somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নে শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধিই কী সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি নয়?

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরও প্রকাশিত হয়েছে ব্লগারডটকমে আমার ব্লগে http://sleepinclassroom.blogspot.com/2011/01/blog-post_17.html

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যে নাজুক অবস্থায় রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তৃতীয় বিশ্বের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যতগুলো সমস্যা থাকার কথা তার সবগুলোই এখানে আছে। তৃতীয় বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থায় গলদ যত বেশি তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের পকেট ভারী করার সুযোগও তত বেশি। এই প্রজেক্ট, সেই প্রজেক্ট-প্রজেক্টর কোন অভাব নেই। যত্রতত্র এনজিও'রও অভাবে নেই। বিদেশি ডোনারদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোই এদের কাজ। যখন রাষ্ট্র তার অবশ্য পালনীয় কর্তব্যে ব্যর্থ হয় তখন বিদেশি দাতা গোষ্ঠীর মাধ্যমে ধনী রাষ্ট্রগুলো কিছু ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে শিক্ষা উন্নয়ন নিয়ে বহু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। একটি প্রকল্প শেষ হয়েছে তার দ্বিতীয় ফেজ শুরু হয়েছে। দেশি বুদ্ধিজীবিরা বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা আর সাদা চামড়া ও চকচকে কালো চামড়ার বিদেশি বিশেষজ্ঞরা নিয়েছে মোটা অংকের ডলার। কিছু গ্রামীণ বিদ্যালয়ের কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে, পাঠ্যক্রমে বিদেশি পাঠ্যপুস্তকের জটিল অনুবাদ কপি-পেস্ট করা হয়েছে। এতে পাঠ্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অসামঞ্জস্যতা প্রকট হয়েছে। আর যেটা হয়েছে সেটা হল বছরে বছরে শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন। প্রচুর শিক্ষার্থী হয়েছে গিনিপিগ। শিক্ষাব্যবস্থার মৌলিক গুণগত পরিবর্তন খুব সামান্যই হয়েছে। এর পেছনের কারণ খতিয়ে দেখলে দেখা যায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি গ্রহণ, বিদেশ গমন, শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ না করা আমলা কর্তৃক শিক্ষাক্রম প্রস্তুতকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে গণহারে শিক্ষাবিদ উপাধি দিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করানো। শিক্ষাবিজ্ঞান এখন এত বড় একটি ক্ষেত্র যে এটি নিয়ে দীর্ঘ সময়ে কাজ না করলে এবং তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক পর্যায়ে যথাক্রমে পড়াশোনা ও কাজ না করলে কোন স্থায়ী, গ্রহণযোগ্য ও মানসম্মত শিক্ষা পদ্ধতি উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হল, প্রচলিত শিক্ষাক্রমেই অনেক উন্নতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করা যেত যদি মেধাবী ও উন্নত মানসিকতার তরুণরা গণহারে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিত। আইন যেমনই হোক না কেন যোগ্য ও সৎ বিচারপতি ঠিকই ন্যায়বিচার উপহার দিতে পারেন। ঠিক তেমনি শুধুমাত্র সমাজের উচ্চ মেধা স্তরের ছেলেমেয়েদের স্কুল পর্যায়ের শিক্ষকতা পেশায় সম্পৃক্ত করা গেলেই বর্তমান শিক্ষা সমস্যার সিংহভাগ সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হল, শিক্ষাখাতে ব্যয় হওয়া বিশাল অংকের টাকা কার্যকর উপায়ে ব্যয় না হয়ে বিদেশি উন্নয়ন ও দাতা সংস্থার কুটিল শর্ত অনুযায়ী অদক্ষ সরকারি লোকজন দ্বারা ব্যয় করা হয়। শিক্ষা উন্নয়নের বেশিরভাগ বাজেট চলে যায় উচ্চশিক্ষিত পিএইচডিধারী বিশেষজ্ঞগণের সম্মানীর পেছনে এবং প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ি ও তার তেল কিনতে। এই টাকা যদি সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে ব্যয় করা হত তাহলে শিক্ষার উন্নয়ন আজ পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হত। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ও সামাজিক মর্যাদা যদি উচ্চ হত তাহলে আমাদের উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ সমাজ বাণিজ্যিক ব্যাংক, মোবাইল কোম্পানি প্রভৃতি বহুজাতিক কোম্পানির দিকে না ঝুঁকে নিজেদের শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত করত। এতে উপকার হত আমাদের দেশের। আজ একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যতীত আর কোন পর্যায়ের শিক্ষক মানুষ শখ করে হতে চায় না সামাজিক মর্যাদা ও স্বল্প সম্মানীর কারণে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বোধহয় এখনই।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×