somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্লামা দেলোয়ার হসেইন সাঈদী ৭১ এ দেইল্লা রাজাকারের ফাঁসির রায় ও বাঙ্গালির ৪২ বছরেরে কলঙ্ক মোচন

০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদির ফাঁসি হয়নি, ফাঁসি হয়েছে ৭১ এর ৩০ বছর বয়সী ১ সন্তানের জনক ঘরজামায় তাবীয বিক্রেতা আরবি ও উর্দু ভাষায় বাকপটু দেইল্লা রাজাকারের।
রাজাকার সব সময় সব কালের সব স্থানে রাজাকার।
রাজাকারের কোন ধর্ম নাই, রাজাকারের কোন দল নাই।
রাজাকারের একটি পরিচয় যে সে মানবতা বিরোধী অপরাধে আসক্ত। অপরাধ সংগঠন অথবা তার নিসংসতা, সহিংসতা ও লাম্পট্য চরিতার্থ করার মুখ্যম হাতিয়ার সাধারণ মানুষের সংবেদনশীল ধর্মকে পূঁজি ও ব্যাবহার করে থাকে যাতে তার অপকর্ম সাধারণ ধর্মপ্রাণ ও ধর্ম ভিরু মানুষের চোখে না পড়ে।
তাই তার ফাঁসিতে ধর্মপ্রাণ মানুষ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মাঝে সন্তুষ্টির আভা বিরাজ করছে কারণ বাংলার মাটিতে রাজাকারের চেয়ে আর কেউ বেশি অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম, তাই রাজাকারের ফাঁসি না হলে ন্যায় বিচার নামটা পরিহাসের বিষয়ে পরিণত হবে। সমাজের অস্থিরতায় আইন অকার্যকর হয়ে যাবে।
এ রায়, আইনের সুশাসনের বহিরপ্রকাশ, জনগণের ৪২ বছরের ছাপা ব্যথার রায়। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বাংলার মানুষ আজ ৪২ বছরের কলঙ্ক মোচনের এক ধাপ এগিয়েছে, আমরা চায় মুক্তিযুদ্ধের সত্যকার চেতনায় উজ্জীবিত হতে, তার জন্যে দরকার রাজাকারের উপযুক্ত ও ন্যায় বিচার “ফাঁসি”। বাকিদেরও উপযুক্ত ও ন্যায় বিচার ফাঁসী দিয়ে ৭১ এর যুদ্ধ শেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম নতুন বাংলাদেশ গড়বে সাথে থাকবে ১৬ কোটি বাঙ্গালি।
===
অনেকে ৭১ এর দেইল্লা রাজাকার বর্তমানে মুখোশধারী আল্লামা মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা জানতে চান, তাদের প্রশ্নের ধরণ কিছুটা এমন যে, “আপনে দেখেছেন বা আপনার কাছে কি প্রমাণ আছে যে দেইল্লা রাজাকার ছিল?”
প্রমাণ?! কত প্রমাণ চান। রাজাকার হিসেবে তো বটেই, দেইল্লা রাজাকার ছিল শান্তি বাহিনীর সদস্য এবং আলবদরের কমান্ডার যার নির্দেশে সব নৃশংসতা, লুট, হত্যা, ধর্মান্তরিত করণ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশে হত।
আজ যারা মারা গেছে, তারা আত্নঘাতি আক্রমণে গেছে। পুলিশের কাজ হচ্ছে, সাধারনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু জামায়াত শিবিরেরা ছোট্ট শিশু থেকে বৃদ্ধ কাউকে ছাড়ে না। তাদের কাছে মানুষ হত্যা মানেই জ্বিহাদ করে শয়তান নিধন করা। আর তাদের সাথে সহিংসতায় ২ পুলিশ সহ সাধারণ মানুষ ও মারা গেছে। আজ যারা মারা গেছে, তারা কার জন্যে মারা গেছে? ধর্ম ব্যবসায়ীর জন্যে, ইসলামের রক্ষকের জন্যে নয়। যদি তাই হত তাহলে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ দেইল্লার জন্যে মাঠে নেমে আসত। আজ যারা নামসে, তারা ঐ ধর্ম ব্যবসায়ীর নুনের গুন গাচ্ছে মাত্র।
পুলিশ নিজে এবং সাধরনকে বাঁচাতে বা তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে একশনে যাচ্ছে। তাদের প্রতিহত না করলে কয়েক শ পুলিশ সহ সাধারণ মানুষ মারা পড়ত আজ। জামায়াত শিবির নিজের জীবনের নিয়ে যেমন সহিংসতা চালায়, সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে চালায়। ফলে নিরাপত্তা বাহিনী সহ সাধারণ মানুষও প্রাণ হারচ্ছে। তারা উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম ব্যবসায়ীর নুনের গুন গাইতে অন্যকে হত্যা করতে গিয়ে নিজেও মরে। তাহলে দোষটা কার??
আর আমরা সব রাজাকারের বিচার চায় কিন্তু এখন যাদের বিচার শুরু হয়েছে, আমরা তাদের উপযুক্ত বিচার ও শাস্থি ফাঁসি চায়। ১০ জন চোরের মধ্যে ৮ জনকে ধরতে না পারলে আপনে কি বাকি যে দুইজনকে ধরতে পেরেছেন, তাদের বিচার করবেন না??? আর সংগঠন হিসেবে জামায়েতে ইসলামী (জামায়েতে এসলামি) ও ছাত্র শিবির ( ছাত্র সংঘ) সংগঠন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে মানবতা বিরোধী কাজ করেছিল। তাই ৭২ এ এদের সংবিদানের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়। আর আপনেরা সেই নিষিদ্ধ সংগঠনের সাফাই গাচ্ছেন, যারা আমাদের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব জাতীয় পাতকা জ্বালিয়ে দেয়, শহীদ মিনার ভেঙ্গে দেয়, গণজাগরণ মঞ্চ সাধারণ জনগণের, তাদের মঞ্চ ভেঙ্গে গুরিয়ে কোন দেশ প্রতিষ্ঠা করতে চান আপনারা? বাংলার মানুষ বাংলাকে কখন পাকিস্তান বা আফগানিস্তান হতে দিবে না যেমন দেয়নি ৫২ তে, ৬২ তে, ৬৬ তে, ৬৯ এ, ৭১ এ, ৯০ এ এবং বর্তমানে ১৩ তে।

===
এরা ধর্ম রক্ষার নামে ধর্মকে ব্যবহার করে। এরা কাফের না, মুনাফেক কারণ এরা ধর্মের মুখোশ পরে নিজের স্বার্থ হাসিল করে। তাই, ধর্মের দোহায় দিয়ে কেউ এদের আর রক্ষা করবে না, মানুষ এখন তাদের হাড়েহাড়ে চিন্তেপেরেছে। মানুষ জানে, ইসলাম আর জামায়াত এক না। ইসলাম শান্তির ধর্ম, আর জামায়াত নৃশংসতা, স্বার্থ আর উগ্র সাম্প্রদায়িকতার আরেক নাম।
৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ব্রম হারিয়ে স্বাধীনতার জন্যে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ লাগতো না, যদি না মুখোশ ধারী ধর্ম ব্যবসায়ী ও ধর্ম ব্যবহারকারী মুনাকেফ, যারা ধর্মে বিশ্বাসী না হয়েও স্রেফ ধর্মকে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যবহার না করত, তাহলে আমরা আহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে ৯ দিনেই স্বাধীন হতে পারতাম।

ঠিক, গণজাগরণের গণআন্দোলনের জোয়ারে ৯ দিনের মাথায় পাকিস্তানীদের হটিয়ে বাংলার মাটি স্বাধীন করতে পারতাম। বড় জড় রাজীবের মত কয়েক জনকে শহীদ হতে হত। কিন্তু ৩০ লক্ষ আর ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ব্রম ছাড়াও দেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামোর বেহাল দশাও তাদের নাফরমানীর ফসল।

সবই হয়েছে এই রাজাকারদের ইশারায়, তাদের ইঙ্গিতে বাংলার মাটিতে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে বাংলার মাটি আর সিক্ত আর উর্বর হয়েছে। মা-বোনের সম্ব্রম হারাতে হয়েছে এবং সম্ব্রম হারিয়ে বা হারানোর ভয়ে ভারতে পালিয়ে শরণার্থী হতে হত না।

ধর্মের দোহায় দিয়ে এরা ৫২ তে বলেছে বাংলা ভাষা নাকি হিন্দুয়ানী ভাষা, ৭১ এ বলেছে যুদ্ধটা নাকি ইসলামের বিরুদ্ধে, এখন ১৩ তে বলতেসে নাস্তিকের গণজাগরণের গণআন্দোলনের রায়।
বাংলার মানুষ ধর্মপ্রাণ বা ধর্ম ভিরু হলেও ধর্ম ব্যবসায়ী বা ফতোয়াবাজদের চিন্তে ভুল করে না।
বর্তমানে যে রাজনৈতিক বিভাজন, তাও এদের কুকীর্তির ফলস্বরূপ!!

===

আল্লাহুয়াকবার বলে গলা কেটে হত্যা করাও আপানাদের কাছে পুণ্যের কাজ,তা বাংলার মানুষ ৭১ এ যেমন বুঝেছে, তেমনি ১৩ এও বুঝেছে। ধর্মকে ব্যাবহারের দিন শেষ। সবাই জানে ধর্মের কথা বলে “গণিমতের মাল” বলে ধর্ষণ কে বৈধতা দিয়েই ক্ষান্ত হন্নাই, পুণ্যের ও কাজ বলে ইসলামকেও বিকৃতি করেছেন, অন্যের সম্পদ লুট করাকে বৈধতা দিয়েছেন “মালাউনের মাল” যেটা বক্ষন করা হালাল। ধর্মকে স্রেফ নিজের স্বার্থে ব্যাবহার করেই ক্ষান্ত হন্নি, নিজেদের হীন স্বার্থ, নৃশংসতা ও লাম্পট্যকে চরিতার্থ করার জন্যে বিকৃত করতেও কুণ্ঠবোধ করেনি।

আবার এরাই নাকি ইসলামের প্রচারক!!! এরাই হচ্ছে ইসলামে ধ্বংসের জন্যে পাঠানো এজিদের বংশ।

উপযুক্ত ও ন্যায় বিচারের জন্যে ১৬ কোটি মানুষ ৪২ বছর অপেক্ষা করেছে। আর তাদের বিচার চাওয়া মানে যদি হয় আপনাদের কাছে “ নাস্তিক আর মুরতাদ” তাইলে আর কিছু বলার নাই, আল্লাহ পাক আপনাদেরকে হেদায়েত দান করুক।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×