somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রী শ্রী মনোমোহন ,মলয়া এবং উস্তাদ আপ্তাব উদ্দিন প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনাঃ

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম অংশঃ Click This Link

মনোমোহনের লেখায় উঠে এসেছে মানব মনের মরিচার কথা।ভব বাজারের প্রেমের গান উঠে আসে তার বুলিতে-

প্রেমবাজারে পরশ মণি
বিনামূল্যে বিকিয়ে যায়।
তোদের মরিচা ধরা লোহা তামা,
যার য আছে নিয়ে আয়।
শিয়ালৈর শিং সাপের পাঁচ পা,
আকাশ কুসুম আয় দেখে যা,
শুকনা ডালা হয়ে তাজা ,
ফুল ফুটিয়ে গন্ধ বিলায়।
সিংহ দরজায় নাই দারোয়ান,
নাইকো কারো কৈতব গুমান,
হাড়ি মুচি সবাই সমান,
প্রেমানন্দে নাচে গায়।
মনোমোহন কর্মদোষে
ইহা উহা ভাবছে বসে
দিন কাটালাম রঙ্গ রসে,
যমদূতে যে চোক পাকায়।


মনোমোহনের গানে উঠে আসে সাম্য,উঠে আসে সর্ব ধম্র্মের কথা ,উঠে আসে সুফিবাদের কথা।মানুষ আর ঈশ্বরের মাঝে প্রেমের সম্পর্কের কথা।কিন্ত্ত সে প্রেম যে বড় কঠিন।তাইতো মনোমোহন বলেন-

প্রেম কি কখন গাছে ধরে।
আম কাঁঠাল নয় পেড়ে খাবি
ঝাকা দিলে নাহি পড়ে।
প্রেম কিলো সামান্য বটে,প্রেম কি সবার ভাগ্যে ঘটে,
প্রেমের কথা ঘাটে মাঠে রটে কেবল মূর্খ নরে।
..........................................
..............................................
সুফিবাদে মানুষ ঈশ্বরের মাঝে বিলীন হওয়ার কথা বলা হয়,বলা হয় স্রষ্টার রঙে রঙিন হওয়ার কথা মনোমোহন বলেন-

আমাতে কি আর আমি আছি?
যার প্রাণ তারে দিয়ে নিরব হয়েছি।
শুধু তাহারি লাগি সারাটি নিশ জাগি
ডাকি ডাকি থাকি থাকি কত কেন্দেছি।
ধরিতে না পেয়ে তারে,চলিয়া এসেছি ফিরে,
অভিমানে রাগ করে ফেরে পড়েছি।
প্রাণের লাগি প্রাণ,উদিসী গায় হে গান,
নিঝুমে পাতিয়ে কান থাকতে তারে দেখেছি।
তাহারি আকুলতা,সহেনা এত ব্যথা,
গাহিয়া প্রাণের গাথা প্রাণে প্রাণে সঁপিয়াছি।

মানব সেবাই পরম ধর্ম।স্রষ্টাকে রাজি করতে হলে তার সৃষ্টিকে ভালোবাসতে হবে।যে হৃদয়ে সৃষ্টির প্রতি প্রেম নেই সে হৃদয়ে ধর্ম নেই,সে হৃদয়ে স্রষ্টা নেই।সে হৃদয় কপটতায় ভরপুর।মনোমোহন
সেবাকেই পরম ধর্ম মানেন।গ্রহন করেন সেবা ব্রত।

শিষ্য হোরে বিশ্ব মাঝে
সেবা ব্রতে প্রাণ সঁপিলে
স্বর্গেও তার ডঙ্কা বাজে।
খুলবি যদি যোগের মম্র্ম
শিকষা কর সেবা ধম্র্ম,
তা বিনে আর নাহি কম্র্ম
মহাজন বিধি দিছে।
ভজনের বল করতে বৃদ্ধি,
সেবাই পরম সিদ্ধি,
সেবাতে সে পরম নিধি,
বিকশিত রহিযাছে।।

সাকার, নিরাকার, দ্বৈতবাদ,অদ্বৈতবাদ ইত্যকার বিবাদে রিপ্ত না হয়ে আত্বতত্তে মনোযোগ দিলেই সত্যে পৌছানো যায়।সর্ব ধম্র্মের জয়গান বেয়ে উঠে প্রাণ।মনোমোহন গেয়েছেন সর্ব ধম্র্মের গান-

ছাড়িয়ে ধম্র্ম বিবাদ
সাধরে কল্যাণ।
সকলে মিলিয়া কর ,
দয়াময় নাম গান।শিব কালী কৃষ্ণ নাম,
আল্লা, রাধা, যত নাম;
দয়াই আরাধ্য কাম
ভব রোগে হতে ত্রাণ।
যে নামে যাহার তৃপ্তি
দয়াময় নামে প্রীতি,
সাধরে সাধ সম্প্রতি,
মিলিবে কার্য্য আরাম।
রূপ নাম শতশত
একেরই বিভুতি যত;
জেনে লও সিদ্ধ ব্রত,
হইবে পূরণ কাম।

মনোমোহন লিখেছেন সর্ব ধর্ম সঙ্গীত,শ্যামা সঙগীত,কৃষ্ণ -বিষয়ক সঙ্গীত,শিব সঙ্গীত,শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গলীলঅ বিষয়ক গান,ইসলাশী সংগীত দেহতাত্বিক গান।এছাড়াও সুন্দর ও গভীর ভাবব্যঞ্জক প্রায় ১০০০ কবিতা পূর্ণ 'তপোবন',উপবন,নিম্র্মাল্য, তিনটি কাব্য গ্রন্থ।আত্ব তত্ব সাধনের জন্য লিখেছেন প্রেমও প্রীতি,পথিক,সত্যশতক,ময়না,যোগ প্রণালী,উপাসনা তত্ব এবং ঋণী।লিখেন সর্ব 'ধম্র্ম তত্বসার'নামে অতি জটিল তত্ব সম্র্পকীয় ২০০ টি বিষয়ের সহজ বোধগম্য প্রকান্ড পুস্তক।

মনোমোহনের সহধমিনী সাধ্বী সৌদামিনী দত্ত।এই মহাপুরুষ মাত্র ৩১ বছর ৭ মাস বয়সে স্ত্রী এবং এক বছরের শিশু পুত্রকে রেখে বাঙলা ১৩১৬ সালের ২০ শে আশ্বিন পরলোক গমন করেন।তাঁকে তার ইচ্ছানুসারে তাঁর সাধনা স্থল বেল তলায় সমাধিস্ত করা হয়।
পুত্র সুধীর চন্দ্র দত্ত,নাতি-বিল্বভূষণ দত্ত এবং নাত বউ-কমলা রাণী দত্ত।



মহর্ষি মনোমোহন দত্তের বংশানক্রম নিমন্ রূপঃ রাজ বল্লব দত্ত সাজওয়াল>রাম বল্লব দত্ত সাজওয়াল>কানু বল্লব দত্ত সাজওয়াল>
শুকদেব দত্ত>রঘুরাম দত্ত>মুলুক চাঁদ দত্ত>সুধারাম দত্ত>বৈদ্য নাথ দত্ত>পদ্মনাথ দত্ত>মনোমোহন দত্ত>সুধীর দত্ত>বিল্বভূষণ দত্ত।


তথ্যসূত্রঃমলয়া ১ম,২য়,৩য়, মনোমোহনের স্বহস্তে লিখিত জীবনী 'লীলারহস্য এবং এ প্রবাদ পুরুষকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন নিবন্ধ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:০৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×