somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

NAF’S DREAM HALL (নাফ’স ড্রিম হল)!!!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নাফ কখনো মেঘ হয়ে আকাশের বুকে,কখনো বা ঢেউ হয়ে সমুদ্রের বুকে।কখনো যেতে হয় বিমানে আবার কখনো লঞ্চে।মহা ব্যাস্ততা জীবন তরীতে।জন্ম যদিও ফ্রান্সে বড় হয়েছে অষ্ট্রেলিয়ায়।পড়ালেখা শেষ করেছে সেখানেই।বর্তমানে যুক্তরাজ্যে একটি কোম্পানির মার্কেটিং এক্সিকিউটিব হিসেবে নিযুক্ত আছে।তার বিদেশী বন্ধুর নাম মিলান।মিলানের জন্মস্থান ইতালী।বড় হয়েছে অষ্ট্রেলিয়ায় মামার বাড়ীতে।নাফের তার কলেজ বন্ধু।অনেক দিন পর হঠাত দেখা আকাশ পথে।দু’জনই যাচ্ছেন ইতালীতে।নাফ যাচ্ছে তার কাজ নিয়ে।কিন্তু মিলান যুক্তরাজ্য এসেছিল বেড়াতে।সেখান থেকে কয়েকদিন ঘুরে যাবে নিজের বাড়ী থেকে।নাফের গন্তব্য স্থলের পাশেই ছিল মিলানের বাড়ী।বিমান থেকে নেমে নাফ গিয়ে উঠল বন্ধু মিলানের বাড়ীতে।মিলান প্রায় তিন বছর পর এসেছে নিজ বাড়ীতে।কিছুদিন এদিক সেদিক ঘুরে দেখবেন।সেই হিসেবে বন্ধু নাফকে পাশে পেয়ে খুবই উপকার বোধ করছে মিলান।দু’জন হওয়াতে সময়টা ভাল মত কাটবে।যদিও মিলানের বাড়ীতে রয়েছেন তার চাচারা।তার দুই চাচার মধ্যে একজন অর্ধ-মুসলিম।বিয়ে করেছেন মুসলিম পরিবারের মেয়ে।মিলান তার মমের কাছ থেকে শুনেছে তার বড় চাচা মুসলিম হয়ে গেছে।যদিও তারা এখনো আলাদা হননি।সেই চাচার ঘরে একটা মেয়ে আছে নাম আরিয়ান।বয়স তেমন একটা হয়নি।কিছুদিন হল এ লেবেলে ভর্তি হয়েছে।মিলান তার পরিবারের সবার সাথে নাফকে পরিচয় করিয়ে দিল।আর বলল তার সফর সঙ্গী হিসেবে সে এখানেই থাকবে।নাফ সেখানে কয়েকদিন অবস্থান করতে না করতেই আরিয়ানের প্রেমে পড়ে যায়।কিন্তু কোন অবস্থাতেই প্রকাশ করতে পারছে না।শুধুমাত্র বন্ধু মিলান কিছু মনে করবে কিনা ভেবে চক্ষু লজ্জায় কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।অতচ আরিয়ান সবার সাথে খুব সহজ ভাবে আচরন করে।মাঝে মাঝে মিলান আর নাফের সাথে আড্ডা দিতে ওদের রুমে আসে।এভাবে কোন মতে চলল নাফের জীবন।এদিকে তার কাজও প্রায় শেষের পথে।এদিকে মমের কাছ থেকে ফোন এল মিলানের কাছে চলে যেতে হবে অষ্ট্রেলিয়ায়।সে নাফকে বলল আমি আর বেশি দিন থাকতে পারব না হয়ত আগামীকালই যেতে হবে।তোমার যতদিন কাজ শেষ না হয় ততদিন এখানেই তাকবে।আমি সব ঠিক করে দিয়ে যাব।কোন সমস্যা হবে না।মিলান চলে গেল আর মমের কাছে কিন্তু নাফ রয়ে গেল সেই বাড়ীতে।ইতোমধ্যে কাজও শেষ হয়ে গেল।কিন্তু এখনো আরিয়ানকে তার মনের কথা বলতে পারল না।কথা হয় দেখা হয় কিন্তু এর বেশি কিছু বলার সাহস পায় না।অনেক দিন হল নাফের কোন খবর পাচ্ছেন না তার মা।এর মধ্যে ছেলের জন্য পাত্রিও ঠিক করে ফেলেছেন।পাত্রি দূর সম্পর্কের এক মামাত বোন।ছলে ফিরে আসলেই মহা ধুমধাম করে বিয়ে হবে।পাত্র-পাত্রি কেউই কাউকে দেখেনি।অতচ নাফ এ ব্যাপারে কিছুই জানে না।সে তার মাকে ফোন করে বলল আমার অফিসে নতুন একটা প্রজেক্ট শুরু হয়েছে সে জন্য আমাকে আরো কিছু দিন এখানে থাকতে হবে।আর বন্ধু মিলানকে ফোন করে বলল নতুন প্রজেক্ট এর কারনে আরো কিছুদিন থাকতে হবে এখানে।হয়ত বছর খানেক সময়ও লাগতে পারে।মিলান বলল তোমার কোন সমস্যা নেই যতদিন ইচ্ছে হয় ততদিন আমাদের বাড়ীতেই থাকবে।হয়ত আমি আবারও আসতে পারি।নাফের তো কোন কাজ নেই।নতুন একটা পার্ট টাইম কাজ শুরু করেছে।বাড়ীতে থাকতে থাকতে সবার সাথে ভাল সম্পর্ক হয়ে এল।সে এখন ওই পরিবারের একজন সদস্যের মতই।এদিকে আরিয়ানের মমও নাফকে অনেক পছন্দ করে।তিনি মনে মনে তাকে মেয়ের জামাই বানানোর চিন্তাই করছেন।এরি মাঝে হঠাত একদিন নাফের কাছে ফোন এল তার মা বিষন অসুস্থ।যত দ্রুত সম্ভব সে যেন বাড়ীতে ফিরে আসে।এ কথা শোনার সাথে সাথে নাফ আর দেরি করল না পরের দিন স্পেশাল ফ্লাইটে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিল।ভাগ্যের এ কেমন পরিহাস সে পোছার কয়েক মিনিট পর তার মা পূথিবী থেকে বিদায় নিল।দুনিয়াতে এই মা ছাড়া আর কোন আপনজন বলতে নাফের ছিল না।মা মারা যাওয়ার সময় বলে যান তার পছন্দের পাত্রিকে যেন বিয়ে করে।এই মুহুর্তে নাফ বিষন অসহায়।একদিকে মায়ের অনুপস্থিতি অন্যদিকে মায়ের শেষ চাওয়া পূরন।কি করবে ভেবেই পাচ্ছে না।সে মেয়েটিকে ডেকে সব কথা খুলে বলল।মেয়েটিও নাফের কথা শুনে বিষন আবেগাফ্লুত হয়ে গেল।সে নাফকে সান্তনা দেবার চেষ্টা করল।আপনার পছন্দের মানুষকেই বিয়ে করবেন।এ ব্যাপারে আমি আমার সর্বোচ্চ সাহায্য করার চেষ্টা করব।নাফ এবার কিছুটা সস্থির নিঃশাস ফেলল।সে আরিয়ানের ব্যাপারে সব কথা মিলানকে ফোন করে বলল।মিলান কোন উত্তর দিল না।শুধু বলল আগে তুমি আস তারপর না হয় সব দেখা যাবে।আমিও এখন আমাদের বাড়ীতে।কয়েকদিন হল এসেছি।এদিকে সব গুছিয়ে আরিয়ানের উদ্দেশ্যে রওনা দিল নাফ।বিমান থেকে নেমে একটু কৌ্তুহল মনে হল।মিলান তাকে নিতে আসে নি।মনে মনে একটু রাগও করল।আবার চিন্তা করল হয়ত কোন সমস্যা হয়েছে।সে জন্য মিলানকে আর কিছুই বলল না।একাই বাড়ীতে চলে আসল।মিলানের বাড়ীতে ঢুকতেই কেমন যেন নিরবতা অনুভব করল।বাড়ীতে তেমন কারো উপস্থিতি দেখতে পেল না।অনেক্ষন একা দাড়িয়ে থাকার পর মিলান এল।নাফকে দেখে চোখের জ্বল ধরে রাখতে পারল না।নাফকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল।কিন্তু এখনো নাফ কি হয়েছে ভেবে পাচ্ছে না।আশেপাশে কাউকে না দেখে ভাবল আরিয়ানরা হয়ত কোথাও বেড়াতে গিয়েছে।একটু পর জানতে পারে তারা সবাই মর্মান্তিক এক সড়ঁক দুর্ঘটনায় মারা যায়।তাদের পরিবারের কেউই আর বেঁচে নেই।একথা শুনে নাফ কিছুক্ষনের জন্য বাকরুদ্ব হয়ে গেল।কোন কথাই বলতে পারছিল না।শুধু দু’চোখের কোনা বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল।মিলান তাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করল।সর্বস্ব হারিয়ে নাফ কেমন যেন অসহায় হয়ে পড়ল।সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল আর কখনো বিয়ে করবে না।এভাবে বাকী জীবনটা আরিয়ানের স্মৃতি নিয়ে কাটিয়ে দিবে।আজ আরিয়ানদের শেষ অন্তষ্টক্রিয়া।সব কিছু শেষে যখন ঘুমিয়ে পড়ল নাফ স্বপ্নে দেখল আরিয়ান তাকে বলছে সে যেন ঘরের প্রার্থনা হলে আসে।সেখানে তার জন্য আরিয়ান অপেক্ষা করতেছে।সেখান থেকে দূরেরে কোন এক জগতে গিয়ে দু’জন সুখের ঘর বাধবে।আরিয়ানের ঘুম ভেঙ্গে গেল।আলতো ভাবে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সময় প্রায় ১২ টা।সে তার স্বপ্নের সব কথা একটা ডায়রিতে লিখে রাখল।তারপর পাক-পবিত্র হয়ে প্রার্থনা হলে দিকে পা বাড়াল।হলে ঢুকতেই কেমন যেন অনুভব করল সে।একটু পর সেখান থেকে বিকট একটা আওয়াজ এল এই বলে “বিদায় হে পূথিবী।“আওয়াজ শুনে মিলানের ঘুম ভেঙ্গে গেল।সে তার পাশে নাফকে খুঁজতে লাগল।।কিন্তু কোথায় পেল না।তার একটু একটু ভয় হল।প্রার্থনা হলে গিয়ে দেখল কিছু ফুল ছড়িয়ে আছে মাঁটিতে।সে ফুল গুলো তুলে নিয়ে একটা পাত্রে রাখল।এর পরদিন থেকে সে ঘরে মিলান ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করে না।এভাবে অনেক দিন হয়ে গেল।একদিন সে নাফের ডায়রী খুলতেই চোখে পড়ে সেই স্বপ্নের কথা শিরোনামে কিছু লেখা।আর সবশেষে লিখা আছে যদি ফিঁরে না আসি তবে আমাকে খুঁজার চেষ্টা কর না।কিছুদিন থেকে মিলানও স্বপ্নের হল রুমটাতে যায় না।নতুন একটা প্রার্থনা হল করা হয়েছে।আর আগের হলটার নাম দেয়া হয়েছে “NAF’S DREAM HALL”।দরজায় বড় অক্ষরে “LOVE STORY” শিরোনামে লিখা আছে স্বপ্নের সেই ডায়রীর পাতা।অনেক দিন হয়ে গেল।এখন সেই হল ঘরের দেওয়ালের রঙ খসে পড়ছে।ভিতরের অবস্থা কেমন কেউই জানেন না।সবাই মনে করে ভিতরে রয়েছে সুন্দর দুটি প্রানের বসবাস।
বন্ধু লিঙ্কঃ প্রিয়বন্ধু ডট কম
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×