somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতে বোমা হামলা সমূহের রহস্য উদ্ঘাটন। মুসলমানদের ক্ষতিপূরণ হবে কি?? (সম্পূর্ণ)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতে কোনো বোমা হামলা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হলেই মুসলিম বয়াক্তিত্ব ও মুসলিম সংগঠনগুলোর নাম ভেসে আছে। ভারতীয় মিডিয়া ব্যাপকভাবে প্রচার করতে থাকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা, লস্কর-ই-তৈয়েবা ইত্যাদি দায়ী। একেবারে " সুস্পষ্ট " প্রমাণের ভিত্তিতে এসব দাবী করা হয়। বিশেষ করে সাম্প্রতিক কালে সমঝতা এক্সপ্রেস, মালেগাঁও, আজমির শরীফ, মক্কা মসজিদে হামলার পর এ দৃশ্য ব্যাপক ভাবে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় ব্যাপক ধরপাকড়, নির্যাতন ও অবশেষে " স্বীকারক্টিমূলক জবানব্নদীও " দেখা গেছে। মুসলিম তরুনরা নিরাপত্তা বাহিনীর শজ শিকারে পরিণত হয়। কিন্তু সম্প্রতি কট্টর হিন্দুত্ববাদের ধ্বজাধারী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) নেতা স্বামী অসীমানন্দের ব্ক্তব্যে " পেন্ডোরার বাক্স " খুলে গেছে। আর সেই সাথে জানা গেলো, মুসলিম তরুনরা নয়, কট্টর হিন্দুরাই এসব হামলা চালিয়েছে।


হিন্দত্ববাদী সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অন্যতম চরিত্র অসীমানন্দ ১৮ ডিসেম্বর তিস হাজারি আদালতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দীপক দাবাসের কাছে ফৌজদারি দন্ডবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি আরএসএস ও অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বর্ননা দিয়েছেন।
তিনি কয়েকজন আরএসএস নেতার নামও প্রকাশ করেছেন। তনি জানান সহিংসতার বত্যাপারে তার মুখ খোলার কারন হলো, একটি মুসলিম বালককে মালেগাঁও বিস্ফোরনের জন্য মিথ্যা ভাবে দায়ী করে গ্রেফতার করার ঘটনা।


ভারতে সেন্ট্রাল বুর অব ইনভেস্টিগেশন তাকে গত নভেম্বর হরিদ্বার থেকে গ্রেফতার করে । তনি স্পষ্টভাবেই গানান, তারাই আজমির শরিফ , মক্কা মসজিদ, মালেগাঁও ও সমঝতা এক্সপ্রেসে বোমা চালায়। তনি জানান " বোমার বিনিমটয়ে বোমা " নীতি অনুসরন করেই তিনি এ হামলা চালিয়েছেন। ৪২ পৃষ্ঠার জবানবন্দীতে তিনি জানান বোমা হামলার সাথে আরএসএস নেতা ইন্দ্রেস কুমার, সুনিল যোশী, প্রঞ্গা সিংশ অনেকে জড়িত ছিলেন।


তিনি বলেন, মালেগাঁওয়ের ৮০ ভাগ মানুষ মুসলিম হওয়ায় আমরা সেখানে ২০০৬ ও ২০০৮ এ বিস্ফোরণ ঘটানর পরিকল্পনা করি।
তিনি জানান , হিন্দুরা যেহেতু আজমির শরিফ যায়, তাই আমি ভেবেছিলাম সেখানে বিস্ফোরণ(২০০৭) ঘটানো হলে হিন্দুরা আর সেখানে যেতে ভয় পাবে।


মক্কা মসজিদে হামলার কারন, হায়দারবাদের নিজাম ভারতবর্ষ বিভক্তি কালে পাকিস্তানের সাথে যোগ দেবার সিধান্ত নিয়েছিলো। সমঝতা এক্সপ্রেসে হামলার কারন, ট্রেনটি প্রধানত পাকিস্টানিরা ব্যাবহার করত।


স্বামী অসীমানন্দের এই স্বীকারক্তি মুলক জবানবন্দির পর ভারতের মানবাধিকার কর্মী মনীষা শেঠী কিচু বিশ্লেষণ উপ্সথাপন করেছেন। তিনি বলেন, অথচ এসব হামলার জন্য গত কয়েক বছর ধরে এসব হামলার জন্য প্রমাণ থাকা স্বত্তেওঅসংখ্য মুসলিম তরুনদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং এমনকি টাদের উপর চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছে। অথচ অসংখ্য প্রতিবেদনে বলা হচ্ছিলো মহারাষ্ট্র ও অন্ধপ্রদেশের পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলোকে সন্দেহের তালিকার বাইরে রাখছিল। ভারতের নিরাপত্তা সংস্হাগুলোর ঢিলেমির কারনে সত্য প্রকাশিত হতে এতো ডেরি হলো। এমনকি ২০০৮ সালে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যেতে পারত।
সে সময় মহারাষ্ট্রের এটিএস প্রধানশেমন্ট কারকারে হারডারবাদ পুলিশকে জানিয়েছিলো, কর্নেল পুরহিত ২০০৬ সালে জন্মু ও কাশ্মীরে দ্বায়িত্ব পালনের সময় সেনাবাহিনীর গুদাম থেকে আরডিএক্স সরিয়ে হিন্দুত্ববাদী গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছিলো। সেই সূত্র ধরেকাজ চালালে অনেক রহস্যের সমাধান হয়ে যেত। অথচ সেই কাজ না করে হায়দারবাদ পুলিশ অন্তত ৭০ জন মুসলিম তরুনের উপর নির্যাতন চালিয়ে স্বীকারক্তিমুলোক জবানবন্দী নিয়েছিলো। কিন্তু তার পুরহিতকে তাদের হেফাজতে নেবার অনুরোধ পর্যন্ত করেনি। সমঝতা এক্সপ্রেসের তদন্তকারী কর্মকর্টা আরডিএক্স দেখেই নিশ্চত হয়েযান এটা পাকিস্তানের কাজ।


মনীষা শেঠী বলেন, সমঝতা এক্সপ্রেসে হামলার জন্য আলিগড়ভিত্তিক ইসলামি ছাত্রআন্দোলন সিমিকে(স্টুডেন্ট ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া) দায়ী করে হয়।

২০০৮ সালে সফদার নাগরি তার ভাই কামরুদ্দিন নাগরি ও আমিল পারভেজের উপর নারকো-আ্যাবালাইসিস পরীক্ষা চালিয়ে দাবি করা হয় সিমি কর্মীরা ২০০৬ সালে মুম্বাই ট্রেন ও সমঝতা এক্সপ্রেসে হামলায় সহায়তা করেছিলো।

ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন এক "এক্সক্লুসিভ"-প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, নারকো টেস্টে সিমির কর্মীরা শুধু মুম্বাই এর হামলার সাথে গড়িত নয়, ২০০৭এ সমঝতা ট্রেনে হামলার জন্যও সরাসরি জড়িত। এতে আরও বলা হয় নারকো পরিক্ষায় নাগী জানিয়েছে-" পাকিস্তান থেকে আসা কয়েক ব্যাক্তি ইন্দোরের কাটারিয়া মার্কেট থেকে ঐ হামলার জন্য সুইটকেস কিনেছিলো। এবং সিমির কর্মীরা সুইটকেসের কভার সিলাইয়ে শায়তা করেছিলো।

মালেগাঁও হামলায় নাগি নাকি স্বীকার করেছিলো, মুসলিম সদস্যরা এতে জড়িত এবং তিনি বিষয়টি জানতেন। হাুদারবাদ বিস্ফোরণের জন্য তিনি দায়ী করেন নাসিরকে।

এখন প্রশ্ন হলো যে কাজ হিন্দুত্ববাদী সঙ্ঘ করেছে তার দায়ভার নাগি কেনো নিলেন? আসলে নারকো টেস্টের নামে নাগরির মুখ থেকে এসব কথা বের করানো হয়েছে।

ইন্ডিয়া টুডে বা অন্যান্য পত্রিকায় যেসব এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন বের হয়, সেগুলো আসলে নিরাপত্তা সংস্হাগুলোর যোগান দেয়া তথ্য। নিরাপত্তা সংস্হাগুলো তাদের প্রিয় সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে থাকে।আর পত্রিকায় এসব সংবাদ প্রকাশের পর তারা ইচ্ছামত অভিযান চালাতে পারে।



শুধু মিডিয়া নয় সরকারে দ্বায়িত্বশীল অংশ থেকেও দ্বায়িত্বহীন মন্তব্য দেয়া হয়। ২০০৭এ ১১ অক্টোবরভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, আজমির শরীফে হামলার জন্য লস্কর-ই-তৈয়েবা কে দায়ি করেন। পরদিন প্রবীন স্বামী চিৎৎৎতকার করে জানালে এটি আসলে লোকায়ত ইসলামের বিরুদ্ধে কট্টরপন্হীদের যুদ্ধ।

কিন্তু এখন জানা গেলো এটি লোকায়ত ইসলামের বিরুদ্ধে কট্টরপন্হীদের যুদ্ধ নয়, বরং ভারতের ঐতিহ্যবাহী সমন্বয়বাদের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদীদের হামলা।


ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখন কি করবে? ভূল কি তারা স্বীকার করবে? এসব ভিত্তিহীন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যাদেরকে অন্যায় ভাবে গ্রেপ্টার করে নির্যাতন চালিয়ে পঙ্গু করে ফেলেছে, মানসিক ভাবে বিকালঙ্গ করে দেয়া হয়েছে, যাদের জীবনকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কি পারবে তার ক্ষতিপূরণ করতে? ভারত কি জানেনা অস্ট্রেলিয়ার ডা. হানিফের মামলার কথা। ভিত্তিহীন ভাবে টার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ ও আটকের জন্য অস্ট্রেলীয় সরকার তার কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করে এবং ক্ষতিপূরনও দিচ্ছে। ভারত কি সেই নীতি অনুসরন করবে?










একটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্ট












৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×