somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মনে করে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখেনি সরকার। অন্যদিকে এক্ষেত্রে এখন র্যাবের পথে হাঁটছে পুলিশ।
২০১০ সালের বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলেছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যম ও বিরোধী দলের প্রতি সরকারের বিধ্বংসী মনোভাব চরমে পৌঁছেছে। গণমাধ্যম ও সিভিল সোসাইটির ওপর আক্রমণ শিরোনামে রিপোর্টের অংশে বলা হয়, ২০১০ সালের জুন মাসে সরকারবিরোধী পত্রিকা আমার দেশ’কে জোর করে বন্ধ করে দেয়া হয়। এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। মাহমুদুর রহমান এ ব্যাপারে আদালতে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে মারধর করেছে এবং র্যাব কর্মকর্তারা তাকে চোখ বেঁধে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গোপন কুঠুরিতে রেখে নির্যাতন করেছে। এমনকি তাকে খাবার এবং পানিও দেয়া হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, আমার দেশ পত্রিকায় সরকারের বিভিন্ন সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের দায়েই আক্রোশে এমনটি করা হয়েছে। আদালতে আমার দেশ পত্রিকার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
স্বাধীন মত প্রকাশে সরকারি বাধার আরেকটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে গিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্টে বলা হয়, পুলিশ ২২ মার্চ দৃক গ্যালারিতে ক্রসফায়ার শিরোনামে শহীদুল আলমের একটি প্রদর্শনী শুরুর আগ মুহূর্তে এটা বন্ধ করে দিতে বাধ্য করে। পুলিশের দাবি, ক্রসফায়ারের মাধ্যমে র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ছবির এই প্রদর্শনী সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারত। সরকারের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জনপ্রতিবাদ ও আইনি প্রক্রিয়ার প্রেক্ষিতে অবশেষে ৩১ মার্চ প্রদর্শনী করতে সক্ষম হয় সংশ্লিষ্টরা।
এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে দেশে গুরুতর মানবাধিকার সমস্যা সমাধানে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রক্ষা হয়নি। বন্ধ হয়নি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সেই সঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দণ্ড থেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন।
উদ্বেগ প্রকাশ করে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্বেগজনকভাবে ক্রমশই র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাপদ্ধতি গ্রহণ করছে পুলিশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পুলিশ কয়েকশ’ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এতে বলা হয়, বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের লক্ষ্যে পরিণত করে তাদের গ্রেফতার এবং পরে অভিযুক্ত করে পাঠানো হয়েছে কারাগারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে নির্বাচনের পরপরই আওয়ামী লীগ সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ‘এক বিন্দুও ছাড় নয়’—এমন সংকল্প ব্যক্ত করেছিল। তবে এরপরও তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। উল্টো ২০১০ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ভুল কিছু করছে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০৪ সালে র্যাব গঠন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬২২ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করে র্যাব বরাবরই দাবি করে আসছে যে তারা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালান এমনটি মনে করেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হেফাজতে থাকা অবস্থায়ই বেশিরভাগ হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের শরীরে আঘাত ও নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
২০০৯ সালে এই মানবাধিকার সংস্থাটির চেয়ারম্যান এসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে করার দাবি জানালেও এ পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেই সঙ্গে বলা হয়, এসব ঘটনার জন্য একজন র্যাব সদস্যকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, ২০১০ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের জন্য কোনো নিরাপত্তাকর্মীর দণ্ড হয়নি। জেলহাজতে বেশকিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও তা তদন্তে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিডিআর বিদ্রোহে সেনা ও বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর জন্য প্রকৃত দায়ীদের জবাবদিহি করা হয়েছে সামান্যই।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার-এর রিপোর্ট উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের বাংলাদেশ সম্পর্কিত চ্যাপ্টারে বলা হয়, ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ে সীমান্তে কমপক্ষে ৯৩০ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী হত্যা করে। বাংলাদেশ বার বার সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য ভারতের কাছে দাবি জানালেও এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এছাড়া রিপোর্টে বাংলাদেশে শিশু ও নারীর অধিকার বঞ্ছনা, নারী নির্যাতন, দুর্নীতির মামলার ক্ষেত্রে বৈষম্য, রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যু এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের বিষয়টি বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট প্রকাশ
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×