somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যা ও বিচার বহির্ভুত হত্যা

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ খুন হচ্ছে। পাখির মতো গুলি করে মানুষ মারছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বা বিএসএফ। আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন ও মানবাধিকারের কোনো তোয়াক্কা করছে না তারা। কখনও কখনও সীমান্ত অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকেও মানুষ খুন করছে বিএসএফ। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১০ সালে বিএসএফ সীমান্তে ৭৪ বাংলাদেশী নাগরিক খুন করেছে। পৃথিবীর অন্য কোনো সীমান্তে প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষীর হাতে এত নাগরিক খুন হওয়ার নজির নেই। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের সীমান্ত রয়েছে। এ তিন দেশের সীমান্তেও বিএসএফ এত খুন করে না। বাংলাদেশ সীমান্তেই তারা প্রতিনিয়ত খুন করছে।
বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সীমান্ত অতিক্রম করছে বলে কাউকে মেরে ফেলার বিধান পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। সীমান্ত অতিক্রমের অপরাধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজ নিজ দেশের আইনের হাতে ন্যস্ত করাই হচ্ছে বিধান। আইন অনুযায়ী আদালত অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে দণ্ড দেবেন। দেখামাত্রই গুলি করে মেরে ফেলা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। মানবাধিকার সংস্থা
অধিকারের অনুসন্ধান অনুযায়ী গত এক বছরে বিএসএফের হাতে খুন হওয়া ৭৪ বাংলাদেশী নাগরিকের মধ্যে ২৪ জনকে নির্যাতন এবং ৫০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ২০১০ সালে আর ৭২ জন বিএসএফের হাতে আহত হয়েছেন। বিএসএফের হাতে আহত ৭২ জনের মধ্যে ৩২ জন নির্যাতিত ও ৪০ জন গুলিবিদ্ধ হন। একই সময়ে ৪৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক বিএসএফের হাতে অপহৃত হয়েছেন। সিলেটের জৈন্তা সীমান্তে দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশী ভূমি। এ নিয়ে কয়েকদফা উত্তেজনা দেখা দেয় জৈন্তা সীমান্তে। এ সময় বিএসএফ গুলি করলেও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীদের গুলি ছুড়তে নিষেধাজ্ঞা ছিল উপর থেকে।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, ২০০৯ সালে ৯৮ জন, ২০০৮ সালে ৬২ জন, ২০০৭ সালে ১২০ জন, ২০০৬ সালে ১৪৬ জন, ২০০৫ সালে ১০৪ জন, ২০০৪ সালে ৭৬ জন, ২০০৩ সালে ৪৩ জন, ২০০২ সালে ১০৫ জন, ২০০১ সালে ৯৪ জন বাংলাদেশী নাগরিক সীমান্তে খুন হয়েছেন বিএসএফের হাতে। অর্থাত্ গত ১০ বছরে ৯২২ জন নাগরিক বিএসএফের হাতে খুন হয়েছেন।
গত ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ ফেলানী নামের এক কিশোরীকে খুন করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখে। কাঁটাতার ডিঙিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করার সময় তাকে গুলি করে বিএসএফ। গুলিতে প্রাণ হারানোর পর তার লাশ কয়েক ঘণ্টা ঝুলে ছিল কাঁটাতারে। একপর্যায়ে বিএসএফ পশুর মতো লাশটির হাত-পা বেঁধে বাঁশে ঝুলিয়ে কাঁধে করে নিয়ে যায়। এই দৃশ্য ভারতীয় পত্রিকায় প্রাকাশিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ফেলানী হত্যার বিষয় জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে। কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ড দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেউ বিনা ভিসায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করলে শাস্তির বিধান রয়েছে। দণ্ডবিধি অনুযায়ী পাসপোর্ট আইন ও ইমিগ্রেশন আইনে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমকারীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে ৩ মাস কারাদণ্ড। গুলি না করে কাউকে ধরে নিয়ে গেলে ইমিগ্রেশন আইন বা পাসপোর্ট আইন ছাড়াও অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে মামলা দেয় ভারতীয় বাহিনী। এতে সহজে কেউ আর বের হয়ে আসতে পারে না। আইন অনুযায়ী বিচারের পর কারা ভোগ করা শেষ হলে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীদের কাছে হস্তান্তর করবে। এ আইনটি ভারতীয় বাহিনী মানছে না। তারা সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে দেখামাত্রই গুলি করে মানুষ মারছে।
অপরদিকে ভারতীয় কোনো নাগরিক সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধভাবে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করলে পাসপোর্ট আইন বা ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী বিচার হয়। অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হিসেবে ধরা পড়লে সঙ্গে সেই অপরাধের অভিযোগ আনা হয় সংশ্লিষ্ট অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় বাহিনীর ভয়ে মানুষ এখন জমি চাষ করতেও সাহস পাচ্ছে না। অপরদিকে ভারতীয় নাগরিকরা সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে এসে বিনা বাধায় চাষাবাদ করছে। বিশেষ করে ২০০৯ সালে বিডিআর সদর দফতরে বিডিআর-এ কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্তে গুলি ছোড়া নিষিদ্ধ ছিল। বিডিআর তখন থেকে সীমান্তে আর গুলি চালাতে পারে না।
বাংলাদেশ সীমান্তেই সবচেয়ে বেশি মানুষ খুন করছে ভারত

২০১০ সালে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার ১২৭]

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো - ছবি ব্লগ

লিখেছেন শোভন শামস, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

"পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো", কিংবা "পোস্টকার্ড রো" বা "সেভেন সিস্টারস" নামে পরিচিত, বাড়িগুলো। এটা সান ফ্রান্সিসকোর আলামো স্কোয়ার, স্টেইনার স্ট্রিটে অবস্থিত রঙিন ভিক্টোরিয়ান বাড়ির একটি সারি। বহু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×