somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শো (Show)

০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

০১/০১/২০১২
দশজনের জন্য দশটি আলাদা বেড রুম। প্রত্যেকটির সাথে আবার এটাচড্ বাথ, আমারটা ছাড়া। বাড়িটা আক্ষরিক অর্থেই বেশ বড়। সকাল দশটায় সবাই প্রবেশ করেছিলাম এখানে, এক সাথে। তারপর থেকে কিভাবে যে দিনটা কেটে গেল টেরই পেলাম না। সবার সাথে পরিচিত হলাম। ইনডোর খেলাধূলার বেশ কয়েকটা সরঞ্জাম আছে এখানে। সবাই মিলে ক্যারেম বোর্ড খেললাম অনেকক্ষণ। অনেকদিন পর খেলতে বেশ মজাই লাগল। সীমা (পুরো নাম, সীমা আফরিন,শিক্ষক, বয়স ৩০) মেয়েটা অবশ্য আমাদের সাথে ছিল না। একটা লাইব্রেরী রুম আছে এখানে। প্রচুর বই। সেখানে বসে বসে সে বই পড়ছিল। বই পড়তে আমারও ভাল্লাগে বেশ। বুক শেলফটা দেখে তাই অনেক খুশি হয়েছি। বই পড়েই কাটাতে পারব ছয় মাস। কোন ব্যাপার না। ডায়রী লেখাটাও আমার একটা অভ্যাস। বই পড়ব আর ডায়েরী লিখব। তারপরই এক কোটি টাকা! বিশ্বাস করতে এখনও বেশ কষ্ট হচ্ছে।
০৩/০১/২০১২
এখানে আজ আমাদের তৃতীয় দিন। গত দুইদিন এতো মজা করে হৈহুল্লোড় করে কাটিয়েছি যে লিখতে বসার সময় পাইনি। সত্যি খুব মজা হচ্ছে। সবাই খুব ফ্র্যান্ডলি আর হ্যাল্পফুল। খাবার নিয়ে আপাতত কোন সমস্যাই হচ্ছে না। ভাগ্যক্রমে আমরা চমৎকার দুই রাঁধুনী পেয়েছি। সীমা আর মিতু (মিতু ব্যানার্জী, ছাত্রী, বয়স ২০)। সবগুলা ফ্রিজে (খাবারে ঠাসা অনেকগুলা ফ্রিজ আছে এখানে) রাখা খাবার-দাবার দেখে আগামী একমাসের খাবারের মেনু তৈরী করে ফেলেছে দুজন। তাদের মতে, যে পরিমাণ খাবার আছে তাতে একটু পকিল্পনামাফিক চললেই ছমাস চলে যাবে নির্দ্বিধায়। শেষের দিকে হয়তো সব্জি পাব না, খালি মাছ আর মাংস খেতে হবে। তাতে সমস্যা থাকার কথা না। এক কোটি টাকা বলে কথা!
২৫/০১/২০১২
এখানে আমরা সবাই (অবশ্যই হিন্দুরা ছাড়া) একসাথে নামায পড়ি। যদিও এখানে প্রবেশের পূর্বে আমাদের ধর্ম, সমাজ ও আইনের দায় থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে দেয়া হয়েছে, তবু কেউ আমরা এতোদিনকার অভ্যাস ছাড়তে পারছি না। আজ আমি নিজেই ইমামতি করলাম। সেই ছোটবেলা মসজিদে আমপারা পড়ার সময় হুজুর আমাকে নামাযের ইমামতিটাও শিখিয়ে দিয়েছিলেন। সুযোগ পেয়ে সেটা আজ চর্চা করলাম। বেশ ভাল লাগল।
০৫/০২/২০১২
আজ একটা ঘটনা ঘটেছে। সীমা তার আংটি খুঁজে পাচ্ছে না। কেউ চুরি করল কিনা কি জানি। সন্দেহের কথা জানাতে সীমা হেসে উড়িয়ে দিল। বলল, এখানে সবাই ভাল ফ্যামিলি থেকে এসেছে। চুরি করার মতো মন-মানসিকতা কারুর থাকার কথা না। হয়তো আমি নিজেই হারিয়ে ফেলেছি। সবার প্রতি তার এ বিশ্বাস দেখে বেশ ভাল লাগল।
১২/০২/২০১২
এখন রাত সাড়ে দশটা। আজ আমরা একটু বিশেষভাবে রাতটা কাটাবো বলে ঠিক করেছি। শুরুতে ভেবেছিলাম মেয়ে দুটি রাজী হবে না। কিন্তু তারা এযুগের মেয়ে। যথেষ্ট স্মার্ট। আমরা ঠিক করেছি আজ রাত সবাই এক রুমে এক সাথে এক বিছানায় থাকব। যেহেতু ধর্মের বিধিনিষেধ থেকে আমাদের এই কদিনের জন্য মুক্ত করে দেয়া হয়েছে, তাই পাপ-পূণ্যের হিসেব আমাদের করতে হচ্ছে না। ঊহ! আমার খুব রোমাঞ্চ রোমাঞ্চ লাগছে। যাই। এগারোটা বেজে যাচ্ছে।
১৩/০২/২০১২
গতকাল রাত যতোটা আনন্দ করেছিলাম, আজ রাতে ঠিক ততোটাই কষ্ট। সঞ্জয় (সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, প্রাইমারী স্কুল শিক্ষক, বয়স ২৮) খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড জ্বর। ঘুমাচ্ছে না সে। আমরা সবাই তার পাশে জেগে আছি। ভয়ংকর মজার মানুষ সঞ্জয়। সারাক্ষণ কৌতুক করে মাতিয়ে রাখে আমাদের । আজ সেই সঞ্জয় অসুস্থ । আমাদের সবার মন খারাপ। এসেছিলাম গ্যাস্ট্রিকের ওষুধটা খেতে। এখন যাই, দেখে আসিগে। আজ সারা রাত বোধ হয় জাগতে হবে, তার পাশে।
১০/০৩/২০১২
অসীম বাবুর (অসীম দাশ, রাজনীতিবীদ, বয়স ৪৫)প্রসত্মাব অনুযায়ী আজ আবার সবাই একসাথে হয়েছিলাম। মিতু আর সঞ্জয় ছিল না। একজন আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিল আর সঞ্জয় জানালো, তার নাকি মাথা ব্যথা। সবচাইতে আকর্ষণীয় অল্পবয়সী মেয়েটা না থাকায় আমাদের আনন্দটা আর জমছিল না। বিদায় নিয়ে বের হয়ে আসলাম। আসার সময় মিতুর রুমে উঁকি দিয়ে দেখি দরজাটা বাইরে থেকে বন্ধ। সঞ্জয়ের রুমের কাছে গেলাম। যা ভেবেছিলাম তাই। ভেতর থেকে হুটোপুটির শব্দ। দুজনের মধ্যে কিছু একটা হয়ে গেল নাকি?
২০/০৩/২০১২
যা অনুমান করেছিলাম, তাই ঘটছে বোধ হয়। সঞ্জয় আর মিতু সারাক্ষন একসাথে। ক্যারেম খেলতে তাদের ডাকলাম। তারা খেলবে না। তারা নাকি টিভি দেখবে। কার্ড খেলতে বসলাম তাও তারা এলো না। খেতে বসলাম সবাই একসাথে। তখন আবার সঞ্জয় তার নিজের রুমে। খাবে না। মিতুও খেল না। নিশ্চিত হলাম, প্রেম প্রেম খেলা শুরু হয়ে গেছে তাদের মধ্যে। চলুক। আমাদের কি। আমাদের স্বপ্ন তো কোটি টাকা!
০৪/০৪/২০১২
ড. দীপু (দীপু হোসেন, ডাক্তার, বয়স ৪৫) খুব চেষ্টা করছে ইরফান সাহেবকে (রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার। বয়স ৬২) বাঁচাতে। দুদিন ধরে তার প্রচন্ড জ্বর। সবাই দীপুকে নিয়ে বসলাম। ইরফান সাহেবের অবস্থা জানতে চাইলাম। তার অবস্থা কি খারাপের দিকে যাচ্ছে? সুস্থ হতে তার কয়দিন লাগবে? এইসব প্রশ্নের মাঝখানে হঠাৎ আজিজ সাহেব (আজিজুর রহমান, ব্যাংকার, বয়স ৩২) বলে উঠলেন, তার আর বাঁচার কি দরকার? প্রশ্ন শুনে অবাক চোখে সবাই তার দিকে তাকালাম। কী বলে আজিজ সাহেব! উনি বলে উঠলেন, দেখো আমরা এখানে প্রতিযোগিতায় এসেছি। প্রতিযোগিতা মানে প্রতিযোগিতা। সারভাইভেল অব দা ফিটেস্ট। ইরফান সাহেব বয়স্ক মানুষ। উনি এ প্রতিযোগিতার জন্য ফিট না। দুদিন পরপর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তিনি। এতে আমরা না পারছি মজা করতে, না পারছি বিশ্রাম নিতে। তাকে বাঁচতে দিলে আমাদের আরো প্রবলেম হবে। অন্যদিকে তিনি না বাঁচলে আমাদের একজন কনটেস্টেন্ট কমে গেল। আমি তার প্রস্তাবে রাজী না হলেও বাকিরা সবাই একবাক্যে রাজী হয়ে গেল। আমার আসলেই করার কিছু ছিল না। কাজটা আমি করিনি। তারা সবাই করেছে। কিভাবে করেছে সেটার বর্ণনা দিতেও হাত কাঁপছে আমার। থাক না হয় ব্যাপারটা। গুড বাই ইরফান সাহেব। এক কোটি টাকা বলে কথা!
১২/০৪/২০১২
প্রথম দিকে মিতুকে অতোটা ভাল লাগত না, এখন যতোটা লাগে। কিন্তু মিতু তো সঞ্জয়কে ভালবাসে। আজ আবার তারা ঘোষনা দিল এখান থেকে বের হয়ে নাকি তারা দুজন বিয়ে করবে। সবাই হাত তালি দিলেও আমি দিতে পারিনি। সঞ্জয় থেকে আমি তো কোন অংশেই অযোগ্য না। মিতুকে কাছে পেতে চাই। কিন্তু আমার মনের কথাগুলো যে তাকে জানাবো তারও উপায় নাই। সঞ্জয় বোধহয় তাকে নিষেধ করে দিয়েছে ছেলেদের সাথে কথা বলতে। সেদিন তো দেখলামই, আজিজ সাহেবের সাথে কিছুক্ষণ হাসিমুখে মিতু গল্প করেছিল, তাতেই দুজনের কথা বলা বন্ধ। কথা বলা বন্ধ দেখে আমি সুযোগটা নিতে চাইলাম। পারলাম না। সে কথা বলল না। সঞ্জয়ের ভয়েই বলল না, বুঝতে পারলাম। আমি সঞ্জয়টাকে আসলেই আর সহ্য করতে পারছি না। একটা কিছু করতে হবে শিগগীর।
১৮/০৪/২০১২
রাত একটা। আমার কাজ শেষ। একটু আগে সঞ্জয়ের রুমে ঢুকে তাকে শেষ করে এসেছি। ঘুমন্ত সঞ্জয়ের নাকে বালিশ চাপা দিয়ে। অনেকক্ষণ সে চেষ্টা করেছে যুদ্ধ করার। কিন্তু তার উপরে উঠে বসে কাজটা করায় সে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। খুব ভাল লাগছে আজ। কাল থেকে মিতু আমার। গোপনে কাউকে না জানিয়ে কাজটা করায় কেউ বুঝবে না কাজটা আমিই করেছি। সকালে সবাই মিলে ইরফান সাহেবের পাশে স্টোর রুমে তাকে ঢুকিয়ে দিতে হবে। ড. দীপু থাকায় বেশ লাভ হয়েছে আমাদের। মৃতদেহের গন্ধ না ছড়ানোর ব্যবস্থাটা সেই করবে।
২২/০৪/২০১২
মিতুকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছিলাম না। সারাক্ষণ মনমরা হয়ে থাকত। সঞ্জয়ের মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠতে এতো দেরী দেখে আমার আর তর সইছিল না। কাল রাতে তাকে আমার রুমে ডেকে এনে দরজা বন্ধ করে দিলাম। ভেবেছিলাম জোর করে একবার ছুঁয়ে দিলেই কাজ হবে। কিন্তু সে যে এমন করবে ভাবিনি। টেবিলে রাখা আপেল কাটার ছুরিটা হাতে নিয়ে জাপটে ধরল আমাকে। আমার আসলেই অন্য কিছু করার ছিল না তখন। আত্মরক্ষার্থে আমার ভাললাগা মানুষটাকে খুন করতে হল। চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে এসেছিল আগেই। দরজার বাইরে দাড়িয়ে শুনছিল আমাদের ধস্তাধস্তির শব্দ। দরজা খুলে সবকিছু খুলে বললাম তাদের। ক্ষমা চাইলাম সবার কাছে। উত্তরে সবার বাহবা পাব ভাবিনি। একজন কমে গেল বলে সবাই খুশি হয়ে গেল। সবাই আসলে এখন এক কোটি টাকার স্বপ্নে বিভোর।
২৫/০৪/২০১২
আজ তুমূল লড়াই হয়ে গেল আমাদের মধ্যে। ক্যারেম খেলছিলাম আমরা চারজন। এক পর্যায়ে সীমার একটা শট করা গুটি ক্যারেমের ফুটো দিয়ে আঙ্গুল ঢুকিয়ে শাফায়েত সাহেব দুষ্টামী করে আটকে দিল। সীমার গুটি আটকেছে বলে কথা। পাশে দাঁড়ানো রাকিউল খেপে গেল। সবাই খেয়াল করছি, এ লোকটা বেশ কদিন হয় সীমাকে পটাতে ব্যাসত্ম। সুযোগ পেয়ে রাকিউল কয়েক কথা শুনিয়ে দিল শাফায়েতকে। শাফায়েতও ছাড়ার পাত্র নন। আমরা ছেলেরা সবাই যোগ দিলাম শাফায়েতের পক্ষে। ব্যাটা যদি সঞ্জয়ের মতো সীমাকে দখল করে নেয় তবে যে আমাদের এখানকার বাকী জীবনটা নিরামিষ হয়ে যাবে। সীমা আটকাতে চাইলো আমাদের। কিন্তু আমরা রাকিউল সাহেবকে শেষ না করা পর্যন্ত থামলাম না। একেবারে শেষ!
২৮/০৪/২০১২
একটা খারাপ খবর। আমাদের অনুমান সম্পূর্ণ ভুল হয়েছে। খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন মাত্র ছয় জন আছি। তবু বোধ হয় এ খাবারে আর এক মাসও চলবে না। সবাই টেনশনে আছি। সবাই কি তবে মরে পঁচে ভুত হয়ে যাব?
০৫/০৬/২০১২
তুমূল উত্তেজনা আমাদের এখানে। আজকের রান্না করার দায়িত্ব ছিল দীপুর। অথচ সকালে উঠেই বলে কিনা সে রান্না করতে পারবে না। এটা নিয়ে বচসা করতে করতে আজ আমাদের মধ্যে দু’পক্ষ। আমি, আজিজ আর সীমা একদিকে। অন্যদিকে বাকি তিনজন। উত্তেজনা একসময় চরমে পৌছে গেল। সেই চরম উত্তেজনা এখনো বিরাজ করছে। আমি, সীমা আর আজিজ আমার রুমে ঢুকে বসে আছি। আজিজকে আমরা আমাদের নেতা বানিয়েছি। সে যা বলবে তাই হবে। অন্য দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে দীপু। খোদার কসম, এই দীপুটাকে হাতের কাছে পেলে জানে মেরে ফেলব। তার জন্যই আজ এমন অবস্থা। এ রুমে এটাচড্ বাথরুম নেই। অথচ ভয়ে বের হতে পারছি না। আমাদের হাতে তেমন অস্ত্রও নেই। মশারি টানাবার স্ট্যান্ডই একমাত্র ভরসা।
২০/০৬/২০১২
যুদ্ধে তিনজন মারা গেল। সীমা, আজিজ আর ওদের দলের রাকিউল। ক্ষমা চেয়ে কোনমতে রক্ষা পেয়েছি আমি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে আর কোন উপায় নাই। আমাদের হাতে আছে আরো দশ দিন। কিন্তু খাবার আছে কাল সকাল বেলা পর্যন্ত। কি যে হবে!
২৩/০৬/২০১২
অবশেষে খাওয়ার একটা ব্যবস্থা করা গেল। বুদ্ধিটা দীপুর মস্তিষ্ক প্রসূত। দুপুরে রান্না সামগ্রী অনেক খুঁজেও যখন পেলাম না, তখন হঠাৎ দীপু আমাকে বলল মানুষের মাংস নাকি খাওয়া যায়। ঝলসিয়ে খেলে নাকি কোন সমস্যা হয় না। আসলেই সমস্যা হয়নি কোন। বেশ মজাও লেগেছে। এখন আমরা আছি দুজন। দীপু আর আমি। আর মাত্র পাঁচ দিন। দুজন মিলে ভাগ করে নিলেও তো ৫০ লাখ টাকা। বিকেলে টিভি ক্যামেরার সামনে বসেছিলাম। দর্শকদের শুনিয়ে শুনিয়ে প্রতিদিন যেমন করে মিথ্যে বলি তেমন করেই বললাম. দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে সবাই খুব ক্লান্ত। ঘুমিয়ে আছে। আসলেই তো ভুল বলিনি। সবাই চিরনিদ্রায় শায়িত।
২৪/০৬/২০১২
নির্ঝঞ্ঝাট একটি দিন কাটালাম আজ। দুজন যার যার মতো করে কাটিয়েছি। শুধু মাংস ঝলসানোর সময় একসাথে ছিলাম। সারাদিন আমি টিভি দেখেছি। দীপু কি করেছে জানিনা। সে তার রুমেই ছিল। আমিও খোঁজ নিতে যাইনি। আমাদের তো আর কোন ঝামেলা নেই। দুজন মিলে চুক্তি করে ফেলেছি। একসাথে বের হয়ে যাব। পঞ্চাশ লাখ টাকা দুজনের কাছেই অনেক টাকা।
২৬/০৬/২০১৩
আজো নিরিবিলি কেটেছে দুজনের। সে তার বিছানায় শুয়েছিল। আমিও। সারদিন শুয়ে শুয়ে ভাবলাম এক কোটি টাকার এতো কাছে এসে হারাবো। নিজের উপর খুব রাগ উঠল কেন দীপুর সাথে চুক্তিতে চলে গেলাম। নাহলে একটা ট্রাই করা যেত। এক কোটি টাকা! ভাবা যায়?
৩০/০৬/২০১২
আজ শেষ দিন। সকালে উঠেই তাই লিখতে বসে গেলাম। এখানে আজ আর ডায়েরী লিখা হবে না আমার। জানিনা আজ কী হবে। আজ একটা ভয়াবহ কাজ করার প্লান করেছি। দীপু এখন নিশ্চয়ই তার রুমে শুয়ে আছে। এখনই সময়। প্রতিযোগিতায় আসলেই নীতি বলে কোন কথা থাকতে নেই। যে ফিট, সেই সারভাইভ করবে। আমি এখন যাব। দীপুর রুমে গিয়ে ঢুকব। একটা রড খুঁজে পেয়েছি রান্নাঘরের স্টোরে। এটা দিয়েই যা করার করতে হবে। আহ! এক কোটি টাকা! সব টাকা আমার হবে। সব টাকা। এক কোটি টাকা! হা হা হা...
***************************************************
পাঠক, উপরে আপনারা যা পড়েছেন তা আমাদের টিভি চ্যানেলের একটি রিয়েলিটি শোতে অংশ নেওয়া এক প্রতিযোগির ডায়েরীর অংশ বিশেষ। আমরা দশজন প্রতিযোগিকে একটি বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে বলেছিলাম সেখানে ছমাস সময় কাটিয়ে যে বা যারা সবার আগে বেরুবে তাকে বা তাদেরকে এক কোটি টাকা প্রাইজমানি দেয়া হবে। দু:খজনক হলেও সত্যি নির্দিষ্ট দিনে আমরা কাউকে বের হতে না দেখে ভেতরে গিয়ে দেখি ভয়াবহ রক্তারক্তি দুজনের। দীপু এবং সায়েম- এই দুজনকে হাসপাতালে পাঠিয়েও পারলাম না বাঁচাতে। বাকিদের পঁচে গলে যাওয়া ডেড বডি উদ্ধার করি স্টোর রুম থেকে।
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

টুইস্টেড মাইন্ড অফ আ সিরিয়াল কিলারঃ কবি কালিদাস স্পেশাল

লিখেছেন এইচ তালুকদার, ২৭ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



সিরিয়াল কিলারদের নিয়ে আমার আগ্রহ শুরু হয় এই ব্লগেরই একজন অসাধারন ব্লগার ''ডক্টর এক্স'' এর লেখা পড়তে যেয়ে। বাংলা ভাষায় সাইকোলজির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সেলফ হেল্প ধরনের অসাধারন কিছু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিলিস্তিনে কী শান্তি সম্ভব!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৭ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:২১

এক.
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে আলজাজিরা দেখি৷ গাজার যুদ্ধ দেখি৷ রক্ত দেখি৷ লাল লাল৷ ছোপ ছোপ৷ সদ্য জন্মানো শিশুর৷ নারীর৷ কিশোর কিশোরীর৷ বৃদ্ধের৷ সারি সারি লাশ৷ সাদা কাফনে মোড়ানো৷ ভবনে চাপা পড়া৷... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রাকৃতিক দূর্যোগে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫

আমার জীবনে আমি সরাসরি প্রাকৃতিক দূর্যোগের ভেতরে পড়েছি বলে আমার মনে পড়ে না । ২০১৯ সালের ঘটনা। ঘূর্ণিঝড়ের নাম সেবার ছিল সম্ভবত বুলবুল ! সেটা যখন আসছিল তখন আমি ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্কাই ডাইভিংয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টায় সফল বাংলাদেশের আশিক চৌধুরী

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৬




দেশে এখন চলছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর তান্ডব। তার মধ্যেই সুখবর এলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে-

বিশ্ব রেকর্ড গড়তে ৪১ হাজার ফুট উঁচুতে উড়ে যাওয়া বিমান থেকে শূন্যে লাফ দিলেন বাংলাদেশের আশিক চৌধুরী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×