somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম ঐক্য ও সৌদী-আরব -প্রথম পর্ব

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিস্মিল্লাহির রহমানির রাহীম
ইসলামের ইতিহাসে মুসলমানরা বর্তমান সময়ের মত অবস্থা আর কখনো অতিবাহিত করে নাই। এক সময় পৃথিবীর প্রায় অর্ধেকাংশ রাজত্ব করার পর ও মুসলমানরা আজ হতদরিদ্র (যদিও কিছু সংখ্যক মুসলমানের হাতে প্রচুর অর্থসম্পদ)। মুসলমনরা এখন ধর্ম সম্বন্ধে উদাসীন। ইসলামিক জ্ঞানের প্রতি অবহেলা, বিজ্ঞ ও সঠিকপন্থী আলেমদের স্বল্পতা, সর্বপরি মুসলমানদের ঢালস্বরুপ যে রাষ্ট্রশক্তি অর্থাৎ খিলাফাত ব্যাবস্থা, তার বিলুপ্ত হওয়ার কারনে আভ্যন্তরিন বা বাহ্যিক ফিত্না-ফাসাদ দমন বা প্রতিবাদ করার কোন ব্যবস্থা আর বাকি নাই। আর এই সুযোগে যে যার মত করে ইসলামের উপর শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ ব্যাক্তিগত বা দলগতভাবে দাওয়া করার বাহানায়, কেউ ইসলাম থেকে অন-ইসলামিক আচার-আচরন উৎখাত করার বাহানায়, যে যেভাবে পারছে, অভিযান চলছে অত্যন্ত দ্রুত হারে।

ইসলামের প্রথমদিকে রাসূলাল্লাহ্‌ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাললাম ও সাহাবাদের (রাঃ) দলই ছিল একমাত্র দল, তারপর ধীরে ধীরে খারেজি, শীয়া, কদরীয়া, মরজিয়া, মুতাজিলা ইত্যাদি অনেক উপদল সৃস্টি হতে থাকে কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তাদের তেমন কোন প্রভাব আজ বজায় নাই শুধু শীয়া ছাড়া। তবে খারেজিদের মতবাদ ও কৌশল আজও কোন কোন দলের মধ্যে বজায় আছে।

মুসলীম বিশ্বে বর্তমানে তিনটি দল সক্রিয় - সূন্নী, শীয়া ও ওহাবী বা সালাফী দল। বাকিদের তেমন একটা উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকা নাই বর্তমান বিশ্বে। অনেকে জামাতি ইসলামী, দেওবন্দি/তাবলীগ জামাত ও আহ্‌লে হাদিসদের কথা উল্ল্যেখ করতে পারেন কিন্তু আমি তাদেরকে অঙ্গদল (উপদল) হিসাবে এখানে উল্ল্যেখ করলাম না, সে বিষয়ে পরে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

এক অর্থে সূন্নী কোনও দল না বরং মুসলমানদের মূল দেহ বলা যেতে পারে। রাসূলাল্লাহ্‌ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাললাম বলেছেন "অতি শীঘ্রই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, একটি দল ব্যতীত সকল দল জাহান্নামে যাবে। জিজ্ঞাসা করা হলো- যে দলটি (নাযাত পাবে) সেটা কোন দল ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ? হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে (মত ও পথের) উপর আমি ও আমার সাহাবারা (রাঃ) রয়েছি ( তার উপর যারা থাকবে তারাই সেই নাজাত প্রাপ্ত দল),"(মুসনাদে আহম্মেদ, আবু দাউদ, মিশকাত শরীফ)।

ওসমানিয়া খিলাফাতের শেষের দিকে ও পতনের পর পরই বেশ কিছু দল ও উপদলের আবির্ভাব হয়েছে। এদের মধ্যে নজদ (বর্তমান সৌদি আরবের রিয়াদ এলাকা) এলাকার ওহাবী দল, মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমিন ও ভারতের কাদিয়ানী দল উল্লেখযোগ্য। ওহাবীরা বর্তমানে সালাফী নামে ও পরিচিত, তাদের বেশ কিছু অঙ্গসংগঠন আছে, আমরা তাদের বিষয়ে এখন আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

সৌদী আরবের ইংরেজী নাম Kingdom of Saudi Arabia (KSA)। বুঝা গেল এটি একটি রাজতান্ত্রীক রাষ্ট্র। ইসলামের প্রানকেন্দ্র মক্কা শরীফ এবং মদিনা শরীফ এই রাজতন্ত্রের দখলে? কবে থেকে এবং কিভাবে এই দখলদারীত্ত্ব শুরু হল সেটা জানতে হলে একটু পিছনের ইতিহাস দেখা দরকার

সৌদী আরবে দুইটি পরিবারের সমন্বয়ে রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় শাসন চলছে। একটি মোহাম্মদ বিন সৌদের পরিবার, রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থার দায়িত্বে আরেকটি মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাবের পরিবার ধর্মীয় বিষয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত।

"মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাবের আবির্ভাবের পূর্বে সৌদ পরিবার ছিল আর-দশটা গোত্র প্রধানদের মতই সাধারন। জীবন ধারনের আয়ের উৎস ছিল খেজুর চাষ, টুকিটাকি ব্যবসা ও ঘোড়ার খামার। নিজেদের একটু শক্তিশালী মনে করলে অন্যান্য বেদুইন গোত্রের সাথে মিলে বাইরের কোনো এলাকায় অভিযান চালাত আর দূর্বল পরিস্থিতিতে নিজেদেরকে সংকোচিত করে এলাকাই থাকত। সংযমী, স্বাধীন, কিন্তু সাম্রাজ্য দখল বা বর্হিবিশ্বে পরিচিতি পাওয়ার মত কোন যোগ্যতা ছিল না, শেখের সাথে (মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাবের) আতাত বা চুক্তি সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত। Lacy, Robert. The Kingdom: Arabia & the House of Sa`ud ‎. p. 59"

এই সেই শেখ নজদি (১৭০৩-১৭৯২), বর্তমান সৌদী আরবের অন্তর্গত নজদ এলাকার উয়াইনা অঞ্চলে জন্ম। বংশীয় গোত্রের নাম "বনি তামিম"। বর্তমান ওহাবী বা সালাফী দলের প্রতিষ্ঠাতা। এমন কি রত্ন নিয়ে হাযির হয়েছিলেন , যার মাধ্যমে বর্তমান রাজত্ব দখল করলেন?

চলবে ...
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

উপকূলের ভাই-বোনদের প্রতি গভীর সমবেদনা

লিখেছেন বিষাদ সময়, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৭




আমরা ঢাকার পাকা দালানে বসে যখন আয়েস করে চায়ে চুমুক দিয়ে বৃষ্টি বিলাসে বিভোর, ঠিক সেই সময় আমাদের উপকূেলের ভাই-বোনেরা হয়তো কেউ স্বজন, কেউ ঘর, কেউ ফসল, কেউবা গবাদী... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: অশ্লীলতা কি পোশাক দিয়ে নির্ধারণ করা উচিৎ নাকি মানসিকতা ও চরিত্র দিয়ে?

লিখেছেন লেখার খাতা, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫২


ছবিটি -ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

কহিনুরের, ফ্লোরা ওরিয়েন্টাল বিউটি সোপ।১৯৭৮ সালের বিজ্ঞাপন। ছবিটি ফেসবুকে পেয়েছি। ব্লগার সোনাগাজী, ব্লগার কামাল ১৮ সহ যারা মুরুব্বি ব্লগার রয়েছেন তারা হয়তো এই বিজ্ঞাপনটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



কতোজনে ভাসছে জলে
পথ ঘাট সব যে পানির তলে
রেমালের কবলে পড়ে।
কতোজনে আজ দূর্বিপাকে
ভাবছি বসে তাদের কথা
কতৈনা দূর্গতি, বাড়িঘর
ফসলী জমি গৃহস্থালি;
ভাসছে আজ জোয়ার জলে
প্রকৃতির বিষম খেয়ালে।
জেলেরা আজ ধরছে না মাছ,
স্কুল কলেজে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন বেনজীর আহমেদ ও আমাদের পুলিশ প্রশাসন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪২



বৃষ্টিস্নাত এই সন্ধ্যায় ব্লগে যদি একবার লগইন না করি তাহলে তা যেন এক অপরাধের পর্যায়েই পরবে, যেহেতু দীর্ঘদিন পর এই স্বস্তির বৃষ্টির কারণে আমার আজ সারাদিন মাটি হয়েছে তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×