবে প্রতারক আজমল চক্রের ফাঁদে পড়ে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার আশায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২ শতাধিক মানুষ শিকার হয় প্রতারণার। শুধু তাই নয়, আজমলের আহ্বানে প্রতারণার ফাঁদে পা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েসহ কয়েকজন গৃহবধূ। তার বাড়িতে এসে ধর্ষণের পর খুন হয়েছে কয়েকজন। কিন্তু আজমল ছিল পুলিশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ইতিমধ্যে একের পর এক জিনের বাদশা সেজে প্রতারণা করে আজমল বাড়িঘরসহ তার এবং তার পরিবারের চেহারা বদলে দেয়। রাতারাতি তার দরজাবিহীন দোচালা টিনের ঘরের স্থানে গড়ে তোলে বিলাসবহুল বাড়ি। দেশ বিদেশ থেকে কাঠ এনে তৈরি করে বাড়ির দরজা জানালা। বিয়ে করে একের পর এক। তার এলাকায় জমি কেনে কমপক্ষে ১শ’ বিঘা। নিজের তিন ছেলের জন্য ৩টি দামি মোটরসাইকেল এবং নিজের জন্য একটি মোটরসাইকেল কেনে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ব্যস্ততম বালুয়া বাজারে কোটি টাকায় একটি দোকান কেনে। সেই দোকানটি একটি মোটরসাইকেলের শো-রুম। আর এই শো-রুমের মালিক জিনের বাদশা নামের প্রতারক চক্রের গডফাদার আজমল হোসেন। সমপ্রতি র‌্যাব-৫ অভিযান চালিয়ে বালুয়া বাজার থেকে আজমলকে গ্রেপ্তার করে। দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে। পুলিশের কাছে আজমল তার অনেক অজানা কাহিনী স্বীকার করে।

Click This Link
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×